অনিশ্চিত শালুকখালি
দ্বিতীয় হলদিয়া বন্দরে লগ্নি অধরা দ্বিতীয় টেন্ডারেও
শালুকখালিতে দ্বিতীয় হলদিয়া বন্দর নির্মাণে এ বারও আগ্রহ দেখাল না দেশ-বিদেশের কোনও সংস্থা। সাড়া মিলল না দ্বিতীয় দফার টেন্ডারেও। আশাহত বন্দর-কর্তৃপক্ষ টেন্ডারের মেয়াদ আবার বাড়াতে বাধ্য হলেন।
১৭০০ কোটি টাকা বিনিয়োগে হলদিয়া ডক-টু’তে চারটি বার্থ নির্মাণের লক্ষ্যে দরপত্র ডেকেছিলেন কলকাতা বন্দর-কর্তৃপক্ষ। নাব্যতা সমস্যায় দীর্ণ হলদিয়া বন্দরকে জিইয়ে তুলতে শালুকখালির এই সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগ (পাবলিক-প্রাইভেট-পার্টনারশিপ, সংক্ষেপে পিপিপি) প্রকল্পটিকেই পাখির চোখ করেছিলেন বন্দর-কর্তারা। কিন্তু বুধবার দরপত্রে সাড়া দেওয়ার দ্বিতীয় দফার মেয়াদ ফুরোলেও কোনও আবেদন জমা না-পড়ায় তাঁরা যারপরনাই হতাশ। কলকাতা বন্দরের চেয়ারম্যান রাজপাল সিংহ কাহাঁলো এ দিন বলেন, “এ বারও কোনও লগ্নিকারী এলেন না। তাই টেন্ডারের সময়সীমা ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হল। আশা করছি, এর মধ্যে কেউ আসবেন।”
বন্দর-সূত্রের খবর: নাব্যতা সঙ্কটে নাজেহাল হলদিয়ায় এখন ২৫ হাজার টন পণ্যবাহী জাহাজ ঢোকাই কঠিন। বছরে ৫০০ লক্ষ টন মাল খালাসে সক্ষম বন্দরটিতে গত বছর ওঠা-নামা করেছে সাকুল্যে ২৯০ লক্ষ টন, যার জন্য নাব্যতা-সমস্যার পাশাপাশি বিশ্ব-বাণিজ্যের মন্দা এবং স্থানীয় রাজনৈতিক পরিস্থিতির দিকেও আঙুল তুলেছে জাহাজি মহল। অবস্থা এমনই যে, বন্দর সচল রাখাটা ইদানীং নির্ভর করছে বার্ষিক পাঁচশো কোটি টাকার কেন্দ্রীয় ড্রেজিং-ভর্তুকির উপরে। কিন্তু গত ক’বছর ইস্তক কেন্দ্রও হলদিয়াকে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য চাপ দিচ্ছে।
এহেন সঙ্কটকালে হাতে চাঁদ পাওয়ার মতো হলদি নদীর শালুকখালিতে ৯ মিটার নাব্যতাসম্পন্ন একটি এলাকার খোঁজ মেলে।
স্থির হয়, সেখানে পিপিপি মডেলে গড়ে তোলা হবে দ্বিতীয় হলদিয়া বন্দর, যেখানে চারটি বার্থ মিলিয়ে বছরে ২৩৫ লক্ষ টন পণ্য খালাসের ব্যবস্থা থাকবে। মূলত তাপবিদ্যুতের কয়লা ও ইস্পাত শিল্পের আকরিক লোহা নামানো হবে নতুন বন্দরে। তবে এখন জানা যাচ্ছে, নদীর গতিপ্রবাহে পরিবর্তনের জেরে শালুকখালিতে ৭ মিটারের বেশি নাব্যতা নেই।
ফলে নতুন করে বন্দর নির্মাণে কোনও সংস্থা আদৌ এগিয়ে আসবে কি না, তা নিয়ে বন্দর-কর্তাদের একাংশ যথেষ্ট সন্দিহান।
প্রসঙ্গত, শালুকখালি প্রকল্পে সম্ভাব্য লগ্নিকারীদের নিয়ে বন্দর-কর্তৃপক্ষ বৈঠক শুরু করেছিলেন এক বছর আগে, ২০১২-র এপ্রিলে। গোড়ায় ১৫টি সংস্থা আগ্রহ দেখায়। ২০১২-র অক্টোবরে ৮টি সংস্থা বৈঠকও করে যায়। তার পরে উদ্যোগে ভাটা পড়ে। এবিজি-বিতাড়ন ঘিরে তত দিনে হলদিয়ার পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এক রকম বন্দর-কর্তৃপক্ষের চাপাচাপিতে পড়ে বিড ডকুমেন্ট কিনেছিল তিনটি সংস্থা টাটার টিএমআইএল, আদানি পোর্ট ও হুন্ডাইয়ের এক কনসর্টিয়াম। শেষমেশ অবশ্য কেউই বিনিয়োগে আগ্রহ দেখায়নি।
ফলে টেন্ডারের আবেদন বৃথা গিয়েছে। প্রথম বার সাড়া না-পেয়ে দরপত্রের মেয়াদ এক মাস বৃদ্ধি করা হয়েছিল। এ দিন তা উত্তীর্ণ হলেও কেউ এসে বিড ডকুমেন্ট পর্যন্ত কিনে নিয়ে যায়নি। “শালুকখালির ভবিষ্যৎ এখন কার্যত বিশ বাঁও জলে।” মন্তব্য এক বন্দর-কর্তার।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.