গলায় দড়ির ফাঁসে ঝুলন্ত যুবকের জামার পকেটে ছিল ‘সুইসাইড নোট’। তাতে স্ত্রীর ‘ধর্ষণকারী’র শাস্তির দাবি ছাড়াও ছিল পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ। বিষয়টি জানাজানি হতেই বৃহস্পতিবার সকালে প্রায় চার ঘণ্টা ধরে দফায় দফায় হুগলির চুঁচুড়া থানা ঘেরাও করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ধর্ষণে অভিযুক্তের বাড়িতে ভাঙচুরও চালানো হয়।
পুলিশ জানায়, স্থানীয় রায়বাজার কলোনির বছর ছাব্বিশের ওই যুবক বুধবার রাতে গলায় দড়ি দেন বলে প্রাথমিক তদন্তের পরে অনুমান।
তাঁর জামার পকেটে মেলা সুইসাইড নোটে প্রতিবেশী নান্টু কর্মকারকে ‘ধর্ষণকারী’ হিসেবে অভিযুক্ত করে শাস্তি দাবি করা হয়েছে। আরও বলা হয়েছে, ‘এ ব্যাপারে আগে থানায় অভিযোগ জানানো হলেও পুলিশ সে ভাবে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি’। দিন কয়েক আগে নান্টুর বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও লোকজন নিয়ে বাড়িতে হামলা চালানোর অভিযোগ দায়ের করেছিলেন যুবকের স্ত্রী। পুলিশ নান্টুর মা মিনতি কর্মকার এবং দিদি মিঠু সরকারকে গ্রেফতার করেছে। তবে নান্টুকে ধরা যায়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই যুবক ট্রেনে বাদাম বিক্রি করতেন। গত ১২ এপ্রিল দুপুরে তিনি যখন কাজে গিয়েছেন, স্থানীয় গৃহশিক্ষক নান্টু তাঁর বাড়িতে গিয়ে স্ত্রীকে ধর্ষণ করে এবং হুমকি দেয় বলে অভিযোগ। এর পরে যুবকের স্ত্রী আত্মহত্যা করারও চেষ্টা করেন। সে দিনই যুবক পরিবারের সকলকে নিয়ে থানায় যান। বেআইনি ভাবে মদ বিক্রির অভিযোগে রাতে নান্টুকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
কিন্তু পরের দিন সে চুঁচুড়া আদালত থেকে জামিনে ছাড়া পায়। ১৫
এপ্রিল, নববর্ষের দিন মা, দিদি-সহ কয়েক জনকে নিয়ে ওই যুবকের বাড়িতে এসে নান্টু হামলাও চালায় বলে অভিযোগ।
মৃতের স্ত্রী বলেন, “নান্টু ধরা পড়েও ছাড়া পেয়ে গেল। আমার স্বামী এটাই মানতে পারছিল না। তাই আত্মহত্যা করল।” তাঁর বাবা বলেন, “পুলিশ নিষ্ঠুর ও অমানবিক আচরণ করেছে। আমরা সুবিচার চাই।” পুলিশ অবশ্য দাবি করছে, তারা বলা
সত্ত্বেও ওই যুবক নান্টুর বিরুদ্ধে এফআইআর না করে সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন। তবে তার ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি কেন, চুঁচুড়া থানা তার ব্যাখ্যা দিতে পারেনি।
হুগলির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তথাগত বসু বলেন, “মৃতের স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে চারটি ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। পুলিশের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তারও তদন্ত হবে। যদি কোনও গাফিলতি মেলে, বিভাগীয় তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |