মনোজ, ইডেনে তোমার ‘কথা’
শোনার অপেক্ষায় আছি
ফ্লাইট এয়ার পকেটে পড়লে যাঁরা নার্ভাস হয়ে পড়েন, আমিও তাঁদের এক জন। অনেক ক্রিকেটারকে চিনি যারা টেক অফের সময় সিটবেল্ট বাঁধার আগে ধর্মগ্রন্থ পড়ে। প্লেন ঠিকঠাক ল্যান্ড করলেও। আবার কেউ কেউ প্লেনের ঝাঁকুনিকে তাদের জীবনের শেষ দিন ধরে নিয়ে নিজেদের পাপ স্বীকার করতে শুরু করে! ফ্লাইট ঠিকঠাক ল্যান্ড করার পর তখনকার কথা ভেবে আমরা খুব হাসাহাসি করি। বিশেষ করে পাপের সব তালিকা প্রচুর মজার রসদ যোগায়।
বুধবার দিল্লি-কলকাতা ফ্লাইটটা একেবারেই মজার ছিল না। প্লেনের ঝাঁকুনি নিয়ে চিন্তা নয়, দুটো হার নিয়ে ভাবছিলাম। এমনিতে প্লেনের ঝাঁকুনি শুরু হলে আমিই প্রথম জানলার বাইরে তাকাই। কিন্তু এ বার আমার দৃষ্টি ছিল অন্তর্মুখী। ভীষণ অন্তর্মুখী। কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের কাছে আমাদের অদ্ভুত হারের কারণ খুঁজছিলাম। মনের ভেতরের ঝড়টা বাইরের ঝড়ের চেয়ে তাই অনেক বেশি জোরালো ছিল।
কলকাতার নতুন বিমানবন্দরে প্লেন নিরাপদেই ল্যান্ড করেছিল। চারদিক বৃষ্টিভেজা। শুনলাম সন্ধেবেলা প্রচণ্ড ঝড় হয়ে গিয়েছে। আমরা পৌঁছনোর আগে অবশ্য থেমে গিয়েছিল। টিভি চ্যানেলে ঝড়ের খবর, সিকিউরিটি গার্ডদের মুখেও ঝড়ের কথা। ঝড় থেমে যাওয়ায় সবাই দেখলাম খুব স্বস্তি পেয়েছে। কিন্তু আমার ভেতরের ঝড়টা তখনও থামেনি। তখনও ভেবে যাচ্ছিলাম মোহালিতে কেন হারলাম? মনপ্রীত গোনিকে আউট করার চেষ্টা কাজে লাগল না বলে? না আমাদের মিডল অর্ডার রান পেল না তাই? নাকি মর্গ্যান আর আমার উইকেট দুটোই আমাদের হারিয়ে দিল? মনের ভেতরের ঝড়টা বেড়ে যাচ্ছিল।
সানরাইজার্সের কাছে সে দিন পুণে-ও বেশ খারাপ ভাবে হারল। ফ্লাইটের জন্য অপেক্ষা করতে করতে দিল্লির টার্মিনাল থ্রি এয়ারপোর্টের লাউঞ্জে বসে আমরা সবাই ম্যাচটা দেখছিলাম। জেতার জন্য ১২০ রান তুলতে পারল না পুণে। কে একটা যেন বলল, অন্তত পুণের মতো বিশ্রী ভাবে হারিনি আমরা। ভাগ্য ভাল ওটা কোনও এক জন এয়ার হোস্টেসের মন্তব্য ছিল। যে মন্তব্যটা আমার সতীর্থরা মাত্র ১৫ সেকেন্ডে হেসে উড়িয়ে দিল। তখনই বুঝে গিয়েছিলাম, আমাদের দলটায় একটা পজিটিভ এনার্জি আছে।
ওই ঘটনার কথা ভাবতে ভাবতেই বৃহস্পতিবার সকালে ঘুম ভাঙল। ওই পজিটিভ এনার্জিটাই আমার মনের ঝড়টাকে একটু একটু করে কমিয়ে দিচ্ছিল। পরে দুপুরের দিকে ইউসুফ পাঠান আর মনোজ তিওয়ারি দু’জনের সঙ্গেই খোলাখুলি আলোচনা করলাম। ইউসুফের পরিবার ওর সঙ্গে এখানেই আছে। আমার সদ্যবিবাহিত সতীর্থকে দেখে বেশ হাসিখুশি, বেশ ঝরঝরে লাগছিল। খুব শান্ত ভাবে আমার সব কথা শুনল। পরের দিকে ক্রিকেটের চেয়ে আমাদের আলোচনাটা বেশি হল কি না বিয়ে নিয়ে!
মনোজ দারুণ ছেলে। প্লে-স্টেশনে ফুটবল খেলার সময় ও-ই আমার পার্টনার। আমার মতো মনোজও ক্রিকেট নিয়ে খুব প্যাশনেট। ওর সঙ্গে কথা বলেই বুঝতে পারলাম যে ওর ভেতরেও আমার মতো ঝড় চলছিল। মনোজ কখনও বাইরে নিজের আবেগ দেখায় না। এমনিতেই চুপচাপ থাকে। আজও খুব বেশি কথা বলেনি। আমার মনে হয় ওর হয়ে ওর ব্যাটই কথা বলবে। মনোজ, ইডেনে আমরা সেই কথা শোনার অপেক্ষায় রইলাম।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.