সিপিএমের বন্ধ পার্টি অফিস খোলার জন্য বর্ধমান শহরের তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করতে চাইছে পুলিশ। কাল, শুক্রবার শাসকদলের ১১ জন নেতাকে বৈঠকে ডাকা হয়েছে।
বর্ধমান শহরাঞ্চলে এই মুহূর্তে সিপিএম ও তাদের গণসংগঠনের মোট ২৩টি অফিস বন্ধ। এর মধ্যে সিপিএমের ১৯টি, ডিওয়াইএফ-এর একটি এবং সিটুর তিনটি কার্যালয় রয়েছে। তৃণমূলের হামলার কারণেই সেগুলি খোলা যাচ্ছে না বলে সিপিএমের অভিযোগ।
গত মঙ্গলবার পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জাকে চিঠি দিয়ে সিপিএমের বর্ধমান জোনাল সম্পাদক তাপস সরকার অভিযোগ করেন, সাম্প্রতিক রাজনৈতিক গোলযোগের প্রেক্ষিতে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা শহর জুড়ে তাঁদের বেশ কয়েকটি পার্টি অফিস দখল করেছে। ওই সব অফিসে থাকা জিনিষপত্র লুঠ করেছে। কয়েকটি অফিসে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ করেছে। বেশ কিছু দলীয় কর্মী দুষ্কৃতীদের হাতে মার খেয়েছেন। পার্টি অফিসগুলি খুলতে পুলিশের কাছে সাহায্যের আবেদনও জানিয়েছেন তিনি।
বন্ধ থাকা ২৩টি কার্যালয়ের মধ্যে অন্যতম বড়নীলপুর বাজারে সিপিএমের ৪ নম্বর লোকাল কমিটি অফিস। সেখানে শুধু তালাই ঝুলিয়ে দেওয়া হয়নি, তৃণমূলের পতাকাও লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। |
এ ৩ ও ৫ নম্বর ইছলাবাদ, আলমগঞ্জ, পারবীরহাটা, বোরহাট, বিবেকানন্দ কলেজ মোড়, রথতলা, কাঞ্চননগর, তেজগঞ্জ, বের, গোলাহাট, দিঘিরপুল, ওলাইচণ্ডীতলা, শালবাগান, ৪ নম্বর শাঁখারিপুকুর, আমবাগান, ছোটনীলপুর মোড়, বিধানপল্লি ইত্যাদি এলাকায় সিপিএমের অফিস বন্ধ। কালনা গেট বাজার, বাজেপ্রতাপপুর, দুরাজদিঘিতে সিটু অফিস এবং সংহতিতে ডিওয়াইএফ অফিসেও তালা ঝুলছে।
বুধবার তাপসবাবু বলেন, “বিধানসভার নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরেই শহর জুড়ে নানা জায়গায় আমাদের বড়-ছোট-মাঝারি কার্যালয় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। পরে আমাদের কর্মীরা সাহস করে সেগুলি খোলেন। কিন্তু দিল্লিতে অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের উপর হামলার অজুহাতে ফের ওই ২৩টি অফিস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সামনেই পুরসভা নির্বাচন। অফিসগুলি খোলা না থাকলে আমাদের অসুবিধা হবে। ওই অফিসগুলি যাতে খোলা যায়, পুলিশ সুপারকে চিঠি লিখে সেই ব্যবস্থা করতে অনুরোধ জানিয়েছি।”
পুলিশ সুপার বর্ধমান থানার আইসি দিলীপকুমার গঙ্গোপাধ্যায়কে চিঠিটি পাঠিয়েছেন। আইসি তৃণমূল নেতা মহবুব আলম, কাকলি গুপ্ত, সমীর রায়, খোকন দাস, সুশান্ত ঘোষ, সেলিম খান-সহ ১১ জনকে চিঠি দিয়ে আলোচনার জন্য থানায় ডেকেছেন। আইসি বলেন, “পার্টি অফিসগুলো খুলে দিতেই পারি। কিন্তু এলাকায় যাতে অশান্তি না হয়, তার জন্যই তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করতে চাই। দরকার হলে সিপিএমের নেতাদের সঙ্গেও আলোচনা করব।”
তৃণমূলের মহবুব আলম, খোকন দাসেরা অবশ্য মানতে চাননি যে তাঁদের হামলাতেই সিপিএমের একের পর এক পার্টি অফিস বন্ধ হয়েছে। তাঁদের দাবি, “জনরোষের শিকার হয়েছে ওই অফিসগুলি। দিল্লিতে অমিত মিত্রের নিগ্রহের ছবি দেখেই মানুষ খেপে যায়।” অফিসগুলি খোলা হলে ফের বন্ধ করিয়ে দেওয়া হবে কি না, সে প্রসঙ্গে কোনও তৃণমূল নেতা প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে চাননি। |