একা নারিনে রক্ষে নেই, সচিত্র দোসর।
রবিবার শ্রীলঙ্কা থেকে আসা ২৮ বছরের ছেলেটার বোলিং দেখে এ ছাড়া আর কী বলব?
নাইটদের স্পিন রহস্য সমাধান করার জন্য আইপিএলের সব দলগুলিকেই তো এ বার একজন করে শার্লক হোমস রাখতে হবে দেখছি। সুনীল নারিনের মিস্ট্রি বল নিয়ে এমনিতেই ব্যতিব্যস্ত সবাই। এ বার তার ওপর জুড়ে বসল সচিত্র সেনানায়কে। তার বলও তো কম রহস্যময় নয়। ইডেনে এই দু’জনকে সামলাতেই হিমশিম খাবে সব দল। রবিবাসরীয় ইডেনে যে হালটা হল সানরাইজার্সের।
ফেব্রুয়ারিতে আইপিএল নিলামে ছ’লাখ পঁচিশ হাজার ডলার দিয়ে যখন এই ছেলেটাকে নিল কেকেআর, তখন একটু অবাক হয়েছিলাম বইকী। কিন্তু বাছাইটা যে মোটেই খারাপ নয়, তা ও নিজেই প্রমাণ করে দিল এ দিন। ক্যারম বল, দুসরা-সহ সব রকম অস্ত্রই যে ওর হাতে রয়েছে, সেটাই বুঝিয়ে দিল। যার হাতে এমন বৈচিত্র, সে তো টি-টোয়েন্টিতে যে কোনও অধিনায়কের তাস হয়ে উঠবে। |
সচিত্র সেনানায়কে
রিস্ট স্পিনার |
সুনীল নারিন
ফিঙ্গার স্পিনার |
|
|
অস্ত্র: বোলিংয়ে বৈচিত্র, বড়
অফ ব্রেকের সঙ্গে
স্ট্রেটারও আছে,
ক্যারম বল এবং দুসরাও আছে ঝুলিতে। |
অস্ত্র: বড় অফ ব্রেক, নাক্ল বল,
ক্যারম বল,
গ্রিপ দেখে আন্দাজ
করা কঠিন বল কী হবে। |
|
নারিনের বোলিংয়ের পক্ষে ইডেনের উইকেট যে একেবারে আদর্শ মঞ্চ, এ কথা তো আগেই বলেছি। সমস্যা হচ্ছিল অন্য জায়গায়। ওকে সঙ্গত করার জন্য আর একজন স্পিনারের প্রয়োজন ছিল। সচিত্র সেই স্পিনার। একবার ভাবুন, এক প্রান্ত থেকে বল করছে নারিন, অন্য প্রান্ত থেকে সচিত্র। ব্যাটসম্যানদের কেউই বুঝতে পারছে না, কোন বল কোন দিকে টার্ন করবে।
এ দিন প্রথম স্পেলে তিন ওভারে সচিত্রর মাত্র ১৫ রান দেওয়ার ঘটনাতেই ওর আধিপত্যের স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া গেল। শেষ ওভারটা তো আরও ভয়ঙ্কর। থিসারাকে ক্যাচ তোলালো (যদিও ফস্কাল)। এর পর বড় টার্নে বোল্ড করল আশিসকে। এই টার্নটা কিন্তু ওর বড় অস্ত্র। সঙ্গে অবশ্যই বৈচিত্রটাও আছে। দুসরা করতে পারে, ক্যারম বলটাও।
তবে বৈচিত্রের কথা বললে অবশ্য সচিত্রের পাটর্নারের কথা বলতেই হবে। নারিন এ ব্যাপারে অনেক এগিয়ে। ওর গ্রিপ দেখে এখনও ব্যাটসম্যানদের পক্ষে বোঝা কঠিন, বলটা কী ধরনের হবে। নারিন মূলত ফিঙ্গার স্পিনার। সচিত্র রিস্ট স্পিনার। যদিও রবিবারের স্কোরবোর্ড বলছে নারিনের চেয়ে সচিত্র কম রান দিয়েছে, তবে স্পিনার হিসাবে নারিন অনেক কমপ্লিট।
ইডেনের যে উইকেটে ম্যাচটা হল, সেটা ব্যাটসম্যানদের জন্য আদর্শ ছিল। সেখানে সচিত্র কিন্তু ক্যামেরন হোয়াইট আর পেরেরার মতো দু’জন মারকুটে ব্যাটসম্যানকে আটকে দিল। এমনকী আইপিএলের অভিষেক ম্যাচ খেলতে নেমেই প্রথম ছ’ওভারের মধ্যে বল করতে এসেছিল। কিন্তু চাপে পড়েনি।
যাই হোক, এই দুই স্পিনারকে দাঁড়িপাল্লায় না বসিয়ে একটা জিনিস বলা ভাল। এরা যখন জুটিতে বল করবে, তখন বিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের কিন্তু ঘাম ছুটে যাবে। বিশেষ করে ইডেনের পিচে।
আমি আশাবাদী, ইডেনের বাইরেও ব্যাটসম্যানদের দুঃস্বপ্ন হয়ে ওঠার ক্ষমতা আছে এই জুটির।
|
কলকাতা নাইট রাইডার্স: ১৮০-৪
(গম্ভীর ৫৩, মর্গ্যান ৪৭, কালিস ৪১) |
সানরাইজার্স হায়দরাবাদ: ১৩২-৭
(থিসারা ৩৬, হোয়াইট ৩৪, কালিস ৩-১৩)। |
|