ঘণ্টা, মিনিট, সেকেন্ডের কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গেল। ক’টা দিন-ই বা পড়ে আর? মোটে পাঁচটা।
চল্লিশ পাউন্ডের বিশাল কেকের অর্ডার দিচ্ছে সিএবি। হায়দরাবাদের ‘শেফ’ যা তৈরি করবেন শুধু তাঁর জন্য। কেকের উপর থাকবে ‘সুগার কোটেড’ তাঁর চল্লিশটা মুখ।
তিনি মানে সচিন তেন্ডুলকর। আগামী সপ্তাহে ‘লিটল মাস্টার’-এর মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে যে দিন ইডেনে নামবে কেকেআর, সে দিনই চল্লিশের চৌকাঠ ছুঁয়ে ফেলবেন তিনি।
অর্থাৎ, ২৪ এপ্রিল।
কিন্তু সেই উৎসবের আবহেও তো কাঁটা থেকে যাচ্ছে। সচিনের জন্মদিন নিয়ে যখন তুমুল তোড়জোড় করছে কলকাতা, ঠিক তখনই নতুন করে খোঁচাখুঁচি শুরু হয়ে গেল তাঁর অবসর নিয়ে। ক্রিকেট কবে ছাড়ছেন সচিন রমেশ তেন্ডুলকর?
নয়াদিল্লির এক অনুষ্ঠানে যে প্রশ্ন শুনে বিরক্তি চেপে রাখতে পারেননি সচিন। বলে দিয়েছেন, “আমি যদি ভুল না করি, ২০০৫ থেকে এই প্রশ্নটা উঠতে শুরু করেছে। আজও বন্ধ হয়নি। আর আমার উত্তরটাও বরাবর এক থেকেছে।” সঙ্গে সাংবাদিকদের ‘বাউন্সারে’ সচিনের সপাট ‘হুক’, “আপনারা বরং আপনাদের কাজ করে যান। আমি আমার কাজ করি। অবসর নিয়ে কথা শুনে শুনে আমার ব্যাপারটা গা সওয়া হয়ে গিয়েছে।” |
যদিও মিডিয়ার খোঁচাখুঁচিতে কলকাতার সচিন-বরণে কোনও প্রভাব পড়ছে না। লিটল মাস্টারের জন্য কেকের অর্ডার এ দিন দিয়ে আসা হল। সিএবি-র যুগ্ম-সচিব সুবীর গঙ্গোপাধ্যায় নিজে যান অর্ডার দিতে। আর কোষাধ্যক্ষ বিশ্বরূপ দে বলছেন, “কলকাতায় সচিনের চল্লিশ হবে, আর আমরা বিশেষ কিছু করব না, হয় নাকি?”
ঠিক হয়েছে ওই বিশেষ কেক পৌঁছে দেওয়া হবে সচিনের ড্রেসিংরুমে। যাতে ম্যাচের দিন অন্য কোথাও গিয়ে জন্মদিন উদযাপনের ঝক্কি না পোহাতে হয় লিটল মাস্টারকে। যাঁকে নয়াদিল্লিতে অবসর-প্রসঙ্গটুকু বাদ দিলে বেশ ফুরফুরে মেজাজে পাওয়া গেল।
একের পর এক প্রশ্ন। এত দিন পর আপনি কেন টুইটারের দুনিয়ায়? কাগজ পড়েন? আপনার অবসর-প্রসঙ্গে সৌরভ-দ্রাবিড়ের মন্তব্য নিয়ে কী অভিমত?
সচিন সব ক’টা প্রশ্নেরই উত্তর দিলেন। দিলেন, সিরিয়াসনেসের সঙ্গে রসিকতা মিশিয়ে।
যেমন টুইটারের দুনিয়ায় নাম লিখিয়ে ফেলা নিয়ে বলে বসলেন, ‘বদনাম’ এড়াতেই তাঁর এমন সিদ্ধান্ত। “শুনলাম আমার নামে নাকি প্রচুর জাল টুইটার অ্যাকাউন্ট আছে। তাই নিজেই একটা খুলে ফেললাম যাতে বদনাম না হয়। তবে টুইটারকে কিন্তু আমি ভাল কাজেও ব্যবহার করেছি। ক্যানসার আক্রান্ত শিশুদের জন্য টাকা তুলেছিলাম টুইটার মারফত।” কাগজ পড়া নিয়ে প্রশ্ন এলে বলে দিয়েছেন, “আমি কাগজ পড়তে থাকলে খেলবে কে।” এবং দ্রাবিড়-উবাচও আর শেষ পর্যন্ত তেমন গায়ে মাখলেন কই? সচিনকে জিজ্ঞেস করা হয়, অতীতে সৌরভ, দ্রাবিড়, লক্ষ্মণরা মন্তব্য করেছেন আপনার অবসর নিয়ে। কী বলবেন? সচিন প্রথমে পাল্টা প্রশ্ন করেন, “আপনাদের কী মনে হয় ওরা আমার নামে ভুল কিছু বলেছে?” মুহূর্তে সিরিয়াস এবং সচিন-সংযোজন, “যে কেউ যা খুশি বলতে পারে। অবসর নিয়ে কে কী বলছে, তা নিয়ে আমি মাথা ঘামাই না। এদের মধ্যে অনেকে ক্রিকেট খেলেছে। অনেকে আবার কোনও দিন খেলেইনি অথচ মন্তব্য করতেও ছাড়ে না। ব্যাট হাতে নামলেই যেমন সেঞ্চুরি পাওয়া যায় না, তেমনই সব সময় ইতিবাচক মন্তব্যও পাওয়া যায় না।” |