ক্লাসে অন্যমনস্ক হয়ে পড়েছিল নবম শ্রেণির এক ছাত্রী। এক শিক্ষক তখন সোনালী পাণ্ডে নামে ওই ছাত্রীকে ডেকে তার মাথা ও পিঠে ডাস্টার দিয়ে মারধর করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গুরুতর অসুস্থ ওই ছাত্রীকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে সোনালীকে রবিবার রাতে কলকাতায় এসএসকেএম হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
শনিবার হবিবপুর থানার ঋষিপুর হাইস্কুলে ঘটনার পরে সোনালীর বাবা পেশায় বেসরকারি সংস্থার রক্ষী নবকুমার পাণ্ডে ওই শিক্ষক শুভেন্দু ঘোষের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন। জেলা পুলিশ সুপার কল্যাণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “ওই ছাত্রীর বাবার এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তদন্ত শুরু হয়েছে। প্রয়োজনে ওই শিক্ষককে গ্রেফতার করা হবে।” স্কুলের প্রধান শিক্ষক অভিজিৎ নন্দী বলেন, “ঘটনার দিন আমি স্কুলে উপস্থিত ছিলাম না। ঠিক কী হয়েছে বলতে পারব না। তবে জখম ছাত্রীর চিকিৎসার খরচ স্কুলের পক্ষ থেকে দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” |
স্কুল সূত্রের খবর, মারধরের জেরে সোনালী ক্লাসের মধ্যেই অজ্ঞান হয়ে যায় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টা পরে তার বাড়ির লোকজন এসে প্রথমে বুলবুলচণ্ডী আরএনরায় হাসাপাতালে পরে সেখান থেকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। তার মাথার পিছনে রক্ত জমে গিয়েছে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। পরে তাকে কলকাতায় ‘রেফার’ করা হয়। মালদহ মেডিক্যাল কলেজের সুপার হিমাদ্রি আড়ি বলেন, “মেয়েটির মাথায় রক্ত জমাট বেঁধে গিয়েছে। যত সময় যাচ্ছে ওই ছাত্রীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করেছে। ওকে দ্রুত কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।”
শুভেন্দুবাবু অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “ক্লাস চলাকালীন পড়াশোনায় মন না দিয়ে ও কথা বলছিল। তাই চড় মেরেছিলাম। ডাস্টার দিয়ে মারিনি। এর বেশি কিছু বলতে চাই না।” মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ফিমেল সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে শুয়ে সোনালী বলেন “শুভেন্দু স্যারের ক্লাসে শরীর খারাপ লাগায় জানালা দিয়ে বাইরে তাকাচ্ছিলাম। প্রথমে উনি আমাকে ডেকে ধমক দেন। তারপরে ডেকে ডাস্টার দিয়ে আমার মাথায় ও পিঠে এলোপাথাড়িভাবে মারতে থাকেন। চিৎকার করলেও উনি থামেননি। অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাই। আর কিছু মনে নেই।”
সোনালীর দাদা বিশ্বজিৎ পাণ্ডে জানান, প্রায় দেড় ঘণ্টা পর বোনের বন্ধুদের কাছ থেকে খবর পেয়ে তিনি স্কুলে যান। তিনি বলেন, “তখনও সোনালী অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে ছিল। আশপাশে কেউ ছিল না।” তবে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের দাবি, “ঘটনার পর মেয়েটিকে জল দেওয়া হয়েছিল। দেখাশুনো করা হয় বলেও শুনেছি। তার পরে তার বাড়ির লোকজন এসে তাকে নিয়ে গিয়েছে।” |