আর মাত্র ৬ দিন। তার পরেই অনুষ্ঠিত হতে চলেছে পৃথিবীর সব চেয়ে বড় ম্যারাথন লন্ডন ম্যারাথন। ৩৩-তম এই ম্যারাথনে প্রতিযোগীর সংখ্যা ৩৭ হাজার ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। এঁদের মধ্যে বহু আন্তর্জাতিক অ্যাথলিটও থাকবেন। অন্তত ৫ লক্ষ দর্শক উপস্থিত থাকার কথা। অথচ ঠিক তার আগেই সোমবার বস্টন ম্যারাথনে বিস্ফোরণের ঘটনায় অনেকেই আতঙ্কিত। এত বিপুল সংখ্যক লোকের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কিন্তু লন্ডন ম্যারাথন চিফ এগজিকিউটিভ নিক বিটেল যথেষ্ট আশাবাদী। আজ এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, “বস্টনের ঘটনা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। বিস্ফোরণে আহত ও নিহতদের পরিবারের পাশে রয়েছি। কিন্তু এর জেরে লন্ডন ম্যারাথন বন্ধ করা হবে না।” বিটেল জানিয়েছেন, আহতদের মধ্যে কয়েক জন ইংল্যান্ডের অ্যাথলিট থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
বাকিংহাম প্যালেসের তরফে জানানো হয়েছে, রবিবার ম্যারাথনের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে রাজকুমার হ্যারি উপস্থিত থাকবেন। তবে বস্টনের ঘটনার পরে হ্যারির নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে। প্রসঙ্গত হ্যারি লন্ডন ম্যারাথন চ্যারিটেবল ট্রাস্টের প্যাট্রন। বস্টন ম্যারাথনের বিস্ফোরণে আতঙ্কের বিবরণ অবশ্য খুব ঘনিষ্ঠ সূত্র থেকেই পেতে পারে ব্রিটিশ রাজপরিবার। বস্টন ম্যারাথনে যোগ দিয়েছিলেন রাজকুমার উইলিয়ামের বন্ধু পেরেগ্রিন হুড। |
৭৮ বছর বয়স্ক ম্যারাথন প্রতিযোগী বিল ইফরিগ। বস্টনে বিস্ফোরণের পর। ছবি: এপি। |
হুডের জন্য ফিনিশিং লাইনে অপেক্ষা করছিলেন তাঁর বাগদত্তা সেরেনা নিকা। বিস্ফোরণ হতেই প্রাণভয়ে পালাতে শুরু করেন সেরেনা। বেশ কিছু ক্ষণ হবু স্ত্রীকে খুঁজে পাননি হুড। শেষ পর্যন্ত ই-মেলে যোগাযোগ করতে পেরে হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছিলেন। আজ সকাল থেকে একের পর এক টুইটার বাতার্য় লন্ডন ম্যারাথনে উপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন অসংখ্য প্রতিযোগী। সোমবার বস্টন ম্যারাথনে যোগ দিয়েছিলেন ব্রিটেনের অ্যাথলিট অ্যাবি গ্রিফথ। তিনি লিখেছেন, “আমি সবে দৌড় শেষ করে ব্যাগ গোছাচ্ছিলাম। হঠাৎ খুব জোরে একটা আওয়াজ। মাটি কেঁপে উঠল। তখনই বুঝেছি কিছু একটা গণ্ডগোল হয়েছে।” দু’বার ম্যারাথন রেকর্ড গড়া অ্যাথলিট পলা র্যাডক্লিফ বলেছেন, “কিছু অসুস্থ মানুষের পক্ষেই এটা ঘটানো সম্ভব।” বিবিসি-র উপস্থাপক সুসানা রেড জানিয়েছেন, “গত বছর লন্ডন ম্যারাথনে যোগ দিয়েছিলাম। এ বারও যোগ দেব।” ম্যারাথনে উপস্থিত থাকছেন দু’বারের চ্যাম্পিয়ন মো ফারাহ-ও। টুইটার বার্তায় প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনও ঘটনার নিন্দা করেছেন।
লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশের চিফ সুপারিন্টেনডেন্ট জানিয়েছেন, লন্ডন ম্যারাথন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যৌথ ভাবে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। রবিবার লন্ডনের ব্ল্যাকহেলথ থেকে দৌড় শুরু হয়ে বাকিংহাম প্যালেসের সামনে শেষ হবে। ২৬ মাইল খোলা রাস্তায় নিরাপত্তার ব্যবস্থা করাটাই সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা। স্মৃতি, গৌরব আর সতর্কতার পাঁচমিশেল কী ভাবে সামলে উঠতে পারে লন্ডন ম্যারাথন কর্তৃপক্ষ আর লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ সেটাই দেখার। |