পঞ্চায়েত ভোট কবে হবে তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তার মধ্যেই পুরোদমে পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচার করলেন রাজ্যের পঞ্চায়েত গ্রামোন্নয়ন ও জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। রবিবার বিকালে কোচবিহারের দিনহাটা মহকুমার শালমারা হাইস্কুল চত্বরে একযোগে পাঁচটি পানীয় জল প্রকল্পের উদ্বোধনের পাশাপাশি একটি প্রকল্পের শিলান্যাস করেন সুব্রতবাবু। অনুষ্ঠানে পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারই তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে। এমনকী, দিনহাটার ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক উদয়ন গুহকেও প্রকাশ্যে কটাক্ষ করে কোচবিহারের উন্নয়নে ঢালাও প্রতিশ্রুতিও দেন।
তিনি বলেন, “৩৪ বছর শুধু শিলান্যাস হয়েছে। পরে ওই শিলা রাস্তায় গড়াগড়ি খেয়েছে। এতে সরকার শিলান্যাস করলে কাজ হবেনা বলেই মানুষের ধারণা হয়েছে। আমিও শিলান্যাসের পক্ষে নই। শালমারাতে শিলান্যাস নয়, কাজের শুভারম্ভ হল।” জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর আয়োজিত অনুষ্ঠানে মঞ্চে তো বটেই দফতরের তরফে বিলি করা প্রচারপত্রেও দিনহাটার শালমারা ও লাগোয়া এলাকায় নলবাহিত পানীয় জল প্রকল্পের শিলান্যাসের কথা লেখা হয়। ওই কাজে ৫০ কোটি টাকা খরচ হবে। অন্যদিকে উদ্বোধন হওয়া প্রকল্পগুলির তালিকায় ছিল দিনহাটা ১ ব্লকের সাতকুড়া, দিনহাটা ২ ব্লকের খট্টিমারি ও তুতিয়ারকুঠি তুফানগঞ্জ ১ ব্লকের ছাতোয়া ও তুফানগঞ্জ ২ ব্লকের টাকোয়ামারি এবং সংলগ্ন এলাকার পানীয় জল প্রকল্প। মন্ত্রী সুব্রতবাবু বলেন, “আমরা এখানে সমর্থন পাইনি। তবুও কাজ করলাম। আসলে উন্নয়নে আমরা দলবাজি করি না।”
তিনি শুকারুরকুঠি চৌধুরীহাট কালমাটি ওকরাবাড়ি পুটিমারি সাহেবগঞ্জ ফলিমারি এলাকায় শীঘ্রই পানীয় জল প্রকল্পের আশ্বাস দেন। সরকার ভিশন-২০২০ সামনে রেখে প্রত্যেক বাসিন্দার জন্য দৈনিক ৭০ লিটার জল সরবরাহ করার পরিকল্পনা নিয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে পঞ্চায়েত ভোটের এ দিনও বিরোধিতা করেন সুব্রতবাবু। কোচবিহারকে অনুন্নত জেলা ঘোষণার দাবি নিয়ে সরব হয়ে দিনহাটার ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক উদয়ন গুহকে কটাক্ষ করেন। পঞ্চায়েত মন্ত্রী বলেন, “এখানকার বিধায়কের কাজ নেই। তাই সন্ধ্যা হলেই সেজেগুজে টিভিতে বসে পড়েন। ওঁর একটাই কাজ, সরকারের কুৎসা করা।” এনিয়ে দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহের প্রতিক্রিয়া, “আমার দিকে সুব্রতবাবুদের নজর আছে সেটা ওঁর বক্তব্যে বোঝা যাচ্ছে। তবু ওঁকে ধন্যবাদ শালমারার প্রকল্পের কাজ শুরুর জন্য। বিধায়ক হওয়ার পর থেকে শালমারা ও কালমাটিতে জল প্রকল্প গড়ার ব্যাপারে সুব্রতবাবুকে চেপে ধরেছিলাম। আমি চাই অন্য বাম বিধায়কদের এলাকাতেও উনি এ ভাবে প্রকল্প করুন।”
শালমারা যাওয়ার পথে ছিটমহলের বাসিন্দাদের তরফে পঞ্চায়েত মন্ত্রীকে একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়। দ্রুত ছিটমহল বিনিময়ের ওই আর্জির ব্যাপারে মন্ত্রী বলেন, “ছিটমহল সমস্যা আন্তর্জাতিক বিষয়। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করব।” ওই অনুষ্ঠান মঞ্চে আগাগোড়া ভোটের প্রচার শুধু নয়, সরকারি অনুষ্ঠান হলেও পুরো নিয়ন্ত্রণ ছিল তৃণমূলের নেতাদের হাতেই। বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন, রাজ্যের পরিষদীয় সচিব রবীন্দ্রনাথ ঘোষ এবং জেলাশাসক মোহন গাঁধী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। |