বলল টাস্কফোর্স
হাওড়ায় অগ্নি-বিধি মানছে না অধিকাংশ বাজার, শপিং মল
কোথাও বেসমেন্টে চলছে হোসিয়ারির ব্যবসা, কোথাও চলছে নার্সিংহোম। কোথাও আবার বহুতল আবাসনের মধ্যে স্কুল চললেও ঢোকার বা বেরোনোর পথ একটাই। একই অবস্থা বিভিন্ন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাজার, বহুতল আবাসন ও হাট-বাজারের। অর্থাৎ, কোথাও আগুন লাগলে পালানোর পথ যেমন নেই, তেমনই কারও কাছে নেই দমকল দফতরের অগ্নিবিধি মেনে চলার শংসাপত্রও। এমনকী, পুরসভার ট্রেড লাইসেন্সও নেই অনেকের।
সম্প্রতি অগ্নি-নিরাপত্তা নিয়ে হাওড়া পুরসভার গঠন করা টাস্কফোর্স রাজ্য সরকারের কাছে এমনই রিপোর্ট পেশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, এখনও পর্যন্ত যে সমস্ত হাসপাতাল, নার্সিংহোম, রেস্তোরাঁ, হোটেল, বহুতল আবাসন, শপিং কমপ্লেক্স ও হাট-বাজারের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হয়েছে, তাতে দেখা গিয়েছে অধিকাংশেরই কোনও অগ্নি-নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই। বেশির ভাগ সংস্থাই দমকল দফতরের অগ্নিবিধি মেনে চলে না। কারও কাছে নেই দমকলের শংসাপত্রও। প্রাথমিক পর্যায়ে এ ধরনের ৩৯টি সংস্থার নামের একটি তালিকাও রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে জমা দিয়েছে ওই টাস্কফোর্স।
হাওড়া পুরসভার কমিশনার নীলাঞ্জন চট্টোপাধ্যায় বুধবার বলেন, “সমস্ত রিপোর্ট খতিয়ে দেখার পরে মন্ত্রী ওই ৩৯টি সংস্থাকে নোটিস দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, যে সব সংস্থা দমকল দফতরের কাছ থেকে অবিলম্বে অগ্নিবিধি মানার শংসাপত্র নেবে না, তাদের ট্রেড লাইসেন্স নবীকরণ বা অনুমোদনও করা হবে না। এবং ওই সব সংস্থার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
২০১১ সালের শেষ দিকে কলকাতায় আমরি-কাণ্ডের পরে রাজ্য সরকারের নির্দেশে শহরের অগ্নি-নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখার জন্য একটি টাস্কফোর্স গঠন করে হাওড়া পুরসভা। নাম দেওয়া হয় ‘ফায়ার অডিট সেফ্টি কমিটি’। সাত সদস্যের ওই কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয় পুরসভার স্বাস্থ্য অফিসার শুভাশিস সরকারকে। এ ছাড়াও ওই কমিটিতে রাখা হয় পুরসভার বিল্ডিং দফতরের এক জন ইঞ্জিনিয়ার, এক জন ল’অফিসার, জঞ্জাল দফতরের এক জন অফিসার, হাওড়া সিটি পুলিশের এক অ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ কমিশনার, দমকল দফতরের পূর্বাঞ্চলের ডেপুটি ডিরেক্টরের প্রতিনিধি-সহ এক জন মেয়র-পারিষদকেও।
পুরসভা সূত্রের খবর, গত এক বছর ধরে হাওড়া পুর-এলাকার ৪৪টি ওয়ার্ডে থাকা নার্সিংহোম, রেস্তোরাঁ, শপিং মল, শপিং কমপ্লেক্স, বহুতল এবং সপ্তাহে দু’দিন বসা হাওড়ার মঙ্গলাহাটের ১১টি হাট কমপ্লেক্সের অগ্নি-নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখার অভিযান চালায় টাস্কফোর্স। কাজে নেমে কার্যত চোখ কপালে ওঠে টাস্কফোর্সের প্রতিনিধিদের।
এ বিষয়ে টাস্কফোর্সের আহ্বায়ক শুভাশিসবাবু বলেন, “কেউই দেখি অগ্নি-বিধি মানেন না। দমকলের শংসাপত্রও নেই কারও। এমনকী, হাওড়ার অধিকাংশ ব্যবসা চলছে ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া, সম্পূর্ণ অবৈধ ভাবে।” শুভাশিসবাবু জানান, তদন্তে নেমে তাঁরা দেখেছেন, অনেক বহুতলে নামা-ওঠার একটিমাত্র সিঁড়ি রয়েছে। নেই কোনও ভূগর্ভস্থ জলাধার। আগুন লাগলে তা হলে মানুষ বাঁচবেন কী করে? কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি বহুতলের প্রোমোটারেরা।
পুরসভার কমিশনার বলেন, “হাওড়া জতুগৃহ হয়ে গিয়েছে। আমি টাস্কফোর্সকে বলেছি, কাজ চালিয়ে যেতে। নোটিস দেওয়ার পরে কাজ হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে ১৫ দিন পরে ফের ওই সব সংস্থায় যেতে নির্দেশ দিয়েছি। তা না করলে রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্ট পাঠানো হবে। রাজ্য সরকারই তার পরে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.