|
|
|
|
তদন্তে জ্যোতিষীর সাহায্য চেয়ে ধমক খেলেন অফিসার |
স্বপন সরকার • পটনা |
ভাগ্য নির্ধারণে জ্যোতিষীর দ্বারস্থ হওয়া নতুন কিছু নয়। কিন্তু পুলিশি তদন্তে দিগ্দর্শন পেতে জ্যোতিষীর সহায়তা! নৈব নৈব চ। তবু এমন ব্যতিক্রমী ঘটনাই ঘটেছে বিহারে। একটি ডাকাতির ঘটনার তদন্তে থমকে গিয়ে শেষ পর্যন্ত এক পুলিশ অফিসার হরিদ্বারে এক জ্যোতিষীর দ্বারস্থ হয়েছেন। যদিও শেষ পর্যন্ত ওপরওয়ালার ধমক খেয়ে সেই পুলিশ অফিসার জ্যোতিষীর সামনে থেকে হাত গুটিয়ে নিয়েছেন।
কী ঘটেছিল? কয়েকমাস আগে বিহারে ১ কোটি ২৫ লক্ষ টাকার একটি ব্যাঙ্ক ডাকাতি হয়। পুলিশ সেই ঘটনার তদন্তে নেমে কিছুতেই তার কিনারা করতে পারছিল না। তদন্তে গতি আনতে এবং তার কিনারা করতে গিয়ে দিশাহারা তদন্তকারী অফিসার এক ‘শুভানুধ্যায়ী’-র পরামর্শে সোজা হাজির হন হরিদ্বারে। ওই জ্যোতিষী নাকি স্রেফ গণনা করে এমন বহু সূত্রহীন কেসের কিনারা করে দিয়েছেন। রাজ্য পুলিশ এক শীর্ষ কর্তার কথায়, “জ্যোতিষীর গণনার উপর ভরসা করার যে পরম্পরা সাধারণ মানুষের মনে রয়েছে, ওই তদন্তকারী অফিসারও তার ব্যতিক্রম নন। তবে ওই পুলিশ অফিসার ‘সৎ’ উদ্দেশেই অর্থাৎ ব্যাঙ্ক ডাকাতির কিনারা করতেই ছুটেছিলেন হরিদ্বারে। আসলে কেসের কিনারা করতে না পারার মানসিক হতাশা থেকেই তাঁর এই প্রয়াস।”
ডাকাতির ঘটনার পর এক মাস পেরিয়ে গেলেও কোনও সূত্র খুঁজে পাচ্ছিল না পুলিশ। হরিদ্বারে গিয়ে তদন্তকারী অফিসারটি ঘটনার সবিস্তার ওই জ্যোতিষীকে জানান। তদন্তকারী অফিসার জ্যোতিষীকে বলেন, “ডাকাতির ঘটনার কিছু সূত্র খুঁজে দিন। আর লুঠ হওয়া টাকা উদ্ধারের ব্যবস্থা করে দিন।” ঘটনার কথা শুনে জ্যোতিষী ওই অফিসারের কাছে ঘটনার তদন্তের খুঁটিনাটি সমেত ফাইলটি চান। পুলিশ অফিসারটি ফাইল নিতে হরিদ্বার থেকে ফের বিহারে ফিরে আসেন। অগাধ বিশ্বাসে ওপরওয়ালাকে ঘটনার কথা জানিয়ে ফাইলের একটা ফটোকপি চান। জ্যোতিষীর কথা শুনে সেই ওপরওয়ালা রাগে ফেটে পড়েন। তাঁকে রীতিমতো ধমক দিয়ে ওপরওয়ালা বোঝান, পুলিশি তদন্ত প্রক্রিয়া তথ্য-প্রমাণের উপর ভিত্তি করে বৈজ্ঞানিক নিয়ম মেনে চলে। এখানে জ্যোতিষীর কোনও ভূমিকা নেই, ভূমিকা থাকতে পারে না। তিনি সংশ্লিষ্ট অফিসারকে বলেন, “কী বলছ!? তুমি একজন পুলিশ অফিসার। পুলিশের নিয়ম মেনে তদন্ত করাই তোমার কাজ।” ধমক খেয়ে তদন্তকারী অফিসার দ্বিগুণ উদ্যমে নেমে পড়েন তদন্তে। ধরা পড়ে ডাকাতির মূল পাণ্ডা পাপ্পু সিপাহি। তাকে জেরা করে দলের বাকিদের গ্রেফতার ও টাকা উদ্ধারের চেষ্টা করছে পুলিশ। |
|
|
|
|
|