বর্ষবরণের অনুষ্ঠান এ বার শ্রীনিকেতনেও |
বসন্ত উত্সবে মাঠ বদলের পরে এ বার বর্ষবরণের রাতের অনুষ্ঠানেরও মাঠ বদলের সিদ্ধান্ত নিলেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। এতদিন রবীন্দ্র জন্মোত্সব এবং বর্ষবরণের অনুষ্ঠান শান্তিনিকেতনের গৌরপ্রাঙ্গণে হয়ে আসছিল। আজ, সোমবার রাতের অনুষ্ঠান ‘ভানুসিংহের পদাবলী’ হবে শ্রীনিকেতনের পাকুড়তলায়। থাকছে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের অনুষ্ঠানও। যা এতদিন সঙ্গীত ভবন চত্বরেই আয়োজন করা হত। বিশ্বভারতীর একাংশের দাবি, শ্রীনিকেতন ও শান্তিনিকেতনের মধ্যে বিভেদ কমানো ছাড়াও বিশ্বভারতীর ওই অপহরিহার্য দুই অঙ্গকে সমান গুরুত্ব দেওয়ার উদ্দেশ্যে উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্ত-র নির্দেশে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিশ্বভারতীর রবীন্দ্র ভবনের ডিরেক্টর অধ্যাপিকা তপতী মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে রবীন্দ্র ভবনের উদ্যোগে এক বিশেষ চিত্রপ্রদর্শনীর আয়োজনও করা হয়েছে। প্রদর্শনী উদ্বোধন করবেন উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্ত। গীতাঞ্জলি, সং অফারিংস থেকে শুরু করে নোবেল পদক প্রাপ্তি এবং পদক প্রাপ্তির শতবর্ষের নানা মুহূতের্র্র ছবি থাকবে ওই প্রদর্শনীতে। এ ছাড়া পাণ্ডুলিপি, ছবি, এবং কোলাজ করা কিছু কাজও থাকছে রবীন্দ্র ভবনের বিচিত্রা কক্ষের ওই প্রদর্শনীতে।
|
আজ, পয়লা বৈশাখ |
• সকাল ৭টা ৪৫।
বর্ষবরণের প্রারম্ভিক অনুষ্ঠান পুরনো ঘণ্টাতলায়।
• সকাল ৯টা।
উত্তরায়ণের বিচিত্রা কক্ষে চিত্র প্রদর্শনী।
• সন্ধ্যা ৬টা ৩০।
ভানুসিংহের পদাবলী। পাকুড়তলা, শ্রীনিকেতন।
• রাত ৯টা।
শাস্ত্রীয় সঙ্গীত, পণ্ডিত শান্তনু ভট্টাচার্য। পাকুড়তলা, শ্রীনিকেতন। |
|
গ্রীষ্মের দাবদাহের সঙ্গে আশ্রমে জলকষ্টের জন্য ২৫ বৈশাখের আগেই বিশ্বভারতীতে ছুটি পড়ে যেত। ফলে পয়লা বৈশাখের দিন বর্ষবরণ ছাড়াও রবীন্দ্র জন্মোত্সবও পালন হত বিশ্বভারতীতে। কিন্তু বর্তমানে আশ্রমে জলকষ্ট অনেকটাই দূর হয়েছে। ছুটির নিয়মেও পরিবর্তন আসায় খোলা থাকছে আশ্রমও। তাই স্বাভাবিক ভাবেই এ বার পয়লা বৈশাখের দিন বর্ষবরণের অনুষ্ঠান করে আগামী ২৫ বৈশাখ রবীন্দ্র জন্মোত্সব পালন করবে বিশ্বভারতী। বিশ্বভারতী কর্মিমণ্ডলীর যুগ্ম সম্পাদক সৌগত সামন্ত বলেন, “এ বার বর্ষবরণের রাতের অনুষ্ঠান শ্রীনিকেতনের পাকুড়তলায় হবে। ‘ভানুসিংহের পদাবলী’ অবলম্বনে নৃত্যনাট্য পরিবেশনের পরে শাস্ত্রীয়সঙ্গীতের অনুষ্ঠানও ওই একই মঞ্চে আয়োজিত হবে।” কেন রাতের অনুষ্ঠানে মাঠ বদলের সিদ্ধান্ত? তাঁর যুক্তি, “দীর্ঘ দিন ধরে শান্তিনিকেতন ও শ্রীনিকেতন নিয়ে মানুষের মনে একটা বিভেদ কাজ করত। অনেকের অভিযোগ ছিল শান্তিনিকেতন আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হলেও, গুরুত্ব পাচ্ছে না শ্রীনিকেতন। অথচ দু’টি স্থানই (শান্তিনিকেতন ও শ্রীনিকেতন) প্রতিষ্ঠানের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। একে অপরের পরিপূরক।” তাঁর দাবি, “উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্ত প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব নেওয়ার পর শ্রীনিকেতনের জন্য নানা পরিকল্পনা নিয়েছেন। দুই জায়গার মধ্যে বিভেদ কমিয়ে একই গুরুত্ব প্রদানে উদ্যোগী হয়েছেন। তারই পদক্ষেপ হিসেবে সপ্তাহে একাধিক দিন শ্রীনিকেতনে থেকে দফতরের কাজকর্ম পরিচালন করা-সহ একাধিক পরিকল্পনা তিনি নিয়েছেন।”এ দিকে রবিবার সন্ধ্যায় শান্তিনিকেতনের উপাসনা মন্দিরে বর্ষশেষের অনুষ্ঠান হল। অনুষ্ঠানের আচার্য ছিলেন পাঠভবনের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সুপ্রিয় ঠাকুর। মন্ত্রপাঠ করেন অধ্যাপিকা কল্পিকা মুখোপাধ্যায়। আজ, ভোরে বৈতালিক ও সকাল সাড়ে ছ’টার উপাসনায় আচার্য থাকবেন উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্ত। মন্ত্র পাঠ করবেন অধ্যাপিকা মৌসুমী রায়। |