কালিসকে বসিয়ে ম্যাকালামকে খেলাও
ংরেজিতে একটা কথা আছে না, ‘হোয়েন দ্য গোয়িং গেটস টাফ, দ্য টাফ গেট গোয়িং’। আইপিএলের প্রথম পাঁচটা ম্যাচ খেলে দেওয়ার পর নাইটদের সামনে রাস্তা কিন্তু এখন সত্যিই ‘টাফ’ হয়ে পড়েছে। গম্ভীর আর ওর নাইট-বাহিনী কতটা ‘টাফ’, এ বার বোঝা যাবে।
তবে যারা এখনই কেকেআর নিয়ে স্বপ্ন দেখা বন্ধ করে দিতে চাইছেন, আমি তাদের দলে পড়ি না। হ্যাঁ, সমস্যা তো আছেই। নারিন একা ম্যাচ জেতাতে পারছে না, ইউসুফ পাঠান ক্রমাগত ব্যর্থ, ওপেনিং জুটি নামেই আছে। কিন্তু এ সব সমস্যা থাকলে, সমাধানও আছে। নাইটদের এখন সেই সমাধানগুলো ঠিকঠাক কাজে লাগাতে হবে।
সবার আগে আসি নারিন প্রসঙ্গে। এই ক্যারিবিয়ান স্পিনারের শার্টে কিন্তু এত তাড়াতাড়ি ‘তোমাকে আমরা বুঝে গিয়েছি’ মার্কা স্টিকার সেঁটে দেওয়ার সময় আসেনি। কয়েকটা ম্যাচে নারিন মার খেয়েছে মানলাম। তা সত্ত্বেও বলব এ রকম দু’তিনটে ম্যাচ একটা লম্বা টুর্নামেন্টে আসতেই পারে।
নারিনের গ্রিপ দেখে ব্যাটসম্যানদের বোঝা কঠিন, বলটা কী হবে। এখনও কিন্তু সব ব্যাটসম্যান সেটা ভাল করে বুঝতে পারে না। আসলে নারিনকে মেরেছে তো গোনি আর ইয়াগনিকের মতো ব্যাটসম্যান। যারা পিঞ্চ হিটার টাইপের প্লেয়ার। ওরা অত বুঝে-সুঝে চালায়নি। ব্যাটে বলে হয়ে গিয়েছে। বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে কিন্তু গেইল ওকে খুব সাবধানে খেলেছে। যা দেখে বোঝা যায়, ব্যাটসম্যানরা ওকে ভালই সমীহ করে। মনে রাখবেন, পাঁচ ম্যাচে ১০ উইকেটও ঝুলিতে পুরে নিয়েছে নারিন।
আসলে নারিনের সমস্যা হচ্ছে, ব্যাটসম্যানরা ওকে লড়ার জন্য বড় রান দিতে পারছে না। গম্ভীর এবং মর্গ্যান ছাড়া অন্য ব্যাটসম্যানদের রান সে ভাবে কোথায়? ওপেনিং জুটি সবচেয়ে ভোগাচ্ছে। তিন নম্বরে কালিস প্রত্যাশিত গতিতে রান তুলতে পারছে না। সমাধানের রাস্তা একটাই। বিসলাকে বসিয়ে এই মুহূর্তে ম্যাকালামকে দিয়ে ওপেন করাও। গম্ভীর-ম্যাকালাম জুটি দাঁড়িয়ে গেলে ম্যাচ জিতিয়ে দেবে।
প্রশ্ন হচ্ছে, ম্যাকালামকে খেলাবে কোথায়? এই টিমের যা কম্বিনেশন, তাতে একটাই রাস্তা। কালিসকে বসাও। সেটা হলে তিন নম্বর স্লটটা ফাঁকা হবে। সেই জায়গায় মনোজ তিওয়ারিকে তুলে আনো। মনোজের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের পুরো ফায়দা তুলতে গেলে তিন নম্বরেই ওকে খেলাতে হবে। মনোজ স্পিনটাও ভাল খেলে। সেট হয়ে গেলে দ্রুত রান তুলে দেবে। গম্ভীরকে এটাও মাথায় রাখতে হবে যে মনোজের একটা বাড়তি মোটিভেশন আছে। আইপিএলে নিজেকে প্রমাণ করে ও কিন্তু ভারতের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি দলে আসতে চাইবে।
অনেকেই প্রশ্ন করতে পারেন, কালিস না থাকলে বোলিংটা করবে কে? দুটো অপশন দিচ্ছি আমি।
এক) ইডেনে খেলা হলে নারিনের সঙ্গে সচিত্রকে খেলিয়ে দাও। ইডেনের পিচে জোড়া স্পিনার সামলানো কঠিন হবে বিপক্ষের। সেক্ষেত্রে বালাজির সঙ্গে সামিকে পেস বোলিংয়ের দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে। তা ছাড়া রজত ভাটিয়ার স্লো মিডিয়াম পেসও ইডেনে কাজে দেবে।
