|
|
|
|
কালবৈশাখীর দাপট শহরে |
ঝড়-শিলাবৃষ্টিতে তছনছ কেশপুরের দেড়শো গ্রাম |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
শিলাবৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে কেশপুরে। ঘরবাড়ি ভাঙা ছাড়াও ক্ষতি হয়েছে চাষের। জেলা প্রশাসনের কাছে আসা প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, কেশপুরের ৭ হাজার ৭০০ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ধান, তিল, বাদাম এবং বিভিন্ন সব্জি। সব মিলিয়ে ৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৫০টি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সংখ্যা প্রায় ৫ হাজার। প্রশাসন এলাকায় ৫০০ ত্রিপল পাঠিয়েছে। আরও পাঠানো হচ্ছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) রজতকুমার সাইনি বলেন, “শিল পড়ে প্রচুর বাড়ির অ্যাসবেসটসের চাল ফুটো হয়ে গিয়েছে। ক্ষতি হয়েছে চাষের। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” |
|
ঝড়ের পর বাড়ির চাল সারাতে ব্যস্ততা। —নিজস্ব চিত্র। |
মঙ্গলবার বিকেলে শিলাবৃষ্টির পরই এলাকায় গিয়েছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক। বিকেল তিনটে থেকে শুরু হয় প্রাকৃতিক দুর্যোগ। শিলাবৃষ্টি বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়। তবে বেশ খানিক্ষণ ঝড় হয়। পরে শুধু বৃষ্টি। এক-একটি শিলার ওজনও ছিল যথেষ্ট বেশি, ৫০০ গ্রাম থেকে এক কেজি। জোড়াকেঁউদি সোলিডিহা, তেঘোরি, জগন্নাথপুর, আনন্দপুর, কেশপুর, ধলহারা, ঝ্যাঁতলা, কলাগ্রাম, সরিষাখোলা ৯টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। এর মধ্যে আনন্দপুর, তেঘোরি পঞ্চায়েতে ক্ষতির পরিমাণ বেশি। ঝড়-বৃষ্টির দাপটে ধানের শিস, তিলগাছ ভেঙে নুয়ে পড়েছে। প্রচুর বাড়ির টিনের চাল ভেঙেছে। |
|
মেদিনীপুর শহরের সুজাগঞ্জে (১৫ নম্বর ওয়ার্ডে) একটি বাড়ির দোতলার ছাদ ঢালাই করার
জন্য লোহার খাঁচা রাখা ছিল। ঝড়ে তা উড়ে এসে পড়ে পাশের ইলেকট্রিক তারে। বিপর্যয়ের
আশঙ্কায় এলাকায় বেশ কিছুক্ষণ বন্ধ রাখা হয়েছিল বিদ্যুৎ সরবরাহ। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল। |
প্রশাসনের কাছে আসা প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, শিলাবৃষ্টিতে প্রায় ২৫টি বাড়ি সম্পূর্ণ এবং প্রায় ৫ হাজার বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ধামসাইয়ে একটি স্কুলও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। স্কুলবাড়ির অ্যাসবেসটসের ছাউনি ফেটে গিয়েছে। দুর্যোগের পর এলাকায় গিয়েছিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়। গ্রামবাসীরা তাঁকে সমস্যার কথা জানান। জেলা সভাপতি আশ্বাস দেন, সমস্যার কথা তিনি প্রশাসনকে জানাবেন। প্রশাসন সূত্রে খবর, যে ৭ হাজার ৭০০ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তারমধ্যে বোরো ধান রয়েছে ৪ হাজার হেক্টরে, তিল রয়েছে ৩ হাজার হেক্টরে, বাদাম রয়েছে ৫০০ হেক্টরে এবং সব্জি রয়েছে ৩০০ হেক্টরে। ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ হিসেব এখনও চলছে। যে পরিমাণ ফসলের ক্ষতি হয়েছে, তার মূল্য প্রায় ২০ কোটি ৫৪ লক্ষ টাকা। কেশপুরের বিডিও মহম্মদ জামিল আখতার বলেন, “প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। রিপোর্ট খতিয়ে দেখে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে। ত্রাণের দিক থেকে কোনও সমস্যা হবে না।” |
|
|
|
|
|