বিদ্যুতের বিল বেড়েছে বেশ কয়েক গুণ। শ্রমিকদের বেতন ও নানা রকম ভাতা বেড়েছে। কিন্তু হিমঘরের ভাড়া বাড়াচ্ছে না রাজ্য সরকার, এই অভিযোগে আজ, বুধবার মহাকরণ অভিযানের ডাক দিয়েছে রাজ্য হিমঘর মালিকদের সংগঠন। এই কর্মসূচির কথা জানিয়েছেন ওয়েস্টবেঙ্গল কোল্ড চেন অ্যান্ড কোল্ডস্টোর ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের বর্ধমান জেলা কমিটির সভাপতি রমেশ হাজরা।
মঙ্গলবার রমেশবাবু জানান, আপাতত রাজ্যের হিমঘরগুলিতে আলু রাখতে গেলে প্রতি কুইন্টাল ১০১ টাকা করে ভাড়া দিতে হয়। কিন্তু তাঁরা চাইছেন, এই ভাড়া ১৫৩ টাকা করা হোক। তাঁর দাবি, এক মাত্র ভাড়া বৃদ্ধিই হিমঘরগুলিকে বাঁচাতে পারে। তা না হলে রাজ্যের প্রায় ৪০০টি হিমঘরে অবিলম্বে তালা পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে বর্ধমান, হুগলি, বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুরের মতো জেলাগুলির অর্থনীতিও বিপন্ন হবে বলে রমেশবাবুর দাবি।
হিমঘর মালিকদের অভিযোগ, অতীতে তাঁরা যে পরিমাণ ভাড়া বৃদ্ধি করতে আগ্রহী ছিলেন, তা রাজ্য সরকার কখনও বাড়ায়নি। এমনকী, গত তিন বছর ধরে ভাড়াই বাড়েনি। অথচ, বিদ্যুতের বিল, মজুরদের নানা ভাতা বেড়েছে। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ায় শেষ পর্যন্ত আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে হিমঘর মালিকদের দাবি।
ওই সংগঠনের তরফে জানানো হয়, হিমঘরের ভাড়া বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছয় সদস্যের একটি কমিটি তৈরি করেছেন। তাতে কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায়, খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, কৃষিমন্ত্রী মলয় ঘটক ও কৃষি প্রতিমন্ত্রী বেচারাম মান্না রয়েছেন। রমেশবাবুর দাবি, “আমরা গত ছ’মাস ধরে ওই কমিটির সদস্যদের কাছে দরবার করে চলেছি। কিন্তু ভাড়া বাড়ানোর ব্যাপারে সরকারের কোনও সদর্থক পদক্ষেপ দেখিনি। তাই বুধবার মহাকরণে গিয়ে ওই কমিটির সদস্যদের কাছে বিক্ষোভ দেখাব।”
ওই কমিটির এক সদস্যের দাবি, “আমরা ঠিক করেছিলাম, পঞ্চায়েত ভোটের পরে ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়টি ঘোষণা করা হবে। কিন্তু পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে জটিলতা দেখা দেওয়ায় কবে তা ঘোষণা করা হবে, বলতে পারছি না।” কৃষিমন্ত্রী মলয়বাবু বলেন, “হিমঘরের ভাড়া যে বাড়বে, তাতে সন্দেহ নেই। তবে কতটা বাড়বে, এখনই বলা সম্ভব নয়। হিমঘর মালিকদের দু’টি সংগঠনকে আগেই এ কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।” খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বক্তব্য, “আমরা কৃষি দফতরের সচিবকে এই ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়টি খতিয়ে দেখে একটি রিপোর্ট দিতে বলেছি। তা হাতে আসার আগে এ বিষয়ে কিছু বলা সম্ভব নয়।” |