আমার বয়স ২৩ বছর। পড়াশোনা করি। মাসে রোজগার করি ৫,০০০ টাকা। সংসারে কোনও খরচ দিতে হয় না। আমার পক্ষে রেকারিং ডিপোজিট করা ভাল, না কি পিপিএফ? কোনটি লাভজনক? রেকারিং ডিপোজিট কি সম্পূর্ণ করমুক্ত?


প্রথমেই বলি রেকারিং করমুক্ত নয়। বরং পিপিএফ সম্পূর্ণ করমুক্ত। পিপিএফ ১৫ বছরের এবং সুদ ৮.৭%। তাই আপনি যদি দীর্ঘমেয়াদে লগ্নি করতে চান, তা হলে বলব পিপিএফ করুন। কিন্তু যদি নগদের জোগান বজায় রাখতে চান, তা হলে রেকারিং করতে পারেন। কিন্তু আপনার সামনে এখন লম্বা জীবন পড়ে রয়েছে। তাই ওই দুই খাতে মিলিয়ে মিশিয়ে লগ্নি করুন। এতে যেমন কিছু টাকা দীর্ঘ সময়ের জন্য জমা থাকল। আবার অল্প সময়ের জন্য রেকারিং-এর সুবিধাও রইল।

আমরা চার বোন বাবার স্থাবর সম্পত্তির ব্যাপারে ভাইকে পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি দিয়েছিলাম। পরে চার জনই তা ‘রিভোক’ বা বাতিল করি। বাতিলের বিষয়টি ‘রেজিস্টার্ড পোস্ট উইথ এ/ডি’-র মাধ্যমে ভাইকে জানিয়েও দিই। কিন্তু তা সত্ত্বেও জমির একাংশ (বিহারে অবস্থিত) আমাদের না-জানিয়েই বিক্রি করে দিয়েছে ভাই। যাঁরা কিনেছেন, তাঁদের কাছেই জানতে পারি যে ওই বিতর্কিত জমি কেনার পর রেজিস্ট্রিও হয়ে গিয়েছে। আমরা জানি এটা বেআইনি কাজ। কী ভাবে ওই অংশটা ফেরত পেতে পারি জানালে উপকৃত হব।


আপনার প্রশ্ন শুনে বোঝা যাচ্ছে যে, আপনারা চার বোন কোনও কারণে আপনাদের ভাইকে বাবার রেখে যাওয়া স্থাবর সম্পত্তির ব্যাপারে পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি দিয়েছিলেন। এবং তার পর সেটা বাতিল করার পরও আপনার ভাই যেটা করেছেন, সেটা অবৈধ বিক্রি। সেটা অবশ্য আপনিও বুঝতে পারছেন। কিন্তু এখানে দু’টি প্রশ্ন উঠছে।
১) পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি-টা আপনারা রেজিস্ট্রি করেছিলেন কি না। এবং যে নথি দিয়ে আপনারা পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি বাতিল করেছিলেন (রিভোক), সেই নথিটি রেজিস্ট্রি করিয়েছিলেন কি না।
২) যে নোটিসটি আপনারা ভাইকে পাঠিয়েছিলেন, সেটি গৃহীত হয়েছিল কি না। অর্থাত্‌ বাতিলের বিষয়টি ভাই সত্যি সত্যি জানতে পেরেছিলেন কি না। যাই হোক, যদি ওই বিক্রি অবৈধ হয়, তবে সেটিকে চ্যালেঞ্জ করে দেওয়ানি আদালতে মামলা দায়ের করতে পারেন। আর যদি দেখা যায়, আপনার ভাই জেনেশুনে এই অবৈধ বিক্রয়ে অংশীদার হয়েছেন, তবে ফৌজদারি আদালতে মামলা করতে পারেন বা পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করতে পারেন।

জমির দলিলে বাবার নামে ১ কাঠা (.০২ শতক) এবং আমার ডাক নামে (.০৩ শতক) রেকর্ড করা রয়েছে। জমিটি শহর এলাকায়। বাবা মারা গিয়েছেন। আমি আমার আসল নামে মিউনিসিপ্যালিটি ট্যাক্স দিচ্ছি। আর সরকারি খাজনা দিচ্ছি ডাক নামে। এর পর সেটি বিক্রি করলে আমায় কি কোনও অসুবিধায় পড়তে হবে?


