পুজো প্রচলন করে দেবীর নামে আদরের মেয়ের অন্নপূর্ণা নামকরণ করেছিলেন বাবা। আজ বাবা নেই। তবে বাবার চালু করা সেই পুজোয় বাচ্চা মেয়ের মতো খুশিতে মেতে ওঠেন ৮৩ বছরের বৃদ্ধা। শুধু তিনিই নন, অন্নপূর্ণা পুজোয় মেতে ওঠেন গ্রামের অন্য বাসিন্দারা।
আর হবে নাই বা কেন। ওই পুজোর প্রবর্তক প্রয়াত স্বাধীনতা সংগ্রামী কামদকিঙ্কর মুখোপাধ্যায়। দেশের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের বাবা। স্বাভাবিক ভাবে দুর্গাপুজোর মতোই মুখোপাধ্যায় পরিবারের অন্নপূর্ণা পুজো ঘিরে সরগরম হয়ে উঠেছে লাভপুরের মিরাটি গ্রাম। প্রচলিত রয়েছে, দুর্গাপুজোর মতো ১৯৩১ সালে অন্নপূর্ণা পুজোর প্রচলন করেছিলেন কামদাকিঙ্করবাবু। বছর আটেক চলার পরে কোনও অজানা কারণে ওই পুজো বন্ধ হয়ে যায়। ২০০৫ সালে দিল্লির বাসভবনে ওই পুজো চালু করার সিদ্ধান্ত নেন প্রণববাবু। সমস্যা দেখা দেয় মূর্তি গড়া নিয়ে। ছেলে অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, “ওখানকার শিল্পীদের অন্নপূর্ণা সম্পর্কে সুস্পষ্ট কোনও ধারণা ছিল না। তখন বাবা বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ, পঞ্জিকা ঘেঁটে প্রতিমা সম্পর্কে শিল্পীদের ধারণা দেন। সেই মতো গণেশ কোলে অন্নপূর্ণা, বাম দিকে নারদ এবং ভিক্ষাপাত্র হাতে মহাদেবের মূর্তি গড়েন শিল্পীরা। স্থায়ী মণ্ডপ না থাকায় দিল্লির বাসভবনের ড্রয়িংরুমে ৩ বছর পুজো চলে।” |
পুজো দেখছেন অন্নপূর্ণাদেবী। ছবি: সোমনাথ মুস্তাফি |
তার পর থেকেই মিরাটিতে দুর্গামন্দিরে পুজোর আয়োজন হয়। বৃহস্পতিবার পুজো উপলক্ষে প্রণববাবু উপস্থিত হতে পারেননি। তবে ছেলে অভিজিতবাবু, দিদি অন্নপূর্ণাদেবী-সহ পরিবারের অন্য সদস্যরা ছিলেন। এ দিন চণ্ডীপাঠ করতে দেখা গেল অন্নপূর্ণাদেবীকে। তাঁর কথায়, “বাবার চালু করা এই পুজোয় যেন ছোটোবেলা ফিরে আসে।” স্থানীয় গৃহবধূ বনিতা ঘোষ, তনুশ্রী ঘোষরা বলেন, “এক দিনের জন্য হলেও দুর্গাপুজোর মতোই অন্নপূর্ণা পুজো আমাদের যেন নাড়া দিয়ে যায়।” |