নিজস্ব সংবাদদাতা • খানাকুল |
দিন কয়েক আগে খানাকুলে সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সেই আগুনে ছাই হয়ে গিয়েছে ছাত্রছাত্রীদের বইখাতা। ফলে পরীক্ষা দিতে পারছে না তারা। মঙ্গলবার হুগলির খানাকুলের পাতুল গ্রাম ঘুরে দেখার পরে এই অভিযোগ করলেন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। |
এ দিন সূর্যকান্তবাবুর নেতৃত্বে বামফ্রন্টের ২০ জনের একটি প্রতিনিধি দল খানাকুলে যায়। রাস্তা জুড়ে নানা জায়গায় বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল। দুপুর ১২টা থেকে প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলি ঘুরে দেখেন বাম নেতারা। ঘটনার ছ’দিন পরেও হামলার চিহ্ন স্পষ্ট। সূর্যকান্তবাবুদের দেখে অনেক মহিলা কেঁদে ফেলেন। হাতজোড় করে বলতে থাকেন, “এখনই পুলিশ ক্যাম্পের বন্দোবস্ত করুন। না হলে তৃণমূলের ছেলেরা ফের হামলা করবে। আমাদের মেরে ফেলবে।” ঝর্না সাতিক নামে এক গৃহবধূ আছড়ে পড়েন সূর্যকান্তবাবুর পায়ে। বলেন, “আমরা নিঃস্ব হয়ে গিয়েছি। গাছতলায় থাকছি। সিপিএম করছি, এটাই কি অপরাধ?” নেতার পায়েই সংজ্ঞা হারান ঝর্না। বাম নেতারাই চোখেমুখে জল ছিটিয়ে তাঁর শুশ্রূষা করেন। ওই বাড়ির পাশেই লক্ষ্মীচরণ সাতিকেরও ঘর পুড়ে গিয়েছে। দিনমজুর তিলক এবং সন্ধ্যা সাতিকের ঘরও পুড়ে ছাই। তাঁদের কথায়, “আমাদের সব গিয়েছে। এক বস্ত্রে, আধ পেটা খেয়ে থাকছি।” কেউ বলেন, “আমাদের বাড়ি পুড়িয়ে ছাই করা হল। আবার পুলিশ আমাদেরই মারল। আমাদের ২১ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হল।”
সূর্যকান্তবাবু সকলের দুর্দশা এবং আতঙ্কের কথা সবিস্তারে রাজ্য সরকারের গোচরে আনার আশ্বাস দেন। বিরোধী দলনেতা অভিযোগ করেন, “বাড়িঘর ভাঙচুর করে লুঠপাট চালানো হয়েছে। আসবাবপত্র থেকে শুরু করে ইন্দিরা আবাসের কাগজপত্র, জবকার্ড, রেশন কার্ড, সফসিলি শংসাপত্র, জন্মের শংসাপত্র সব পুড়িয়ে দিয়েছে। বাচ্চা বাচ্চা ছেলেমেয়েদের বইপত্র পর্যন্ত জ্বালিয়ে দিয়েছে। ওরা পরীক্ষা দিতে যেতে পারছে না।” সূর্যকান্তবাবু বলেন, “ক্ষতিগ্রস্তদের পর্যাপ্ত ত্রাণ এবং পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার জন্য প্রশাসনকে বলা হয়েছে।” পুলিশ ক্যাম্প না বসলেও আপাতত পুলিশি টহল চলছে। সেটুকুই সামান্য ভরসা জোগাচ্ছে ঘরপোড়া মানুষগুলোকে।
|