ওডাফা ওকোলির নতুন চুক্তিপত্র ফেডারেশন দফতরে পাঠিয়ে দিল মোহনবাগান। চার্চিল ব্রাদার্সের গত ছ’মাসের চেষ্টা সত্ত্বেও ভারতীয় ফুটবলে এ বারের সবথেকে সফলতম স্ট্রাইকার শেষ পর্যন্ত পুরনো ক্লাবেই থেকে যাচ্ছেন। মাঝ মরসুমে উড়ু-উড়ু মন হলেও, ক্লাব কর্তাদের সঙ্গে সখ্যতার জেরেই থেকে গেলেন বর্তমান বাগান অধিনায়ক। গত বারের চেয়ে সামান্য অর্থ বাড়িয়ে ওডাফাকে রেখে দিল মোহনবাগান।
কোচ নিয়ে সাম্প্রতিককালে মোহনবাগানে নানা নাটক হয়েছে। পরের মরসুমে সেই সম্ভাবনা নেই। এ বারের কোচ করিম বেঞ্চারিফার সঙ্গে সবুজ-মেরুনের চুক্তি রয়েছে আগামী মরসুমেও। করিমের সঙ্গে কথা বলেই দল গড়ছেন বাগানের ফুটবল বিভাগের দায়িত্বে থাকা কর্তারা। যা সাম্প্রতিককালে কখনও হয়নি। টিম ঠিক হয়ে যাওয়ার পর কোচ নির্বাচন হত। হঠাৎ-ই সন্তোষ কাশ্যপের মতো অনভিজ্ঞ কোচ এনে ডুবতে হয়েছে এ মরসুমেও। করিম শনিবারও আক্ষেপ করে বলেছেন, “মোহনবাগানের এ বারের টিমটা আই লিগ জেতার মতো ক্ষমতাশালী ছিল।” |
শনিবার এয়ার ইন্ডিয়াকে হারিয়ে আই লিগে অবনমন থেকে বেরিয়ে আসার পর দলগঠন শুরু করে দেয় মোহনবাগান। ফুটবলারদের সঙ্গে কথাবার্তা চলছিলই, কিন্তু চুক্তি নিয়ে দ্বিধায় ছিলেন অনেকেই। ওডাফার সঙ্গে বাকি তিন বিদেশিও নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে শনিবার রাতেই। টোলগে ওজবের সঙ্গে দু’বছরের চুক্তি রয়েছে। কিন্তু এ মরসুমের প্রথম দিকে অস্ট্রেলীয় স্ট্রাইকারের চোট-আঘাত এবং পারফরম্যান্স দেখে হতাশ হয়ে পড়েছিলেন কর্তারা। একটা সময় তাঁকে পরের মরসুমে ছেড়ে দেওয়ার কথাও ভাবা হয়েছিল। কিন্তু টোলগের বর্তমান ফর্ম দেখে কর্তাদের মত বদলায়। করিমও ক্লাবকে জানিয়েছেন, টোলগে ষাট ভাগ ফিট। পরের মরসুমে তাঁকে রাখা যেতে পারে। ফলে ওডাফা-টোলগে যুগলবন্দি সামনের মরসুমেও দেখা যাবে বাগানে। রেখে দেওয়া হচ্ছে ইচেকেও। প্রায় প্রতি ম্যাচেই ভাল পারফরম্যান্স করছেন এই নাইজিরিয়ান ডিফেন্ডার।
ওডাফার মতো যে বিদেশিকে নেওয়ার ব্যাপারে অন্য ক্লাবগুলির সঙ্গে দড়ি টানাটানি চলছিল মোহনবাগানের, সেই জাপানি মিডিও কাতসুমির সঙ্গেও চুক্তি হয়ে গিয়েছে দেবাশিস দত্তদের। ওএনজিসি-র হয়ে এ বছর দরুণ খেলেছেন কাতসুমি। পেনকে ছেড়ে তাঁকে নেওয়ার জন্য ঝাঁপিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। পুণে এফসি-ও। শেষ পর্যন্ত কাতসুমির এজেন্টের সঙ্গে শনিবার রাতে চূড়ান্ত কথা বলে নেন বাগান কর্তারা। প্রায় আধ কোটি টাকায় চুক্তি হলেও, আই লিগের মাঝে সরকারি ভাবে তা ঘোষণা করা যাচ্ছে না। এক মোহন-কর্তা বললেন, “কাতসুমি ইস্টবেঙ্গলে চলে গিয়েছে বলে সবাই ধরে নিয়েছে। সেটাই চালু থাক না। মরসুম শেষে দেখবেন ওর জার্সির রং সবুজ-মেরুন।”
কাতসুমিকে পেয়ে যাওয়ায় পেনের ব্যাপারে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে মোহনবাগান। বলা যায়, লাল-হলুদের নাইজিরিয়ান মিডফিল্ডারকে সবুজ-মেরুন নিচ্ছে না। তবে ইস্টবেঙ্গলের এ মরসুমের অধিনায়ক সঞ্জু প্রধানের গায়ে পরের মরসুমে খুব সম্ভবত সবুজ-মেরুন জার্সি উঠতে চলেছে। মর্গ্যানের টিমের বেশির ভাগ ফুটবলারই দু’বছরের চুক্তিবদ্ধ। তিন বিদেশি, নওবা সিংহ এবং সঞ্জু প্রধানেরই শুধু চলতি মরসুমে চুক্তি শেষ। সঞ্জুকে নিলেও জানা গিয়েছে, নির্মল ছেত্রীর পারফরম্যান্স ভাল হওয়ায় নওবাকে নিয়ে আপাতত মাথা ঘামাচ্ছেন না মোহন-কর্তারা।
ক্লাবের একটি সূত্র জানাচ্ছেন, রহিম নবি, বিশ্বজিৎ সাহা, মণীশ মৈথানি, স্নেহাশিস চক্রবর্তী, ডেনসন দেবদাস-সহ এ বারের টিমের ষাট ভাগ ফুটবলারকে রাখা হবে ঠিক করেছে মোহনবাগান। রাকেশ মাসি-কে রাখা হচ্ছে না। জুয়েল রাজার পারফরম্যান্স বাকি ম্যাচে দেখে করিমের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। পুণে এফসি-র জেজে এবং আনসা, ডেম্পোর দেবব্রত রায়ের সঙ্গে প্রাথমিক কথা হলেও চূড়ান্ত কিছু হয়নি বাগানের। |