এক যুবককে গুলি করে গলার নলি কেটে খুন করল দুষ্কৃতীরা। রবিবার দুপুরে পেট্রাপোলে এই ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, নিহত ইমাম মণ্ডল (২৮) বিদেশি মুদ্রা বিনিময়ের কারবার করতেন। বাড়ি স্থানীয় জয়ন্তীপুর গ্রামে। জনবহুল এলাকায় প্রকাশ্যে এমন ঘটনায় আতঙ্কে বন্ধ হয়ে যায় দোকানপাট। ঘটনাস্থলে যান বনগাঁর এসডিপিও রূপান্তর সেনগুপ্ত, আইসি চন্দ্রশেখর দাস। যায় বিএসএফও। পুলিশ জানিয়েছে দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন দুপুরে বন্দরের হাজি মার্কেটে নিজের দোকানেই ছিলেন ইমাম। দুপুর একটা নাগাদ একটি মোটর সাইকেলে তিন দুষ্কৃতী হাজির হয়। একজনের মাথায় হেলমেট ছিল। আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে তাদের দোকানে ঢুকতে দেখে ইমাম পালানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তাঁকে ধরে ফেলে দুষ্কৃতীরা মাথায় গুলি করে। তারপর ধারাল অস্ত্র দিয়ে গলার নলি কেটে দেয়। কাজ সেরে তারা বাংলাদেশের দিকে চলে যায় বলে এক প্রত্যক্ষদর্শী পুলিশকে জানিয়েছেন।
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘সম্ভবত ব্যবসা সংক্রান্ত ঝগড়া-বিবাদ ও পুরনো শত্রুতার জেরেই ইমামকে খুন করা হয়েছে।” নিহতের এক আত্মীয়া বলেন, “কারবারের দখল নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই ঝামেলা হচ্ছিল। লেই কারণেই ইমামকে খুন করা হয়েছে।” যদিও কার বা কাদের সঙ্গে ঝামেলা হচ্ছিল সে ব্যাপারে তিনি কিছু বলেননি।
প্রসঙ্গত, ইমামের বাবাও একই ভাবে খুন হন। ২০১১ সালের ২ সেপ্টেম্বর মজনু মণ্ডলকেও গলার নলি কেটে ও কুপিয়ে খুন করে দুষ্কৃতীরা। ওই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। ঘটনার মূল ষড়যন্ত্রকারী হিসাবে উঠে আসে স্থানীয় এক দুষ্কৃতীর নাম। ২০১০ সালের ১৮ মে তাকেও পেট্রাপোলে খুন করা হয়। পুলিসের ধারণা, তার বদলা হিসাবেই এই খুন।
তবে বন্দর এলাকা হওয়ায় পেট্রাপোল যে ক্রমেই অপরাধীদের আখড়া হয়ে উঠছে সাম্প্রতিক কয়েকটি খুনের ঘটনার পরে সে বিষয়ে একমত স্থানীয় মানুষ। তাঁদের অভিযোগ, শহরজুড়ে চলছে নম্বরহীন বাইকের দাপাদাপি। এলাকায় এমন কিছু যুবককে ঘোরাফেরা করতে দেখা যাচ্ছে যারা স্থানীয় নয়। অনেকের হাতে আগ্নেয়াস্ত্রও থাকে। অথচ পুলিশ কিছুই করছে না।
বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাসের বক্তব্য, “বনগাঁয় আইন-শৃঙ্খলার উন্নতির প্রশ্নে সম্প্রতি পুলিশে রদবদল করা হয়েছে। পুলিশকে স্বাধীন ভাবে কাজ করতে বলা হয়েছে। কিন্তু তার পরেও এমন ঘটনা দুর্ভাগ্য। কোথায় সমস্যা হচ্ছে তা নিয়ে জেলার পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করব।” |