কালবৈশাখীতে বিপর্যস্ত জনজীবন |
মঙ্গলবারের পরে বুধবারও কালবৈশাখীর দাপটে হুগলি-হাওড়ার বিভিন্ন এলাকায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়ল জনজীবন।
উত্তরপাড়া স্টেশনে ওভারহেড তারের উপর গাছ ভেঙে পড়ে। ফলে, মেন লাইনে বর্ধমান, কাটোয়া এবং তারকেশ্বর শাখায় ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিপাকে পড়েন নিত্যযাত্রীরা। সড়কপথেও ছিল যানজট।
মঙ্গলবারের ঝড়ে হরিপালের দ্বারহাট্টার দীপা এলাকায় একটি বটগাছ হেলে গিয়েছিল। বুধবারের ঝড়ে অহল্যাবাঈ রোড জুড়ে ভেঙে পড়ে। স্তব্ধ হয় যান চলাচল।
আগের দিনের ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে তারকেশ্বরের চাঁপাডাঙা, পিয়াসাড়া, রামচন্দ্রপুর, আয়মা, বালিগোড়ি, পূর্ব রামনগর-সহ নানা জায়গায় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শিলার আঘাতে বেশ কিছু বাড়ির টালি এবং অ্যাসবেসটসের চাল ফুটো হয়ে যায়। ঝড়ে ঘরের চাল উড়ে যায়। কিছু কাঁচাবাড়ি ভেঙে যায়। ভেঙে পড়ে গাছও। চাষিরা জানান, শিলাবৃষ্টির কারণে তিল, পাট এবং বোরো ধানের যথেষ্ট ক্ষতি হয়েছে। সব্জিচাষও মার খাবে বলে আশঙ্কা। |
বুধবার দুপুরে পূর্ব রামনগরে গিয়ে দেখা যায়, অন্তত পাঁচ-ছ’টি বাড়ির চাল উড়ে গিয়েছে। চাষের ক্ষতি হয়েছে। আস্তারা-দত্তপুর পঞ্চায়েতের চাকদা গ্রামের চাষি প্রবীর ঘোষ আট বিঘা জমিতে তিল চাষ করেছিলেন। ১০ কাঠা জমিতে পাট এবং কিছুটা জমিতে ঝিঙে-পটল বসিয়েছিলেন। প্রবীরবাবুর আক্ষেপ, “শিলাবৃষ্টির দাপটে সব চাষ শেষ হয়ে গেল আমার। শিলা পড়ে গাছের মাঝখান বরাবর কেটে গিয়েছে। যেন কেউ কাঁচি দিয়ে গাছের অর্ধেকটা কেটে নিয়েছে।” প্রকৃতির দাপটে রামনগর পঞ্চায়েতের কুঞ্জবন গ্রামের শেখ ইসলামের জমির অবস্থাও কার্যত একই। তাঁর তিন বিঘা জমির ধান নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তারকেশ্বরের পুরপ্রধান স্বপন সামন্ত বলেন, “তারকেশ্বর বিধানসভা এলাকার ছ’টি পঞ্চায়েতে ঘরবাড়ি এবং চাষের ক্ষতি হয়েছে। প্রশাসনের তরফে ত্রিপল দেওয়া হয়েছে।” |
একই পরিস্থিতি হয় হরিপালের বিস্তীর্ণ এলাকারও। এই ব্লকের পশ্চিম গোপীনাথপুর, কৈকালা, বাহিরখণ্ড, চন্দনপুর-সহ নানা জায়গায় চাষের ক্ষতি হয় শিলাবৃষ্টিতে। শিলের আঘাতে ধানের শীষ ভেঙে যায়। গাছ মাটিতে শুয়ে পড়ে। জেলার কৃষি অধিকর্তা স্বপনকুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, “ক্ষতির পরিমাণ কত, এখনও তা পরিষ্কার নয়। হিসেব চলছে।”
হাওড়ার আমতার রসপুর গ্রামে ভেঙে গিয়েছে বেশ কিছু মাটির বাড়ি। আন্দুল বাজার, ডোমজুড়, উলুবেড়িয়ার বৃন্দাবনপুর, বাসুদেবপুর, করাতবেড়িয়া-সহ বেশি কিছু এলাকায় রাস্তার উপর পড়ে রয়েছে গাছ। কোথাও উড়ে গিয়েছে বাড়ির টিনের চাল। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রচুর। |