গরমের দিনে শেষ পাতে দইয়ের স্বাদ পেতে চান সকলেই। আর সেই দই যদি হয় বালুরঘাটের, তবে তো কথাই নেই। কিন্তু স্থায়ী বাজারের অভাবে দক্ষিণ দিনাজপুরের ওই দই শিল্প মার খেতে বসেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। রাস্তার পাশে খোলা আকাশের নীচে চলছে দই বিক্রি।
তহ বাজারের দুধ পট্টির পাশে সারিসারি দোকানের মাঝে সরু মাটির রাস্তায় চলে দই বিক্রি। সেখানে পানু ঘোষ, গোপাল ঘোষ, শ্রীদাম ঘোষ, গৌতম ঘোষ, গজেন ঘোষের মতো বিক্রেতারা ঝাঁকা নিয়ে দইয়ের পসরা সাজিয়ে বসেন। ওই জায়গায় প্রত্যেকের ঠাঁই হয় না। তাই ঝাঁকা কাঁধে নিয়ে অনেক কারিগরকে পাড়ায় ঘুরে দই বিক্রি করতে হয়। কারিগরদের অভিযোগ, পুরসভার কাছে স্থায়ী বাজারের জন্য কয়েক দফায় আবেদন করে লাভ হয়নি। বালুরঘাট পুরসভার চেয়ারপার্সন সুচেতা বিশ্বাস বলেন, “পুরনো আমল থেকে কুঠিকাছারির জমিদারের অধীনে তহ বাজারের একাংশ। ওই জমি নিয়ে বিতর্ক আছে। পুরসভা থেকে জায়গাটি অধিগ্রহণের জন্য সরকারি স্তরে আবেদন করা হয়েছে। জমি পাওয়া গেলে দইয়ের স্থায়ী বাজার গড়ে তোলা সম্ভব হবে।”
বালুরঘাটে কারিগরা বাড়িতে দই তৈরি করেন। সময় নিয়ে ঢিমে আঁচে দুধ জ্বাল দিয়ে তৈরি খাসা দই, ক্ষীর দই, সাদা মিষ্টি দই এবং টক দই তৈরি করা হয়। বালুরঘাটের দইয়ের তুলনায় অনেকটাই সস্তা জেলার নয়াবাজার ও গঙ্গারামপুরের দই। উত্তরবঙ্গ জুড়ে ওই দইয়ের ব্যবসা চলছে। কিন্তু বালুরঘাটের দই জেলার অন্য সব এলাকার চেয়ে এখনও সেরা। দই কিনে ৭ দিন থেকে ৮ দিন ঘরে রেখে খাওয়া যায়। অন্য জায়গার তৈরি দইয়ের সঙ্গে এ ভাবে পার্থক্য গড়েছেন বালুরঘাটের দইয়ের কারিগরেরা। নয়াবাজার এবং গঙ্গারামপুরের দইয়ের প্রতি কেজির দাম ৬০ টাকা। কিন্তু বালুরঘাটের দইয়ের প্রতি কেজির দাম ৮০ টাকা। কারিগর গৌতম ঘোষ বলেন, “দাম বেশি বলে মিষ্টি বিক্রির দোকানে সরববরাহ করা সম্ভব হয় না। বংশপরম্পরায় বাজারে বসে, পাড়ার ঘুরে দই বিক্রি করতে হচ্ছে। ওই কারণে ব্যবসা বাড়ছে না। স্থায়ী বাজার থাকলে সমস্যা মিটবে।” |