আপনি চাইলে আপনার নামাঙ্কিত অংশটুকু বিক্রি করতেই পারেন। তবে তার আগে প্রথম শ্রেণির জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে দিয়ে একটি অ্যাফিডেভিট করিয়ে নিতে পারেন। যেখানে লেখা থাকবে মিউনিসিপ্যাল ট্যাক্স যে-নামে দেওয়া হচ্ছে এবং সরকারি খাজনা যে- নামে দেওয়া হচ্ছে, তাঁরা একই ব্যক্তি। তা হলে আর ভবিষ্যতে জমি বিক্রি করতে আপনার অসুবিধা হবে না।

আমাদের ভাড়াটিয়া গত তিন বছর ধরে এক পয়সাও ভাড়া দিচ্ছেন না। অর্থাত্‌ বাড়ি থেকে আমার আয় ওই কয়েক বছরে শূন্য। অথচ ওই সময়ে ভাড়াটিয়া রাখার জন্য নিয়মিত বর্ধিত হারে সম্পত্তি কর দিচ্ছি।
ভাড়াটিয়ার বক্তব্য
১) উনি বাড়ি ছাড়বেন না।
২) কবে ভাড়া দেবেন, তার কোনও নিশ্চয়তা নেই।
৩) আমি চাইলে মামলা করতে পারি।
কিন্তু আর্থিক ও শারীরিক কারণে (আমি ক্যান্সারে আক্রান্ত) আমার পক্ষে মামলা করা অসম্ভব। এই অবস্থা থেকে মুক্তির উপায় কী? যদি সম্পত্তি কর না দিই, তা হলেই বা আমার কী কী বিপদ হতে পারে?



ভাড়াটিয়া থাকলে আপনাকে সম্পত্তি কর দিতেই হবে। যদি তা না দেন, তা হলে সেই কর জমতে থাকবে অর্থাত্‌ দেয় করের পরিমাণ বাড়তে থাকবে। এমনও হতে পারে কর্পোরেশন থেকে আপনাকে শুনানিতে ডেকে পাঠানো হল। সেখানে আপনি চাইলে সমস্যার কথা বুঝিয়ে বলতে পারেন।
কিন্তু তার আগে ভাড়াটিয়ার বিরুদ্ধে আপনাকে উচ্ছেদের মামলা করতে হবে। এই মামলার কাগজপত্র নিয়ে শুনানিতে হাজির হোন এবং তখন আপনি বুঝিয়ে বলুন, কেন সম্পত্তি কর দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু উচ্ছেদের মামলা ছাড়া কোনও উপায় নেই।
আপনি বলেছেন যে শারীরিক ভাবে অশক্ত এবং আর্থিক দিক দিয়েও মামলা করা সম্ভব নয়। এই ক্ষেত্রে আপনি চাইলে কোনও উত্তরাধিকারীকে পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি দিয়ে মামলা করাতে পারেন। যদি আর্থিক ভাবে মামলা চালাতে অক্ষম হন, তা হলে প্রতিটি জেলা জজের আদালতে বিনা খরচে আইনি সহায়তা কেন্দ্র (লিগাল এইড-এর অফিস) রয়েছে। সেখানে আবেদন করলে নিখরচায় আইনজীবী এবং সব রকম আইনি সহায়তা পাবেন।

আমার প্রপিতামহের হেদুয়ার পাশে একটি বড় বাড়ি আছে। বর্তমানে বাবা সেটির দায়িত্বে। সম্ভবত তিনি নিজের নামেই কর জমা দেন। আমরা দুই বোন এবং এক ভাই। বাড়ির অমতে বিয়ে করায় আমি কোনও কিছুই পাইনি। বাবা কি পিতৃপুরুষের বাড়ি ইচ্ছে মতো কাউকে লিখে দিতে পারেন? বাবার ব্যক্তিগত অর্থে কি আমার কোনও অংশ রয়েছে? বাবার অবর্তমানে কি পিতৃপুরুষের সম্পদে আমার অধিকার আছে? কী করণীয়?


বাবা যদি উইল বা দানপত্র না-করে মারা যান, তা হলে বাবার সম্পত্তি বা তাঁর নামাঙ্কিত সম্পত্তিতে আপনার অধিকার থাকবে। কিন্তু বাবা চাইলে ওই সম্পত্তি নিজের ইচ্ছে মতো দান বা উইল করে দিতে পারেন। সে ক্ষেত্রে আপনার কোনও কিছু বলার থাকবে না।

(আইনি পরামর্শ জয়ন্ত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়)


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.