বিদ্যুৎ নেই, মার খাচ্ছে বোরো চাষ
তিরিক্ত হিমে মার খেয়েছে বোরোধানের বীজতলা। ঠান্ডার সঙ্গে যুঝে টিকে থাকা অবশিষ্ট ধানের চারা রুইয়েছিলেন খড়গ্রামের কৃষকরা। কিন্তু বিদু্যতের অভাবে লক্ষাধিক বিঘার বোরো চাষের ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত। এখন ধানের শিষ বেরোনোর সময়। জমিতে অন্তত এক ইঞ্চি জল থাকা জরুরি। জল তোলার মাধ্যম বিদুৎ চালিত সাব-মমার্সিবল পাম্প। কিন্তু বিদ্যুৎ অমিল। তাই সেচও কার্যত বন্ধ। ফুটিফাটা ধান খড়গ্রামের প্রায় ৪৫ হাজার পরিবারের মাথায় হাত। চিন্তিত স্থানীয় বিধায়ক আশিস মার্জিতও।
আশিসবাবু বলেন, “ফি বছরের বন্যা ও খরায় জেরবার খড়গ্রামের মানুষ। বানভাসি মানুষের রুটিরুজি বোরো চাষের উপর নির্ভরশীল। অতিরিক্ত শীতে এ বার বীজতলা মার খেয়েছে। তাই বোরোধানের চাষ হয়েছে অন্য বারের থেকে অনেক কম। সামান্য চাষটুকুও শেষ হতে বসেছে বিদ্যুতের অভাবে জমিতে সেচ দিতে না পারায়।’’
এই কারণে তিনি কৃষক বিক্ষোভের ইঙ্গিতও দেখতে পাচ্ছেন। বিধায়ক বলেন, “বোরোধান না বাঁচাতে পারলে ক্ষুব্ধ কৃষকদের ক্ষোভ ফেটে পড়বে। এ কথা জানিয়েছি বিদ্যুৎ দফতরের আধিকারিকদের। বিদ্যুৎ মন্ত্রীকেও লিখিত ভাবে জানিয়েও কোনও কাজ হয়নি।”
বিদুৎ দফতর সূত্রে বিদ্যুৎ ঘাটতির তিনটি কারণ জানা গিয়েছে। প্রথমত, গ্রীষ্মকালীন বোরোধান চাষের সময় বিদ্যুতের চাহিদা অনেক গুণ বাড়লেও সেই মতো বিদ্যুৎ সরবরাহ নেই। দ্বিতীয়ত, হাইটেনসান লাইন কয়েক দশকের পুরনো হওয়ায় সঠিক ভোল্টেজের বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হয় না। তৃতীয়ত, অবৈধ সাব-মারসিবল পাম্প চালানোর জন্য ব্যাপক হারে বিদ্যুৎ চুরির ঘটনা হচ্ছে। বিদ্যুৎ দফতরের কান্দি ডিভিশনের আওতায় রয়েছে খড়গ্রাম ব্লক এলাকা। ডিভিশন ম্যানেজার হরনাথ ঘোষ বলেন, “এলাকায় প্রায় হাজার কিলোমিটার হাইটেনশান লাইন রয়েছে। পুরনো সেই লাইন পাল্টানোর কাজ শুরু হয়েছে। সময় লাগবে। এ বছরের গোড়ার দিকে প্রায় ৭০টি বিদ্যুৎ চুরির নালিশ করা হয়েছে।” তাতেও সমস্যা মিটছে না কেন? হরনাথবাবু বলেন, “এ বছর বোরোধানের জমিতে জলসেচের জন্য অস্থায়ী ভিত্তিতে প্রায় হাজারটি সাব-মারসিবল পাম্পে বিদ্যুৎসংযোগ দেওয়া হয়েছে।
ফলে সরবরাহের তুলনায় বিদ্যুতের প্রয়োজন অনেকটা বেশি। ফলে ঘাটতি দেখা দিয়েছে।” সমস্যা সামলাতে কোনও এলাকার ফিডার কয়েক ঘন্টার জন্য বন্ধ রেখে অন্য এলাকার ফিডার খুলে বিদ্যৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। পরে সেটি বন্ধ রেখে অন্য এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। তার ফলে বিভিন্ন এলাকায় দফাওয়ারি তৈরি হচ্ছে লোডশেডিং।
খড়গ্রামে রয়েছে দু’টি নদী-- দ্বারকা ও ব্রহ্মাণী। আর রয়েছে তিনটি বিশালাকার বিল পাটন, বেলুল ও সাকিরিয়া। ওই নদী ও বিলের উপরেও নির্ভর করে বোরো চাষ। খড়গ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, “কিন্তু ওই বিল ও নদীও শুকিয়ে ফুটিফাটা। জলস্তর অনেক নীচে নেমে গিয়েছে। তার জন্য বেশি ভোল্টেজের বিদ্যুৎ ছাড়া এখন আর জলসেচ সম্ভব নয়। বিদ্যুৎ দফতরের কাছে ভোল্টেজ বাড়ানোর জন্য আবেদন জানিয়েও কোনও সুরাহা মেলেনি।”
ওই ব্লকের মুর্চা-ভবানীনগরে বিদ্যুতের একটি সাব-স্টেশন রয়েছে। ওই সাব-স্টেশনের যা ক্ষমতা তাতে চাহিদা মতো ভোল্টেজের বিদুৎ দেওয়া সম্ভব নয়। সাব-স্টেশনের এক কর্তা বলেন, “ভোল্টেজের সমসা সমাধানের জন্য আরও বেশি পরিমান বিদ্যুত প্রয়োজন। খড়গ্রামে আরও একটি সাব-স্টেশন তৈরির অনুমোদন মিলেছে। সেখানে নতুন পাওয়ার হাউস তৈরি হলে সুরাহা মিলবে।” কিন্তু তার জন্য প্রয়োজন কয়েক বৎসর।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.