দ্রাবিড়ীয় মগজাস্ত্রে মাত পন্টিংয়ের মুম্বই |
লড়াইটা ছিল তিন কিংবদন্তির। বুধবার জয়পুরে লড়াইটা ব্যাটে হল না। কিন্তু তুখোড় ক্রিকেটীয় মস্তিষ্কের যুদ্ধে সচিন তেন্ডুলকর-রিকি পন্টিং জোটকে হারিয়ে দিলেন রাহুল দ্রাবিড়।
দ্রাবিড়ের দুটো সিদ্ধান্ত নিয়ে ম্যাচের পর রীতিমতো আলোড়ন উঠেছে।
এক) নিজে না গিয়ে তিনে দিশান্ত ইয়াগনিককে (২৪ বলে ৩৪ রান) নামানো। ফাটকাটা কাজে লেগে যাওয়ায় রান রেট চলে যায় নয়ের কাছে।
দুই) সচিন-পন্টিং জুটির বিরুদ্ধে অজিত চান্ডিলার মতো অফস্পিনারকে দিয়ে বোলিং শুরু করা। সামনে বড় আস্কিং রেট। উল্টো দিকে অফ স্পিনার। সচিন (১) শুরুতেই চালাতে গেলেন। এবং স্লগ-সুইপ মারতে গিয়ে বল তুলে দিলেন আকাশে। পন্টিং (৪) বলের গতিটা বুঝতে না পেরে আগে স্ট্রোক খেলে দিয়ে কট অ্যান্ড বোল্ড। কিংবদন্তি দুই ব্যাটসম্যান ১০ রানের মধ্যে প্যাভিলিয়নে।
যে ধাক্কাটা কাটাতে না পেরে ১৮০ তাড়া করতে নেমে ৯২ রানেই গুটিয়ে গেল মুম্বইয়ের তারকাসমৃদ্ধ ব্যাটিং লাইন আপ। আর ৮৭ রানে ম্যাচ জিতে বাজিমাত দ্রাবিড়ীয় যোদ্ধাদের। নাইট রাইডার্স ম্যাচে পাঁচ পেসার খেলানোর পর এ দিন দ্বিতীয়বার অসাধারণ উদ্ভাবনী নেতৃত্বের জন্য পুরস্কার নিয়ে গেলেন রাজস্থান অধিনায়ক। এই ম্যাচ জিতে লিগ টেবলে এক নম্বরে উঠে এল রাজস্থান (পাঁচ ম্যাচে ৮)। |
অথচ ম্যাচের শুরুতে প্রেক্ষাপট কিন্তু একেবারে ভিন্ন ছিল।
টুইট বোমা ছাড়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই জয়পুরে শ্রীসন্থ আর হরভজন মুখোমুখি হওয়ার পর কী হবে? এটাই ছিল ইউএসপি। কিন্তু আদতে টিম ম্যানেজমেন্ট বিশ্রাম দেওয়ায় শ্রীসন্থ নামলেনই না ম্যাচে। বরং বুধবার মুম্বই ইন্ডিয়ান্স আর রাজস্থান রয়্যালস ম্যাচের প্রথমার্ধ ছিল কার্যত শেন ওয়াটসন বনাম লাসিথ মালিঙ্গার ডুয়েল। যেখানে মালিঙ্গার বোলিংকে তুলোধোনা করে ছাড়লেন ওয়াটসন। এক ওভারে চারটি বাউন্ডারি মেরে। ২৫ বলে ৩১ রান করে ওয়াটসন ফেরার পর আর এক ওপেনার অজিঙ্ক রাহানে (৫৪ বলে ৬৮ ন.আ.) ধ্বংসলীলা চালিয়ে যান। দিশান্ত ইয়াগনিক এবং ব্রাড হজ (১৫ বলে ২৭ ন.আ.) যোগ্য সঙ্গত দেওয়ায় রাজস্থানের স্কোর দাঁড়ায় ৩ উইকেট হারিয়ে ১৭৯।
শুধু মালিঙ্গাই নয়, রাজস্থানের ব্যাটসম্যানদের সামনে মুম্বইয়ের কোনও বোলারই এ দিন দাঁড়াতে পারেননি। মিচেল জনসন (৪ ওভারে ৪০ রান), পোলার্ডরা (২ ওভারে ২৪ রান) মার খেয়েছেন। বাদ যাননি প্রজ্ঞান ওঝাও (৪ ওভারে ৩১ রান)। |
রিকি পন্টিং |
৫ ম্যাচে ৫২ রান, গড় ১০.১১, সর্বোচ্চ ২৮, স্ট্রাইক রেট ৭১.০৯ |
সচিন তেন্ডুলকর |
৫ ম্যাচে ৬৯ রান, গড় ১৩.৮০, সর্বোচ্চ ৪৪, স্ট্রাইক রেট ১৩০.১৮ |
সচিন-পন্টিং জুটিতে |
৫ ম্যাচে ১১৩ রান, সর্বোচ্চ ৫৪। |
|
এখানেই শেষ নয়, ফিল্ডিংয়েও ভুল ভ্রান্তির জন্যও ভুগতে হল মুম্বইকে। সচিন আর মালিঙ্গার ভুল বোঝাবুঝির জন্য রাজস্থানের ইনিংসের শেষের দিকে ক্যাচ ফস্কায়। টুইটারে হাসাহাসি শুরু হয়ে গিয়েছিল মালিঙ্গা আর জনসনকে নিয়ে। আলোচনা শুরু হয়ে যায়, মুম্বই অধিনায়ক পন্টিং ভুল সময়ে দুই পেসারকে বল করতে পাঠানোতেই এই বিপত্তি। মালিঙ্গা ডেথ ওভারে অসাধারণ হলেও নতুন বলে যা মার খেলেন তাতে জনসনের কাছে তাঁর নতুন বলের বিদ্যেটা শেখা উচিত। আর জনসনের উচিত ডেথ ওভারে কী ভাবে বল করতে হবে, সেটা শ্রীলঙ্কার বোলারের কাছে শেখা।
পন্টিং কি শুনছেন?
|