|
|
|
|
মিজোরামে নির্বাচন |
কিমের হাতিয়ার সেই ‘মমতা-দর্শন’ |
রাজীবাক্ষ রক্ষিত • গুয়াহাটি |
কথায় বলে ‘পহেলে দর্শনধারী...’, দোষগুণের বিচার তো পরে। সেই প্রবাদ সত্যি করেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর নাক, চোখ, গাত্রবর্ণ ও মুখাবয়ব নিয়ে ফের টানাটানি শুরু। এ বার মিজোরামে।
মণিপুর বিধানসভা নির্বাচনের আগে, ‘বহিরাগত’ দলের জন্য জমি তৈরি করতে প্রদেশ তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী কিম গাংতের প্রথম ও প্রধান ভরসা ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চাপা নাক, শ্যামলা রং, ছোট চোখ। এর জেরেই তিনি বিভিন্ন সভায় মণিপুরিদের বুঝিয়েছিলেন, মমতাদিদি ‘আমাদেরই লোক’। সেই একই তাস ফেলে মিজোরামেও দল গঠনের চেষ্টা শুরু করল কিম। কিমের হাত ধরে গত কাল আইজলে মিজোরাম তৃণমূল কংগ্রেসের জন্ম হয়েছে। সেখানেই কিম ঘোষণা করেন, মমতাদিদির নামের পিছনে ‘বনেরজি’ পদবি থাকলেও মিজো, কুকিদের সঙ্গে তাঁর আকারে ও প্রকারে বিশেষ ভেদ নেই। |
|
পাশাপাশি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও কিম গাংতে। মণিপুর নির্বাচনের প্রচারের সময়ে তোলা ছবি। —নিজস্ব চিত্র |
কুকি নেত্রী কিম বোঝান, “মূল ভূখণ্ডে জন্মেছেন বলে মমতাদিদিকে ‘ওদের’ মতো ভাববেন না। তিনিও আমাদেরই মতো মঙ্গোলিয় ধারার মানুষ।” মমতার ছবি দেখিয়ে কিম ‘প্রমাণ’ করেন, “দিদির নাক ‘ওদের মতো’ টিকালো নয়, চাপা। দিদির চোখ ‘ওদের মতো’ টানা নয়, ছোট। দিদির চেহারা ‘ওদের মতো’ লম্বাটে নয়, আমাদের মতোই গোলগাল। দিদি আমাদের মতোই রাগী। আবার আমাদের মতোই সরল। সব মিলিয়ে, মমতাদিদির সঙ্গে মিজো ভাই-বোনেদের কোনও তফাৎ নেই।”
এই বছরেই মিজোরামে বিধানসভা নির্বাচন। লড়াই রাজনৈতিক হলেও উপজাতি ভোটাররা থোড়াই সেই রাজনীতি বোঝেন? তাঁরা বহিরাগতদের প্রতি খড়্গহস্ত। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ভূমিপুত্র না হলেও প্রতিবাদের ঝড় ওঠে মিজোরামে। এমন রাজ্যে বাইরের দল হয়ে ভোটে লড়া বড়ই কঠিন। তার উপর সদ্য হয়ে যাওয়া মেঘালয়, নাগাল্যান্ড ও ত্রিপুরা নির্বাচনে লড়তেই পারেনি তৃণমূল কংগ্রেস। অসমেও একজন বিধায়ক। অরুণাচলে পাঁচ বিধায়কের চারজন কংগ্রেসে, একজন পিপিএ দলে যোগ দেওয়ায় আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তৃণমূলের সাইনবোর্ডও হারিয়ে গিয়েছে। একমাত্র ভরসা মণিপুর। সেখানে কিমের নেতৃত্বে প্রথম বার লড়তে নেমে কেবল ৭টি আসনই পায়নি তৃণমূল, স্থানীয় রাজনৈতিক দলগুলিকে হঠিয়ে তারাই এখন প্রধান বিরোধী দল। তাই নির্বাচনের আগে ‘সফল’ কিমের হাতেই মিজোরামে দল গড়ার দায়িত্ব দিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। |
|
|
|
|
|