রেজিনগরের কাছে রেল দুর্ঘটনার সরেজমিন তদন্তে বৃহস্পতিবার দুর্ঘটনাস্থল ঘুরে গেলেন ‘কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি’ আরপি যাদব। রেজিনগর ও পলাশি স্টেশন ঘুরে বেশ কয়েক জন রেলকর্মীকে জেরাও করেন তিনি। পরে রেজিনগর স্টেশনের ‘রিলে রুম’ ঘুরে খুঁটিয়ে পরীক্ষা করেন কমিশনারের সঙ্গী রেলকর্তারা। সিগন্যাল দেওয়া কিংবা লাইন ক্লিয়ারেন্স আদৌ দেওয়া হয়েছিল কি না, তা বিস্তারিত জানতে ওই রিলে রুমের প্রিন্ট আউটও নিয়ে গিয়েছেন রেল কর্তারা বলে জানা গিয়েছে। দুর্ঘটনাস্থল থেকে তাঁরা সরাসরি চলে আসেন বহরমপুর কোর্ট স্টেশনে। দুর্ঘটনাগ্রস্ত খালি ইঞ্জিনটি সেখানেই রাখা আছে। খুঁটিয়ে পরীক্ষা করা হয় সেটি-ও। এ দিন সকালেই রেলকর্তাদের মুখোমুখি হওয়ার জন্য রেজিনগর স্টেশনে এসে হাজির হয়েছিলেন সাত জন প্রত্যক্ষদর্শী। দীর্ঘক্ষণ তাঁদের সঙ্গেও কথা বলেন রেলের ওই শীর্ষ কর্তা। দুর্ঘটনায় আহতদের সঙ্গেও কথা বলতে চেয়েছিলেন রেলকর্তারা। কিন্তু এ দিনই তাঁদের বহরমপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে কলকাতার বিআর সিংহ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়ায় সে সুযোগ আর হয়নি।
সময়াভাবে পলাশির স্টেশন মাস্টার সুব্রত মজুদার-সহ অন্য কয়েকজন রেলকর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা যায়নি। তাঁদের আজ, শুক্রবার সকালে শিয়ালদহ স্টেশনে তদন্তকারী দলের সামনে হাজির থাকতে বলা হয়েছে। আরপি যাদব বলেন, “রেলকর্মী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে দুর্ঘটনার কারণ জানার চেষ্টা হচ্ছে। ওই ঘটনার পিছনে যান্ত্রিক ত্রুটি না কি রেলের কোনও কর্মীর গাফিলতি রয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তে বেশ কিছু তথ্য উঠে এসেছে। সেগুলি বিশ্লেষণ করে দুর্ঘটনার কারণ খুঁজে বের করা হবে।”
প্রসঙ্গত, গত ১৬ এপ্রিল দুপুরে পূর্বরেলের শিয়ালদহ-লালগোলা শাখার পলাশি ও রেজিনগর স্টেশনের মাঝে সিরাজনগর হল্ট স্টেশনের কাছে মালগাড়ি ও একটি খালি ইঞ্জিনের মুখোমুখি সংঘর্ষে মারা যান সুকুমার মুখোপাধ্যায় নামে ওই ইঞ্জিনের চালক। ওই শাখায় দুর্ঘটনা এই প্রথম নয়। বছর খানেক আগে ফুলিয়া স্টেশনে যাত্রীবাহী দুটি লোকাল ট্রেন একই লাইনে চলে আসায় মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। সে বারেও পূর্ণেন্দু মণ্ডল নামে এক জন রেলকর্মী মারা যান। আহত হন ৭৩ জন যাত্রী। ওই ঘটনায় সাসপেন্ড করা হয়েছিল ফুলিয়ার স্টেশন মাস্টারকে। |