কোটলায় বৃহস্পতিবার ধোনির ব্যাটিং দেখে এখনই মনে হচ্ছে, শনিবার সন্ধ্যায় শহরে কালবৈশাখী আসুক না আসুক, ইডেনে ধোনির ব্যাটে ঝড় উঠতেই পারে।
চেন্নাই সুপার কিংসের বড় অস্ত্র ওদের পাঁচ ক্রিকেটার, যারা এই মুহূর্তে টিম ইন্ডিয়ার গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। ধোনি, রায়না, জাডেজা, অশ্বিন, মুরলী বিজয়। আর বিদেশিদের মধ্যে মাইক হাসি, ডোয়েন ব্রাভো, অ্যালবি মর্কেল, ক্রিস মরিস। একদম ব্যালান্সড এবং অলরাউন্ড দক্ষতাসম্পন্ন একটা দল। আর এ দিনের ম্যাচের পর বুঝলাম, আরও একটা নতুন অস্ত্রকে সঙ্গে করে আনছে ধোনিরা। ফাস্ট বোলার মোহিত শর্মা।
চেন্নাই সুপার কিংসের এই দলটার নিউক্লিয়াস ধোনিই। ও কোন দিন কোন মুডে রয়েছে, আর কোন দিন কী অঘটন ঘটিয়ে ছাড়বে তা জানা মুশকিল। পুণে ম্যাচটাই মনে করুন এক বার। মাইক হাসিকে বসিয়ে দিল। ব্যাটিং অর্ডারে জাডেজাকে তুলে আনল উপরের দিকে। সে দিন ম্যাচটা জেতেনি সিএসকে। এ দিন ধোনি দেখলাম পরিকল্পনা বদলে ফেলল। মাইক হাসিকে দলে ফেরাল। খেলিয়ে দিল হরিয়ানার জোরে বোলার মোহিতকে। টস জিতে ব্যাটিং নিয়ে বড়সড় রানও চাপিয়ে দিল দিল্লির বিরুদ্ধে। ব্যাটে-বলে হাসি (৫০ বলে ৬৫ ন.আ.) ও মোহিত দু’জনেই সফল। আর সহবাগদের বিরুদ্ধে অধিনায়ক নিজেও ব্যাটিং অর্ডারে চার নম্বরে এসে ২৩ বলে ৪৪ রানের ইনিংস খেলে রানটাকে নিয়ে গেল ১৬৯ এ। আসলে ধোনির অধিনায়কত্বের একটা বড় বৈশিষ্ট্য হল, ও কিন্তু কখনও একটা নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে চলে না। প্ল্যান ‘এ’ কাজ না করলে ‘বি’। ‘বি’ কাজ না করলে ‘সি’ নিয়ে চলে আসে। এ দিনও কোটলায় ধোনির দলের ৮৬ রানে জয়ে সেই দিকটাই বারবার উঠে এল। আর ধোনির এই ধুরন্ধর অধিনায়কত্বের সামনে পড়ে হারের ডাবল হ্যাটট্রিক হয়ে গেল জয়বর্ধনের দিল্লির। |
সহবাগ, ওয়ার্নারদের জয়ের জন্য দরকার ছিল ১৭০ রান। কোটলার পিচে সব সময়ই বাউন্স কম। আর ওয়ার্নারের খেলাটা কাট এবং পুল নির্ভর। ও এই পিচে দাঁড়াতেই পারল না। আর সহবাগ? এ বারের আইপিএল-এ ওকে দেখে মনে হচ্ছে অনেকগুলো রেসিং কার-এর মধ্যে একটা মারুতি ৮০০ ছুটছে। আপার কাট মারছে আর তা যাচ্ছে ফিল্ডারের হাতে। চোখে দেখা যাচ্ছে না।
তবে এ দিন চোখ টানল হরিয়ানার ছেলে মোহিত। বলে পেস আছে। হাই আর্ম অ্যাকশনটাও বেশ ভাল। শুরু থেকেই ওর আউট সুইং খেলতে গিয়ে মুশকিলে পড়ছিল ডেয়ারডেভিলস টপ অর্ডার। ছেলেটার হাতে শর্ট বলটাও বেশ নিয়ন্ত্রিত। ওই অস্ত্র প্রয়োগ করেই এ দিন ও ড্রেসিংরুমে পাঠিয়ে দিল ওয়ার্নার, সহবাগ, জুনেজাকে। এই ছেলে কিন্তু ইডেনে ভোগাতে পারে গম্ভীরদের। |
মোহিত শর্মা: ৩-০-১০-৩
রঞ্জি দল: হরিয়ানা
প্রথম শ্রেণির ম্যাচ: ১১ উইকেট ৪৪
বয়স: ২৪ বছর ২১২ দিন
শক্তি: গতি, হাই আর্ম অ্যাকশনের জন্য বাড়তি বাউন্স, আউটসুইং |
|
শনিবার ধোনির দলকে ইডেনে হারাতে গেলে গম্ভীরকে কিন্তু বেশ ভালমত মগজ খাটাতে হবে। তবে নাইটরা যেন কোনও ভাবেই সচিত্র-নারিন জুটিকে বসিয়ে মাঠে নামার ঝুঁকি না নেয়। তা হলে কিন্তু ওদের বোলিং বলে কিছুই থাকবে না। তা ছাড়া ধোনির দলে রয়েছে চার বাঁহাতি ব্যাট হাসি, জাডেজা, রায়না, মর্কেল। সচিত্র-নারিনের মতো দু’জন মিস্ট্রি অফ স্পিনার কিন্তু বাঁ হাতিদের সমস্যায় ফেলে দেবে। আর ইকবাল আবদুল্লার মতো বাঁ হাতি স্পিনার খেলালে হাসি-জাডেজা-রায়নারা ওকে গ্যালারিতে ফেলতে সমস্যায় পড়বে বলে মনে হয় না।
|