রায়গঞ্জের শ্যামপুরহাটে পুলিশের উপর হামলার দুই দিন কেটে গেলেও পুলিশ অভিযুক্ত তৃণমূলের নেতাদের গ্রেফতার করতে পারেনি। পুলিশের দাবি, অভিযুক্তরা ঘটনার পর এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত যুব তৃণমূলের গৌরী অঞ্চল কমিটির আহ্বায়ক রেজাউল হকের মোবাইল ফোনটি বন্ধ। তাঁরও খোঁজ মেলেনি। অভিযুক্তরা গ্রেফতার না হওয়ায় পুলিশ কর্মীদের একাংশের মধ্যেই বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
পুলিশ কর্মীদের বক্তব্য, আইন মেনে কাজ করতে গিয়ে শাসক দলের নেতা-সমর্থকদের হাতে নিগৃহীত হওয়ায় নিচুতলার কর্মীদের মনোবল ভেঙে গিয়েছে। অবিলম্বে অভিযুক্তরা গ্রেফতার না হলে কর্মীদের মনোবল চাঙা হবে না। উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্য বলেন, “অভিযুক্তরা আমাদের দলের নেতা সমর্থক হতে পারেন। এ ধরনের কাজে দলের কেউ জড়িত থাকলে পুলিশ গ্রেফতার করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিক।”
পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে শ্যামপুরহাট এলাকায় সাদা পোশাকের পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। জেলার বিভিন্ন থানাকেও সতর্ক করা ছাড়া মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে তদন্ত চলছে। জেলা পুলিশ সুপার অখিলেশ চতুর্বেদী জানান, অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে তল্লাশি শুরু হয়েছে। পুলিশ জানায়, রবিবার রাতে মুর্শিদাবাদের বহরমপুরের এক নাবালিকাকে উদ্ধারের জন্য রায়গঞ্জ থানার সাব ইন্সপেক্টর সমর সাহার নেতৃত্বে তিন জন এন ভি এফ কর্মী শ্যামপুরহাটে রাজকুমার আলি’র বাড়িতে হানা দেন। পুলিশের কাছে অভিযোগ আসে, রাজকুমার বালিকা অপহরণ করে নিজের বাড়িতে আটকে রেখেছে। রাজকুমারের সঙ্গে মেয়েটির বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। ওই বাড়ির সামনে যেতে তৃণমূলের নেতা সমর্থক ও বাসিন্দাদের একাংশ পুলিশ কর্মীদের ঘেরাও করে মারধর করেন। ঘটনার পর সাব ইন্সপেক্টর সমরবাবু রায়গঞ্জ থানায় তৃণমূল নেতা রেজাউল হক, স্থানীয় তিন তৃণমূল সমর্থক-সহ ১২ জনের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা ও মারধরের অভিযোগ দায়ের করেন। জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহিত সেনগুপ্ত বলেন, “অভিযুক্ত তৃণমূলের নেতা সমর্থকদের গ্রেফতার করা না হলে দলের তরফে আন্দোলন হবে।”
রায়গঞ্জের ব্লক তৃণমূল সভাপতি রজত ঘোষ বলেছেন, “রেজাউল হক অনুগামীদের সঙ্গে নিয়ে পুলিশের উপর হামলা চালিয়েছেন বলে শুনেছি। এই ঘটনার সঙ্গে দলের কোনও রকম সম্পর্ক নেই। ঘটনা সত্যিই হলে পুলিশ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিক।” |