সম্পাদকীয় ২...
চাভেস বিহনে
প্রেসিডেন্ট চাভেসের আকস্মিক মৃত্যু ভেনেজুয়েলার শাসনক্ষমতায় যে শূন্যতা সৃষ্টি করে, তাহা ভরাট করিতে অনুষ্ঠিত নির্বাচন অনিশ্চয়তার পূর্ণাঙ্গ অবসান ঘটাইতে সক্ষম হয় নাই। চাভেস-মনোনীত প্রার্থী নিকোলাস মাদুরোকে নির্বাচনে জয়ী হইয়াছেন বটে, কিন্তু জয়ের ব্যবধান এতই সামান্য, প্রতিদ্বন্দ্বী হেনরিক ক্যাপ্রিলেস র্যাডনস্কির সহিত তাঁহার প্রাপ্ত ভোটের পার্থক্য এতই কম যে, দেশের ভিতরে ও বাহিরে ভোট পুনর্গণনার জোরালো দাবি উঠিয়াছে। মাত্র এক শতাংশ ভোটের ব্যবধানে চাভেস-উত্তরসূরি মাদুরোর জয় ভেনেজুয়েলার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে একাধিক গুরুতর প্রশ্নও তুলিয়া দিয়াছে। চাভেসের প্রয়াণের পর রাজধানী-সহ দেশের নানা স্থানে শোকোচ্ছ্বাসের যে প্রদর্শনী দেখা গিয়াছিল, তাহা কতটা আন্তরিক, আর কতটা সাজানো, সেই অস্বস্তিকর প্রশ্নও উঠিয়াছে।
প্রতিদ্বন্দ্বী নেতা ৪৯ শতাংশের বেশি ভোট পাওয়ায় বুঝিতে হয় চাভেস-কথিত বলিভারীয় বিপ্লবের ক্রেতা ভেনেজুয়েলাতেই অনেক কমিয়া গিয়াছে। মাদুরো-বিরোধীরা রাস্তায় নামিয়া প্রতিবাদ জানাইতেছেন। পুলিশ ও সেনারা কারাকাসে টহল দিতেছে, বিক্ষুব্ধদের উপর লাঠি-চার্জ, কাঁদানে গ্যাস প্রয়োগ করা হইতেছে। ছাত্রযুবকদের মধ্যে ক্ষোভ তীব্র। যদি এ যাত্রা মাদুরো ক্ষমতায় টিকিয়াও যান, তথাপি তাঁহার সঙ্কট কাটিবে না। সঙ্কট তো কেবল জনপ্রিয়তার নয়, দেশের আর্থিক দেউলিয়াপনারও। বিশ্বের সর্ববৃহৎ তৈলভাণ্ডারের অধিকারী হইয়াও ভেনেজুয়েলা তাহার নীতির কারণে অর্থনৈতিক বিশৃঙ্খলা ও অনিশ্চয়তায় ভুগিতেছে। ১৪ বছর ধরিয়া চাভেস যথেচ্ছ ভাবে কোষাগার খালি করিয়া জনপ্রিয়তা সঞ্চয় করিয়াছেন। ব্যাপক সরকারি ব্যয়, ভর্তুকি ও অনুগ্রহ বিতরণ মারফত দরিদ্র ও শ্রমজীবী প্রান্তিক মানুষদের রাজনৈতিক সমর্থন আদায়ের পন্থা যেমন স্বাবলম্বী হইতে প্রেরণা দেয় নাই, অন্য দিকে কোষাগারে টান পড়িয়াছে। মুদ্রাস্ফীতি ৩০ শতাংশের উপরে। এখন চাভেস-প্রদর্শিত পথে অবিচল থাকার অর্থ জাতীয় অর্থনীতির আরও সমূহ সর্বনাশ। আর সেই পথ বাতিল করিয়া ধনতন্ত্রের বিকাশের পথ অবলম্বনের অর্থ দরিদ্র দেশবাসীর বিরাগভাজন হওয়ার ঝুঁকি লওয়া।
মাদুরো তাই উভয় সঙ্কটে। চাভেস-এর উত্তরাধিকারী হইলেও চাভেসের জনপ্রিয়তা তাঁহার নাই। চাভেসের রাজনৈতিক কর্তৃত্ব বহুলাংশে নির্ভরশীল ছিল সেনাবাহিনীর সহিত তাঁহার নিবিড় সম্পর্কের উপর। মাদুরোর সহিত দেশের সামরিক আমলাতন্ত্রের তেমন ঘনিষ্ঠতা নাই। ফলে প্রত্যক্ষ বলপ্রয়োগের উপরই তাঁহার ভরসা। ক্যাপ্রিলেস-অনুগামীরা যদি বেশি প্রতিবাদী হন, তবে পুলিশ ও সেনার সাহায্য লইয়া রক্তগঙ্গা বহাইতেও তিনি প্রস্তুত। স্বভাবতই ক্যাপ্রিলেস তাঁহার সমর্থকদের শান্তি ও ধৈর্য বজায় রাখিতে বলিয়াছেন। কিন্তু ভেনেজুয়েলা অত সহজে শান্ত হইবে বলিয়া মনে হয় না। সে দেশ এখন চাভেস-অনুগামী ও চাভেস-বিরোধী শিবিরে খাড়াখাড়ি বিভক্ত। মৃত্যুর পরও চাভেসই এখনও দেশের এজেন্ডা নিয়ন্ত্রণ করিতেছেন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.