বমাল চোর ধরে বিপাকে পড়েছেন জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালের সুপার ব্রজেশ্বর মজুমদার। পুলিশ চোর ধরে নিয়ে গেলেও, সুপারের জিম্মাতেই রেখে গিয়েছে চোরাই মাল। এবং সর্তক করে বলেছে, ‘চোরাই মাল’ আদালতে পেশ করতে হবে কিন্তু!
আর তাতেই ঘুম গিয়েছে হাসপাতালের সুপারের। কারণ, একটা-দুটো নয়, ২৫টি এঁচড়ের সরকারি জিম্মাদার হয়ে ব্রজেশ্বরবাবুর এখন কপালে ভাঁজ, পচে গেলে কী হবে? কাগজে পেঁচিয়ে যত্নে তুলে রেখেছেন সেগুলি। মাঝেমধ্যে জলের ছিটেও দিচ্ছেন। অফিস থেকে লাগোয়া আবাসনে গিয়ে দেখে আসছেন ঠিক আছে কি না সেগুলি। হাসপাতাল আর এঁচড় নিয়ে আপাতত তাঁর দিনযাপন।
রবিবার, চৈত্র সংক্রান্তির দিন, বেশ ভোরেই ঘুম ভেঙে গিয়েছিল ব্রজেশ্বরবাবুর। দাঁত মাজতে মাজতে আবাসনের সামনের মাঠে এসে ধপাস-ধপ শব্দ শুনে গিয়ে দেখেন গাছে বসে দুই ‘চোর’। তাঁকে দেখতে পেয়েই পড়িমরি পালিয়ে যায় এক জন। কিন্তু রাজু শাহ নামে অন্য ‘এঁচড়-চোর’ ধরা পড়ে যায়। সরকারি গাছে-চুরি? তলব হয় পুলিশের। |
পুলিশ এসে ধরেও নিয়ে যায় রাজুকে। কিন্তু পড়ে থাকা গোটা পঁচিশেক এঁচড় রয়ে যায় ব্রজেশ্বরবাবুর জিম্মায়। কেন থানায় নিয়ে যান না? পুলিশকর্মীরা সাফ জানিয়ে দেন, মালখানায় পোকা মাকড়ের উপদ্রব। এঁচড় কী আর থানায় রাখা যায়? ফলে সুপারের ‘সেফ কাস্টডি’-তেই আপাতত এঁচড়।
এঁচোড় চোরকে ১৪ দিন জেল হেফাজতে পাঠিয়েছেন বিচারক। পরে শুনানির দিন কেস ডায়েরি তলব করা হয়েছে। সেই সময় বাজেয়াপ্ত এঁচড়ও পেশ করতে হতে পারে আদালতে।
সেফ কাস্টডিতে তারা রয়েছে কী করে? প্রতিটি এঁচড় কাগজ দিয়ে ভাল করে মুড়ে তাকে তুলে রেখেছেন ব্রজেশ্বরবাবু। সকালে সন্ধ্যেয় সেগুলির ওপরে জল ঢালছেন। কাগজ সরিয়ে দেখছেন ইঁদুরে মুখ দেয়নি তো! জলপাইগুড়ি কৃষি শস্য রক্ষা আধিকারিক তপন সরকার বলেন, “ওষুধ স্প্রে করা ছাড়া পচনের হাত থেকে এঁচড় বাঁচানো সম্ভব নয়. কয়েক দিন ফ্রিজে রাখা যেতে পারে, তবে ওষুধ স্প্রে করতেই হবে।”
ব্রজেশ্বরবাবু বলেন, “ওষুধ পাব কোথায়? সারাদিন কাজের মধ্যে থাকি। এত আয়োজন করার সময় কোথায়!” তবে শুধরে নিচ্ছেন পরক্ষণেই, “সেফ কাস্টডি তো, সাবধানে রাখতে হচ্ছে!” |