দুই) বাইরে হলে ব্রেট লি-কে খেলাও। প্রতিটা টিমের দিকে তাকিয়ে দেখুন। সবার একটা করে দুর্দান্ত জোরে বোলার আছে। যারা বিপক্ষের ব্যাটিংয়ে শিরশিরানি ধরিয়ে দিতে পারে। প্যাটিনসন না থাকায় গম্ভীরের সেই অস্ত্রটা হল ব্রেট লি। আর লি যদি প্রথম দিকে উইকেট তুলে নিতে পারে, তা হলে নারিন কিন্তু চাপমুক্ত অবস্থায় বল করতে পারবে। যেমন দিল্লি ম্যাচটায় হয়েছিল।
নাইটদের টেস্ট পেপার
সমস্যা
১) ওপেনিং জুটির পাঁচ ম্যাচে সর্বোচ্চ রান ৫৯। বিসলার ব্যাটিং গড় (৬.৮০) ডেল স্টেইনের ইকনমি রেটের (৫.৭৯) চেয়ে একটু বেশি।
২) মিডল অর্ডারে চাপ নেওয়ার মতো ব্যাটসম্যান মর্গ্যান ছাড়া কাউকে দেখা যাচ্ছে না। ফলে পরের দিকে রান ওঠা কমে যাচ্ছে।
৩) নারিনকে মেরে দিচ্ছে গোনি, ইয়াগনিকের মতো ব্যাটসম্যানরা। স্লগ ওভারে আগের বার যেমন বিপক্ষকে আটকে রাখা যাচ্ছিল, এ বার তা হচ্ছে না।
৪) রান করা ভুলে গিয়েছে ইউসুফ পাঠান। আস্কিং রেট আটের উপর চলে গেলে চাপে পড়ে যাচ্ছে ব্যাটিং।
সমাধান
১) ম্যাকালামকে ওপেনার হিসাবে ব্যবহার করো। চতুর্থ বিদেশির কোটায় সুযোগ দিতে কালিসকে বসিয়ে দাও।
২) কালিস বসলে তিন নম্বরের স্লটটা ফাঁকা হবে। ওখানে মনোজ তিওয়ারিকে আনো। ওকে ইনিংস তৈরি করার সুযোগ দিতে হবে। ক্রিজে একটু সময় পেলে ওর আগ্রাসী ব্যাটিংটা বেরিয়ে আসবে।
৩) নারিনের সময়টা খারাপ গেলেও প্রতি দিন মার খাবে এমন নয়। তবে ওর চাপ হাল্কা করতে দলে ‘উইকেট টেকিং’ বোলার রাখা হোক। যেমন ব্রেট লি। ও প্রথম দিকে উইকেট তুললে নারিন আত্মবিশ্বাস নিয়ে বল করতে পারবে।
৪) পাঠানই খেলুক। ও এমন ব্যাটসম্যান যে ফর্মে ফিরতে পারে যে কোনও ম্যাচে। আর ফর্মে ফিরলে জিতিয়ে দেবে। পাঠানের বিকল্পও নেই গম্ভীরের হাতে।
স্পেশ্যাল টোটকা
• বিসলার যা হাল, তাতে মনোজকে দিয়ে ওপেন করানো উচিত। মনোজ নিজেই বলুক সেটা। টুর্নামেন্টের খুব গুরুত্বপূর্ণ সময় নাইটরা পরপর তিনটে হোম ম্যাচ পাচ্ছে। সুযোগটা কাজে লাগাতে হবে। চেন্নাইও কিন্তু খুব ভাল জায়গায় নেই। ধোনিরাও চারটের দুটো হেরেছে। আর পুণে প্রসঙ্গে বলব ওদের মেন্টর হওয়ার ভাবনা নেই। এখন এ সব বলে কী হবে? আগে প্রস্তাব আসুক, তারপর ভেবে দেখা যাবে।
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়
• ইউসুফ পাঠানকে একটাই পরামর্শ দেব। যখন তোমাকে ওরা শর্ট বল করবে, একটা সিঙ্গল নিয়ে নন স্ট্রাইকার এন্ডে চলে যেও। প্রমাণ করতে যেও না যে তুমিও শর্ট বল মারতে পারো... টুইটারে সঞ্জয় মঞ্জরেকর
কেকেআর ব্যাটিংয়ে আরও একটা সমস্যার জায়গা আছে। ইউসুফ পাঠান। ও একেবারে রান পাচ্ছে না। কিন্তু ঘটনা হল, পাঠানের বদলি কোনও ব্যাটসম্যান নেই গম্ভীরের হাতে। দেবব্রত দাসকে তো আর পাঠানের জায়গায় খেলানো যায় না। আর পাঠান এমন ব্যাটসম্যান, ব্যাটে-বলে হয়ে গেলে ম্যাচ জিতিয়ে দেবে। তাই পাঠান-ফাটকাটা আরও কয়েকটা ম্যাচ চালাতে হবে।
সামনে চেন্নাই। ধোনিরা ভাল, কিন্তু অপরাজেয় নয়। আমি বলব ব্যাটিং নয়, স্লো টার্নারেই ফেলো ধোনিদের। ওদের অশ্বিন-জাডেজা থাকলে কী হবে, আমাদের স্পিন খেলার মতো ব্যাটসম্যান অনেক আছে। কিন্তু ইডেনের উইকেটে নারিন-সচিত্রকে সামলানোর মতো ব্যাটিং-রসদ কি চেন্নাইয়ের আছে? মনে হয় না।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.