কপালে ভাঁজ পুলিশের
জোড়া জামিনের শুনানিতে বিক্ষোভের ঝক্কি
দু’জনেই শাসক দল তৃণমূলের কাউন্সিলর। দু’জনেই পৃথক দু’টি হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত। দু’জনেই এখন শ্রীঘরে।
এক জনের সমর্থকেরা চান, দ্রুত জামিন মঞ্জুর করা হোক তাঁদের নেতার। শুনানির দিন পড়লেই ট্রাকে, ম্যাটাডর ভ্যানে আদালত-চত্বরে গিয়ে সেই দাবি জানাতে থাকেন তাঁরা।
অন্য জনের জামিনের আবেদন নিয়ে শুনানির দিনেও আলিপুর আদালতের সামনে বিস্তর চেঁচামেচি হয়, বিক্ষোভ হয়। তবে এই বিক্ষোভকারীদের দাবি পুরোপুরি উল্টো। অভিযুক্ত কাউন্সিলর যেন কোনও মতেই জামিন না-পান।
প্রথম জন গার্ডেররিচে এসআই তাপস চৌধুরীর হত্যাকাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত, তৃণমূলের বরো চেয়ারম্যান মহম্মদ ইকবাল ওরফে মুন্না।
অন্য জন ধাপার মাঠপুকুরে তৃণমূলের স্থানীয় নেতা অধীর মাইতি খুনে ধৃত শম্ভুনাথ কাও।
দু’জনের জামিনের আবেদনের শুনানির দিন বিক্ষোভকারীদের সামলাতে হিমশিম খেতে হয় পুলিশকে। এ-পর্যন্ত কোনও মতে বিক্ষোভকারীদের সামলাচ্ছিলেন পুলিশকর্তারা। কিন্তু কাল, বুধবার ওই দুই নেতার জামিনের আবেদন নিয়ে শুনানি পড়েছে একই দিনে, একই আদালতে এবং প্রায় একই সময়ে। আর তাতেই কপালে ভাঁজ পড়েছে পুলিশকর্তাদের। এই জোড়া ঝক্কি কী করে সামলাবেন, চিন্তা তা নিয়েই।

মহম্মদ ইকবাল

শম্ভুনাথ কাও
পুলিশ জানায়, এর আগে তিন বার মুন্নার জামিনের আবেদনের শুনানির দিন গার্ডেনরিচ এলাকা থেকে ম্যাটাডর ভ্যান ও লরিতে দলে দলে মহিলা-পুরুষ এসে আদালত চত্বরে বিক্ষোভ দেখান। সেই বিক্ষোভ সামলাতে হিমশিম খেতে হয়েছে পুলিশকে। মুন্নার জামিনের আবেদনের প্রথম শুনানির প্রথম দিন (৭ মার্চ) তাঁর ভাইঝি ডলির নেতৃত্বে বিক্ষোভ দেখানো হয়। মুন্নার মেয়ে সাবাতাজের সহায়তায় সে-যাত্রায় বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেন পুলিশকর্তারা। পরের দু’দিনও মুন্নার অনুগামীরা আদালতে বিক্ষোভ দেখান। পুলিশ কর্তারা জানান, বুধবারেও বিক্ষোভকারীরা আদালত চত্বরে আসবেন বলে গোয়েন্দা সূত্রের খবর। মুন্নার সমর্থকেরা মনে করছেন, ওই দিন তিনি জামিন না-পেলে সমূহ বিপদ! কারণ, পরের দিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবারেই রয়েছে বরো চেয়ারম্যান নির্বাচন। মুন্না সেই নির্বাচনে হাজির হতে না-পারলে তাঁর ওই পদ হারানোর আশঙ্কা প্রবল বলেই মনে করছেন তাঁর সমর্থকেরা। তাই জামিনের দাবিতে ওই দিনের বিক্ষোভের মাত্রা আরও বাড়তে পারে। সেই জন্য আদালতের সামনে ওই দিন বাড়তি পুলিশি প্রহরা রাখার কথা বলেছেন গোয়েন্দারা।
বিক্ষোভের পরিকল্পনায় পিছিয়ে নেই মাঠপুকুরে নিহত তৃণমূল নেতা অধীরবাবুর সমর্থকেরাও। পুলিশি সূত্রের খবর, বুধবার প্রায় একই সময়ে আলিপুর আদালতের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে আসছেন ওই নেতার সমর্থকেরা। তাঁরা চান না, অভিযুক্ত কাও জামিন পান। গোয়েন্দাদের আশঙ্কা, কাও সে-দিন জামিন পেলে ওই বিক্ষোভকারীদের সামলাতে বাড়তি ব্যবস্থা নিতে হবে পুলিশকে।
দল বেঁধে মহিলাদের উপস্থিতি পুলিশের মাথাব্যথা বাড়াচ্ছে। পুলিশ জানায়, দু’দল বিক্ষোভকারীর মধ্যেই প্রচুর মহিলা থাকেন। ওই মহিলাদের ঠেকাতে অতিরিক্ত মহিলা পুলিশও প্রয়োজন। এত মহিলা পুলিশ কোথায় পাওয়া যাবে, তা নিয়ে পুলিশকর্তারা একাধিক বৈঠকও করেছেন। আপাতত ঠিক হয়েছে, বিভিন্ন থানা থেকে মহিলা পুলিশকর্মীদের তুলে এনে বুধবার আদালত-চত্বরে রাখা হবে।
লালবাজারের এক পুলিশকর্তা বলেন, “আলিপুর আদালত ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা সদর একই জায়গায়। দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসকের অফিস এবং জেলা পরিবহণ দফতরে গাড়ি পরীক্ষার জায়গাটিও লাগোয়া। তাই বিক্ষোভে ওই সব অফিসে যাতে কাজ পণ্ড না-হয়, নজর রাখতে হবে সে-দিকেও।”
সব মিলিয়ে দুই তৃণমূল পুরপিতার জামিনের আর্জির শুনানি ঘিরে পুলিশে এখন সাজো সাজো রব।

পুরনো খবর:
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.