নিজস্ব সংবাদদাতা • লাউদোহা |
ডাকাতি করতে আসা দুষ্কৃতীদের হাতে এক বধূর শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠল ফরিদপুরের ইছাপুরে। বাধা দিতে গেলে ওই বধূর স্বামীকে শাবলের বাড়ি মেরে পালিয়ে যায় ডাকাতেরা। যাওয়ার সময়ে তাদের ফাটানো বোমার টুকরো গায়ে লেগেও জখম হন ওই যুবক। তাঁকে দুর্গাপুর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পুলিশের আশ্বাস, শীঘ্র দুষ্কৃতীদের ধরা হবে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাত ১টা নাগাদ ইছাপুরের গ্রিনপার্কে ঘটনাটি ঘটে। গৃহকর্তা পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন, দশ জনের একটি দল বাইরের গেটের তালা ভেঙে বাড়িতে ঢোকে। এর পরে ঘরের ছিটকিনি ভেঙে ভিতরে ঢুকে পড়ে। তাতে তিনি ও তাঁর স্ত্রী জেগে ওঠেন। দুষ্কৃতীরা তাঁদের মারধর করে। তাদের মধ্যে কয়েক জন লুঠপাট শুরু করে। ওই যুবকের অভিযোগ, এরই মাঝে তাঁর স্ত্রীকে দুষ্কৃতীরা টানাহ্যাঁচড়া করে। তিনি বাধা দিতে গেলে মাথায় শাবল দিয়ে মারা হয়। তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এর পরেই দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়। যাওয়ার সময়ে তিনটি বোমা ছোড়ে তারা। তার টুকরো ছিটকে আসায় হাত ও পায়ে আঘাত পান তিনি। হাতে সামান্য চোট পেয়েছেন তাঁর স্ত্রীও।
রাতে খবর ছড়িয়ে পড়তেই ওই বাড়িতে ভিড় জমান প্রতিবেশীরা। জখম যুবককে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করানো হয়। মাথায় ও পায়ে ব্যান্ডেজ নিয়ে হাসপাতালের বিছানায় বসে পেশায় গান ও আঁকার শিক্ষক ওই যুবক বলেন, “গত রাতের বিভীষিকা এখনও চোখে ভাসছে। জানি না কী ভাবে কী ঘটে গেল! খুব আতঙ্কের মধ্যে আছি।” আতঙ্কে রয়েছেন তাঁর স্ত্রীও। তিনি বলেন, “তিন-চার জন মিলে আমাকে টানাহ্যাঁচড়া করছিল। চোখের সামনে সব অন্ধকার দেখছিলাম। আমার স্বামী বাঁচাতে এলে তাঁকে মাথায় মারল।” তিনি জানান, দুষ্কৃতীরা টাকা, গয়না, মোবাইল, জামাকাপড় নিয়ে গিয়েছে।
এই ঘটনায় এলাকা জুড়ে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ডাকাতি করতে এসে শ্লীলতাহানির ঘটনা এর আগে এলাকায় হয়নি। পাড়ার পাশে একটি মাঠ থাকায় সেখান দিয়ে দুষ্কৃতীদের পালাতে সুবিধা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। অবিলম্বে ওই দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার এবং রাতে মাঠ এলাকায় পুলিশি টহলদারির দাবি জানিয়েছেন বাসিন্দারা। স্থানীয় বাসিন্দা তথা তৃণমূলের দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লক সভাপতি সুজিত মুখোপাধ্যায় খবর পেয়ে ওই বাড়িতে যান। তিনি বলেন, “এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। পুলিশ দ্রুত দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করতে পারলে বাসিন্দারা ভরসা পাবেন।”
রবিবার সকালে ঘটনাস্থলে তদন্তে যান কমিশনারেটের এডিসিপি (পূর্ব) সুনীল যাদব ও এসিপি (পূর্ব) এস সিলভা মুরুগান। ওই বাড়ির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। দুষ্কৃতীরা কোনও সূত্র ফেলে গিয়েছে কি না, সে ব্যাপারে খোঁজখবর নেন। এলাকাবাসীর সঙ্গেও তাঁরা কথা বলেন। পরে এডিসিপি (পূর্ব) সুনীলবাবু জানান, তদন্ত চলছে। দ্রুত দুষ্কৃতীদের ধরে ফেলা হবে। |