বিচারাধীন এক বন্দির মৃত্যুর পাঁচ ঘণ্টা পর বাড়িতে ‘অসুস্থতা’র খবর দেওয়ায় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ করল পরিবার। সোমবার ইসলামপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সেই সঙ্গে পুলিশকেই অভিযোগ প্রতিলিপি রাজ্য মানবাধিকার কমিশনে পাঠানোর অনুরোধ করেছে মৃতের পরিবার। বিষয়টি নিয়ে সরব হন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসুও।
পুলিশ জানায়, গত রবিবার সকাল ১১টা নাগাদ জেল থেকে অসুস্থ অবস্থায় ইসলামপুর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় চোপড়া চাকলাগছের বাসিন্দা মজিবুর রহমান (৬০) নামের ওই বন্দিকে। তাঁর বিরুদ্ধে জমি সংক্রান্ত একটি মামলা থাকায় তিনি গত ২৪ মার্চ থেকে ইসলামপুর জেলে ছিলেন। ইসলামপুর হাসপাতালে ওই দিন সন্ধ্যায় তিনি মারা যান। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, সন্ধ্যায় মজিবুর মারা গেলেও অসুস্থতার খবর দেওয়া হয় রাত ১১টা নাগাদ। ইসলামপুর থেকে চাকলাগছের দূরত্ব প্রায় ৩০ কিমি। মজিবুরের ভাই আবদুল হাইমুল জানান, রাত ৮টা নাগাদ স্থানীয় এক ব্যক্তি দাদার হাসপাতালে ভর্তির খবর জানান। তিনি বলেন, “হাসপাতালে গিয়ে দেখি দাদা মারা গিয়েছে। পুলিশ রাতে অসুস্থতার খবর জানায়।”
মঙ্গলবার কলকাতায় সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু প্রশ্ন তোলেন, “ওই ব্যক্তি মারা গেলেন কেন? অসুস্থ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই হাসপাতালে ভর্তি করানো হল না কেন? বাড়ির লোককে জানানো হল না কেন? অকল্পনীয়, অভাবনীয় বিষয়।” তাঁর অভিযোগ, পুলিশের অত্যাচারেই মুজিবরের মৃত্যু হয়েছে। তাঁর দাবি, “যেহেতু পুলিশি হেফাজতেই মৃত্যু হয়েছে, তাই ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্ত হওয়া উচিত।
জেল সূত্রে খবর, নিয়ম অনুযায়ী অসুস্থ হওয়ার খবর প্রথম পৌঁছয় ইসলামপুর জেল থেকে ইসলামপুর থানায়। পরে তা পৌঁছায় চোপড়া থানায়। সেখান থেকেই খবর বন্দির বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার কথা। ওই দিন আড়াইটা নাগাদ সেই খবর নিয়ে ইসলামপুর থানায় যান জেলের এক কর্মচারী। ইসলামপুরের এসডিপিও সুবিমল পাল বলেন, “বিষয়টি জেল থেকে চোপড়া থানায় জানানো হয়। খবর পেয়েই চোপড়া থানার পুলিশ প্রথমে টেলিফোন ও পরে বন্দির বাড়ি গিয়েই তা জানিয়ে আসে।” ভারপ্রাপ্ত মহকুমাশাসক প্রভাত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “রবিবার সন্ধ্যায় মৃত্যু হলেও সোমবার মৃত্যুর ঘটনার রেডিওগ্রাম নিয়ে জেল কর্মীরা এসেছিলেন। তবে রবিবারের ঘটনায় নির্দেশ দিইনি। আমি খবর পেয়ে টেলিফোন করে বন্দির বাড়িতে খবর দিয়ে দিতে বলি।” আর জেলের তরফে আধিকারিক আবদুল হাই মোল্লা বলেন, “আমরা পুলিশকে সব খবর দিয়েছিলাম।” |