সাম্প্রতিক গোলমালের জেরে প্রেসিডেন্সির পদার্থবিদ্যা বিভাগে বাইরের লোকের যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করা হল। বিভাগীয় প্রধানের আমন্ত্রণ ছাড়া বহিরাগতেরা ওই বিভাগে ঢুকতে পারবেন না। মঙ্গলবার এই মর্মে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন ওই বিভাগের প্রধান সোমক রায়চৌধুরী। ১০ এপ্রিল ক্যাম্পাসে হামলার ঘটনার কথা মাথায় রেখেই এই বিজ্ঞপ্তি। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, ভবিষ্যতে হামলার ঘটনা ঠেকাতে এর পরে প্রেসিডেন্সির সব ভবনেই বহিরাগতদের আসা-যাওয়া নিয়ন্ত্রণ করা হতে পারে। |
প্রেসিডেন্সির গেটে পরিচয় যাচাই ছাত্রীদের। |
সোমকবাবুর বিজ্ঞপ্তিতে ১০ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলার উল্লেখ করে বলা হয়েছে: পদার্থবিদ্যা বিভাগ ও বেকার ল্যাবরেটরিতে পদার্থবিদ্যার লবিতে এখন থেকে প্রবেশাধিকার থাকবে শুধু ছাত্র এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীদের। বহিরাগতদের ঢোকার জন্য বিভাগীয় প্রধানের আমন্ত্রণ থাকা জরুরি। পরে সোমকবাবু বলেন, “পঠনপাঠনের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার জন্যই এই বিজ্ঞপ্তি।” বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, ওই ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের যাতায়াতে নিয়ন্ত্রণ না-থাকায় অনেকেই বিনা কাজে সেখানে আসেন। কেউ কেউ নিছক রাজনীতির উদ্দেশ্যে ক্যাম্পাসে ঢোকেন। রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের গড়া এক সদস্যের বিশেষ তদন্তকারী কমিটি এ দিনই প্রেসিডেন্সিতে যায়। প্রেসিডেন্সির প্রাক্তন অধ্যক্ষ অমল মুখোপাধ্যায় ওই কমিটির সদস্য। এ দিন বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছে অমলবাবু প্রথমে উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করেন। সেখান থেকে মূল ফটকের কাছে গিয়ে কথা বলেন এক দ্বাররক্ষীর সঙ্গে। তার পরে তিনি যান বেকার ল্যাবরেটরিতে। |
প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে মালবিকা সরকার ও
মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধি অমল মুখোপাধ্যায়। |
পরে অমলবাবু বলেন, “হামলার দিন প্রেসিডেন্সিতে কী ঘটেছিল, তা জানিয়ে আমাকে একটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট দিতে বলেছে মানবাধিকার কমিশন। এ দিন তদন্তের ব্যবস্থা করেছি। কিছু ছবি তোলা হয়েছে। তদন্ত শুরু হবে বৃহস্পতিবার। গোটা তদন্ত প্রক্রিয়ার ভিডিও রেকর্ডিং হবে।” চার-পাঁচ দিনের মধ্যে এই কাজ সেরে ফেলা যাবে বলে অমলবাবুর আশা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে হামলার প্রত্যক্ষদর্শীদের তালিকা চেয়েছেন অমলবাবু। তিনি বলেন, “সে-দিনের ঘটনা যাঁরা দেখেছেন, যাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন, সকলের সঙ্গেই কথা বলব। নিরাপত্তারক্ষী বা পুলিশের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষের কোনও অভিযোগ থাকলে তা-ও খতিয়ে দেখা হবে।” কাজের সুবিধার জন্য ওই তদন্ত কমিটিকে বিশ্ববিদ্যালয়েরই একটি সভাগৃহে অস্থায়ী ভাবে কাজ করতে দেওয়া হবে বলে এ দিন জানান প্রেসিডেন্সির রেজিস্ট্রার প্রবীর দাশগুপ্ত।
একটি বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে প্রেসিডেন্সির ক্যাম্পাসে যান অপর্ণা সেন। উপাচার্য মালবিকা সরকারের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। অবশ্য প্রেসিডেন্সির ভবিষ্যৎ নিয়েই তাঁরা কথা বলেছেন বলে উপাচার্য জানান। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় দলতন্ত্রমুক্ত ছাত্র-রাজনীতির পক্ষে সওয়াল করেন অপর্ণা। প্রেসিডেন্সিতে হামলার নিয়ে উদ্বেগ জানাতে ক্যাম্পাসে আসেন গায়িকা উষা উত্থুপ। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাগানে দাঁড়িয়ে গান করেন তিনি।
|