রফতানি নিয়ে কলকাতা বিমানবন্দরে তৈরি হয়েছে এক জটিল পরিস্থিতি। কিছু কাঁচা মাছ ও সব্জি ছাড়া বুধবার বেশির ভাগ পণ্যই রফতানি হয়নি। এতে যেমন ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হচ্ছে, নষ্ট হচ্ছে কলকাতা তথা রাজ্যের ভাবমূর্তিও।
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, পণ্য নামানোর পরে তা বিমান পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার মাঝে বেশ কয়েকটি ধাপ রয়েছে। আগে কলকাতায় রফতানি-এজেন্টদের হয়ে সেই কাজ করতো একটি সংস্থা। এর জন্য বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এজেন্টদের কাছ থেকে টাকা কেটে নিয়ে তা সংস্থাকে দিতো। ২০১০-এর ডিসেম্বরে ওই সংস্থাকে সরিয়ে আসে ভদ্র ইন্টারন্যশনাল। তারা কার্যত বিনা পয়সায় পরিষেবা দিতে শুরু করে। সেই সময়ে ভদ্র-র সঙ্গেও কোনও লিখিত চুক্তি করেনি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। ফলে, এজেন্টদের কাছ থেকে ওই খাতে টাকা নেওয়াও বন্ধ হয়ে যায়। রোজগার না হলেও কর্মীদের বেতন দিয়ে গিয়েছে ভদ্র। যে সমস্ত বিমান অনিয়মিত ভাবে কলকাতায় ওঠানামা করে, শুধু তাদের কাছেই টাকা নিত ভদ্র।
কিন্তু এ বার সেই নীতি পাল্টেছে সংস্থাটি। এমিরেটস, ইন্ডিগো-র মতো কয়েকটি সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করেছে ভদ্র। অভিযোগ, বুধবার সংস্থাটি জানিয়ে দিয়েছে, বাকিদের আর পরিষেবা দেওয়া হবে না। যদিও ভদ্র-র দাবি, শুধুমাত্র জেট ও ব্লু-ডার্ট সংস্থাকে এই কথা বলা হয়েছে। কারণ, ওই কাজে তাদের নিজস্ব কর্মী রয়েছে। বাকিদের এখনও নিখরচায় পরিষেবা দেওয়া হবে। পাশাপাশি চুক্তি করতেও বলা হবে।
তা হলে কেন বন্ধ হল রফতানি? ভদ্র-র তরফে অভিযোগ, পণ্য নিয়ে যাওয়া বিদেশি বিমান সংস্থাগুলি বুধবার জেট ও ব্লু-ডার্ট-এর পাশে দাঁড়িয়ে তাদের বিরোধিতা করেছে। সেই কারণে, তারাও নিখরচায় পণ্য পরিষেবা স্থগিত করে দিয়েছে। পণ্য কমিটির পূর্বাঞ্চলের চেয়ারম্যান, এক বিদেশি বিমান সংস্থার কর্তা লুই আলফানসো এ দিন বলেন, “ভদ্র এখন বিমান সংস্থাগুলির কাছ থেকে টাকা চাইছে। আমরা কেন দেবো? হয় এজেন্টরা সরাসরি টাকা দেবে, নয়তো কর্তৃপক্ষ এজেন্টদের কাছ থেকে টাকা কেটে ওদের দেবে। এজেন্টদের আগেই সতর্ক করা হয়েছিল। তাই, রফতানির জন্য কেউ পণ্য পাঠায়নি।”
বুধবার এ প্রসঙ্গে কলকাতা বিমানবন্দরের অধিকর্তা বি পি শর্মা বলেন, “রফতানি তো বন্ধ হয়নি! বিমান সংস্থা এবং ভদ্র ইন্টারন্যশনালের মধ্যে কিছু সমস্যা হয়েছে। আমাদের কিছু করার নেই।” তবে বিদেশ থেকে যে সব পণ্য এসেছে, সেগুলি ছাড়িয়ে নিয়ে যেতে সমস্যা হয়নি। |