|
|
|
|
পাম্প বিকল, ত্রুটি ট্রান্সফর্মারেও |
দিনে মাত্র একবার জল দিচ্ছে খড়্গপুর পুরসভা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • খড়্গপুর |
কখনও পাম্প বিকল হয়ে পড়ছে। কখনও বিদ্যুতের ট্রান্সফরমারে যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পড়ছে। ফলে, জলও তোলা যাচ্ছে না। সব মিলিয়ে রেলশহর খড়্গপুরে তীব্র জল-সঙ্কট দেখা দিয়েছে। পুরসভার ৩৫টি ওয়ার্ডেই জলের সমস্যা চলছে। কিছু এলাকায় দিনে মাত্র একবার জল সরবরাহ করছে পুরসভা। সমস্যা মানছেন পুর-কর্তৃপক্ষও। ভারপ্রাপ্ত পুরপ্রধান তুষার চৌধুরীর বক্তব্য, “শহরে জলের সমস্যা শুরু হয়েছে, এটা ঠিক। ক’দিন আগে পাম্প বিকল হয়ে গিয়েছিল। তা মেরামতির কাজ চলছে। ইতিমধ্যে আবার একটি ট্রান্সফরমারেও ত্রুটি ধরা পড়েছে। ফলে, শহরের সর্বত্র স্বাভাবিক জল সরবরাহ করা যাচ্ছে না।”
একই সঙ্গে তাঁর আশ্বাস, “সমস্যা সমাধানে পুরসভা আন্তরিক। সব রকম চেষ্টাও চলছে।”
পরিস্থিতি মোকাবিলায় ইতিমধ্যে কিছু এলাকায় জলের গাড়ি পৌঁছনোর কাজ শুরু করেছে পুরসভা। সেই গাড়ির সামনেও বাসিন্দাদের দীর্ঘ লাইন পড়ছে। ঠিক যেমন ট্যাপকলের সামনে লাইন পড়ে। প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা কংগ্রেস কাউন্সিলর রবিশঙ্কর পাণ্ডের বক্তব্য, “শহর জুড়ে তীব্র জল সঙ্কট চলছে। দফতরগুলোর মধ্যে সমন্বয় নেই। ফলে, কিছু বিকল হলে তা তড়িঘড়ি মেরামত করা সম্ভব হচ্ছে না। আগামী দিনে শহরের সর্বত্র জল সরবরাহ করা যাবে কি না, সেটাই বড় প্রশ্ন।” পুরসভার বিরোধী দলনেতা সিপিএম কাউন্সিলর অনিতবরণ মণ্ডলও বলেন, “এখনই পদক্ষেপ করা না হলে আগামী দিনে শহরে জলের হাহাকার শুরু হবে।” জল দফতরের ভারপ্রাপ্ত পুরপ্রধান পারিষদ সুশান্ত চট্টোপাধ্যায়ের আশ্বাস, “পাম্প মেরামতির কাজ শুরু হয়েছে। দু’-তিন দিনের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।” |
|
পুরসভার গাড়ি থেকে জল নিতে লাইন। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ। |
রেলশহরের জনসংখ্যা প্রায় ২ লক্ষ ৩০ হাজার। এখানে জলের সমস্যা নতুন নয়। গরম পড়লেই জল-সঙ্কট শুরু হয়। ঝোরিয়াতে বড় জলাধার রয়েছে। কংসাবতী থেকে জল তুলে এখানে পাঠানো হয়। পরে তা যায় অন্য জলাধারে। সেখান থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে শহরের সর্বত্র জল পৌঁছয়। বড় জলাধারটির জলধারণ ক্ষমতা ৭ মিলিয়ন গ্যালন। পুরসভা সূত্রে খবর, ঝোরিয়ার ট্রান্সফরমারটিতেই যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পড়ে। ফলে, মঙ্গলবার শহরের সর্বত্র দিনে মাত্র একবার জল সরবরাহ করা সম্ভব হয়েছে। এমনিতে সকালে ও বিকেলে দু’বার করে জল সরবরাহ করা হয়। এখনও কিছু এলাকায় একবারই জল পৌঁছচ্ছে। কেশপালে মোট চারটি পাম্প রয়েছে। সেই পাম্পের সাহায্যেই নদী থেকে জল তোলা হয়। এই পাম্পগুলোও বিকল হয়ে পড়ছে। সব মিলিয়ে সমস্যা আরও তীব্র হচ্ছে। জল সরবরাহ স্বাভাবিক করার দাবিতে প্রায় রোজই পুরসভার সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচিও হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সিপিএমের খরিদা লোকাল কমিটির পক্ষ থেকে বিক্ষোভ হয়। এক প্রতিনিধি দল ভারপ্রাপ্ত পুরপ্রধানকে স্মারকলিপিও দেয়। প্রায় কুড়ি বছর আগে রেলশহরে বড় জল প্রকল্পের কাজ হয়েছিল। তারপর বিভিন্ন ওয়ার্ডে বোরিং হয়েছে। গভীর নলকূপ তৈরি হয়েছে। তবে বড় প্রকল্পের কাজ হয়নি। পরিস্থিতি দেখে শহরে ফের নতুন জল প্রকল্পের কাজ শুরু করা হয়। এ জন্য প্রথম পর্যায়ে ১৮ কোটি টাকা বরাদ্দও হয়। সেই কাজও এগোচ্ছে না বলেই অভিযোগ। অথচ প্রায় ১৪ কোটি টাকার পাইপই কেনা হয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত পুরপ্রধানের মতে, “জল অপচয় বন্ধ করতে হবে। না হলে সমস্যা বাড়বে।” |
|
|
|
|
|