২০০১-এর পর ’১৩। ১২ বছর পর ফের খাসজঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ সেন্টারের সম্প্রসারণ নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করল প্রশাসন।
প্রথম পদক্ষেপ হিসাবে মঙ্গলবার রাজ্য ক্ষুদ্রশিল্পোন্নয়ন নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর পৃথা সরকার ও এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর চন্দ্রাণী টুডু গ্রোথ সেন্টারের পড়ে থাকা জমি পরিদর্শনে এলেন। অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) সুমন ঘোষ বলেন, “নিগমের প্রতিনিধিরা জমি দেখে খুশি। তাঁরা এই জমিকে শিল্পের উপযোগী করে উদ্যোগপতিদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছেন।”
মেদিনীপুর শহর ঘেঁষা খাসজঙ্গলে বহু একর সরকারি জমি দীর্ঘ দিন ধরেই পড়েছিল। ২০০১ সালে এখানে শিল্পের তোড়জোর হয়। ১৪ একর জমি চিহ্নিত করা হয়। উদ্যোগপতিদের ১০ ডেসিমেল করে জমি দেওয়া হবে বলেও সিদ্ধান্ত হয়। জল-বিদ্যুতের ব্যবস্থা করে প্রশাসন। প্রথম পর্যায়ে ৪৪ জন কারখানা করতে রাজিও হন। তাঁদের অনেকেই কারখানা গড়ে ভালই ব্যবসা করছেন। যাঁরা জমি দেখিয়ে ঋণ নিয়ে কারখানা করবেন ভেবেছিলেন, তাঁরা অবশ্য বেকায়দায় পড়েন। কারণ, ৩০ বছরের লিজে জমি পাওয়ায় তাঁরা ব্যাঙ্ক ঋণ পাননি। কিন্তু অর্থবানদের ক্ষেত্রে সমস্যা না হওয়ায় প্রশাসন বুঝতে পারে, ওখানে শিল্পের ভবিষ্যৎ রয়েছে। তাই পড়ে থাকা বাকি জমিতেও শিল্পস্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। ২৫.২৯ একর জমি পাঁচিল দিয়ে ঘেরা হয়। কিন্তু দ্বিতীয় ধাপের কাজ দূরের কথা, প্রথম ধাপের ১৪ একর জমিরও বেশ কিছুটা তার পর পড়েই থাকে। |
জমি পরিদর্শনে নিগমের প্রতিনিধিরা। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ। |
জেলা প্রশাসন ফের ১২ বছর পর প্রথম ধাপে পড়ে থাকা জমি ও দ্বিতীয় ধাপের ২৫.২৯ একর ঘিরে রাখা জমি রাজ্য ক্ষুদ্র শিল্পোন্নয়ন নিগমের হাতে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা নেয়। নিগমের কাছে পরিকল্পনা রিপোর্ট পাঠায় তারা। তার জেরেই এ দিন নিগমের দুই ডিরেক্টর জমি দেখতে আসেন। জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক অরিন্দম দত্ত, অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) সুমন ঘোষ, জেলা উন্নয়ন ও পরিকল্পনা আধিকারিক প্রণব ঘোষ তাঁদের ‘গ্রোথ সেন্টার’-এ নিয়ে যান। তাঁরা রাস্তা, জলের ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ সব খতিয়ে দেখেন। প্রশাসন জানিয়েছে, তাঁরা এই জমি নিতে আগ্রহ দেখিয়েছেন। আশা করা যায়, শীঘ্রই জেলা প্রশাসন নিগমের হাতে জমি তুলে দেবে। তার পর এলাকায় শিল্পের পরিবেশ গড়ে, যাঁরা শিল্প গড়তে চান তাঁদের আবেদনপত্র নেওয়া হবে। নিগম আবেদনকারীদের জমি তুলে।
গ্রোথ সেন্টারে কারখানা গড়েছেন বিজয় আগরওয়াল, সঞ্জীব রায় প্রমুখেরা। তাঁদের কথায়, “এখানে শিল্পের ভবিষ্যৎ থাকলেও বেশ কয়েকটি সমস্যা রয়েছে। এখনও এলাকাটি ‘নো লোডশেডিং জোন’ নয়, লোডশেডিং হলেই বড় অঙ্কের লোকসানের বোঝা চাপে। নিরাপত্তারও অভাব আছে। তা ছাড়া এখনও জমি লিজের মেয়াদ বাড়িয়ে ৯৯ বছর করা হয়নি।” এই সমস্যাগুলি সমাধান না হলে ভবিষ্যতে ‘গ্রোথ সেন্টার’ মুখ থুবড়ে পড়বে বলেই আশঙ্কা। তাই কারখানার মালিকদের অভিমত, আগে এই সমস্যা দূর করতে হবে। নিগম সূত্রে খবর, শিল্পের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরির জন্য সব রকম পদক্ষেপ করা হবে। |