সমালোচনা করলেও তাঁর নাম মুখে আনেননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় কিন্তু মঙ্গলবার রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান অশোক গঙ্গোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে বলেন, “প্রেসিডেন্সির ঘটনায় মানবাধিকার কমিশন তদন্ত শুরু করেছে। অথচ দিল্লিতে অমিত মিত্র ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হেনস্থা হলেও চেয়ারম্যান অশোক গঙ্গোপাধ্যায় নীরব ভূমিকা নিয়েছেন!”
কার্টুন কাণ্ড, পার্ক স্ট্রিটে ধর্ষণের অভিযোগ-সহ বিভিন্ন ঘটনায় পুলিশ কমিশনার-সহ প্রশাসনের একাধিক কর্তাকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল রাজ্য মানবাধিকার কমিশন। এটা ভাল ভাবে নেয়নি মমতার সরকার। ১৪ অগস্ট বিধানসভার ৭৫ বছর পূর্তির অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী নাম না-করে কমিশন ও তার কর্তাদের সমালোচনা করেন। বলেন, “দিনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১২ ঘণ্টাই এগ্জিকিউটিভদের ডেকে পাঠাচ্ছে কমিশন। নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করতে পারেন, এমন ভাল মানুষ এক জনকে নিয়ে এলাম। কিন্তু দেখছি, জানেনই না কিছু। এমন ভাবে লিখছেন, মনে হচ্ছে, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বা দেশের রাষ্ট্রপতি! জানেনই না, কী তাঁর এক্তিয়ার, কী তাঁর ক্ষমতা।” |
সেই সুরেই শিল্পমন্ত্রী এ দিন কমিশনের চেয়ারম্যানের নাম করে তাঁর নিরপেক্ষতা ও কাজ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। দিল্লিতে এসএফআই-সমর্থকদের হাতে মমতা-অমিতের নিগ্রহে কেউ গ্রেফতার না-হওয়ায় ক্ষোভ উগরে দেন। সেই সঙ্গেই রাজ্য মানবাধিকার কমিশনকে একহাত নেন পার্থবাবু। প্রেসিডেন্সিতে কমিশনের তদন্তে নামাটা যে তিনি ভাল ভাবে নিচ্ছেন না, বুঝিয়ে দেন সেটাও। পার্থবাবু বলেন, “অশোকবাবু দিল্লিতে পৌঁছতে পারলেন না কেন? ম্যাডাম (মমতা) কবে পার্ক স্ট্রিট নিয়ে একটি বাক্য চয়ন করেছেন, তা নিয়ে এত কথা! যাঁরা মুখ্যমন্ত্রীকে হেনস্থা করলেন, তাঁদের ধরা হল না কেন?”
সমালোচনার প্রতিক্রিয়ায় অশোকবাবু বলেন, “প্রেসিডেন্সিতে আমরা তদন্ত করছি, কারণ আমাদের মনে হয়েছে, সেটা করা উচিত। কিন্তু দিল্লির বিষয়টা আমাদের এক্তিয়ারের বাইরে। মানবাধিকারের উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি রয়েছে সেখানে।”
দিল্লির ঘটনায় সিপিএম-কেও তুলোধোনা করেছেন পার্থবাবু। তিনি বলেন, “দিল্লির ঘটনায় দোষীদের ধরতে না-পারলে সীতারামকে (সীতারাম ইয়েচুরি) তুলে নিয়ে যাক। যে-ভাবে অপরাধীদের না-পেলে তাদের বাবা, মা, ভাইকে পুলিশ তুলে নিয়ে যায়।” পাল্টা দিয়েছেন সিপিএমের রবীন দেব। তিনি বলেন, “তা হলে কি পার্থ বসুকে (প্রেসিডেন্সির ঘটনায় অভিযুক্ত তৃণমূলের কাউন্সিলর) ধরতে না-পারলে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে পুলিশের তুলে নিয়ে যাওয়া উচিত?”
|
২৩শে কংগ্রেসের আইন অমান্য জেলায় জেলায়
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিবাদে আগামী ২৩ এপ্রিল জেলায় জেলায় আইন অমান্য করবে কংগ্রেস। ওই দিন প্রত্যেক জেলাশাসকের দফতরে কংগ্রেস কর্মীদের বিক্ষোভ দেখানোর নির্দেশে দিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য। মঙ্গলবার হাজরা মোড়ে মহিলা কংগ্রেসের অবস্থান মঞ্চে এ কথা ঘোষণা করে প্রদীপবাবু বলেন, “তৃণমূল সরকারের জমানায় একের পর এক ঘটনায় প্রমাণিত, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে। কিন্তু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনিক তৎপরতা নেই। নারী নির্যাতন, কংগ্রেস কর্মীদের উপর হামলা-সহ সার্বিক আইনশৃঙ্খলার অবনতির প্রতিবাদে রাজ্যজুড়ে আইন অমান্য করবে কংগ্রেস।” তবে প্রথম পর্যায়ে এই কর্মসূচি হবে জেলায়। পরে কেন্দ্রীয় ভাবে কলকাতায় মিছিল-সমাবেশ করার পরিকল্পনা তাঁদের রয়েছে বলে প্রদীপবাবু জানান। |