সিপিএম-তৃণমূলের মিছিল ও সভাকে ঘিরে বুধবারের সংঘর্ষের জেরে প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য ও সিপিএমের দার্জিলিং জেলার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক জীবেশ সরকারের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। তবে তাঁদের পুলিশ এখনও গ্রেফতার করেনি। তৃণমূল নেতাদের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা করা হলেও তদন্ত করে প্রাথমিক ভাবে নিশ্চিত না-হয়ে অশোকবাবু, জীবেশবাবুদের গ্রেফতার করা হবে না বলে পুলিশ সূত্রেই জানানো হয়েছে।
শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার আনন্দ কুমার বলেন, “পুলিশের পক্ষ থেকে একটি মামলা হয়েছে। আরও ৩টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ মিলেছে। তার মধ্যে দু’টিতে প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য ও জীবেশ সরকার সহ অনেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করে তদন্ত হচ্ছে। বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। এর বেশি কিছু বলা সম্ভব নয়।” |
তবে পুলিশের তরফে সরকারি কর্মীকে সরকারি কাজে বাধা ও মারধরের অভিযোগ দায়ের করা মামলায় যে ৫১ জনকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁদের একাংশের বিরুদ্ধেও খুনের চেষ্টার মামলা আনা হয়েছে।
এই দিন অবশ্য শুনানি হতে পারেনি। বৃহস্পতিবার যে পাঁচ মহিলা সিপিএম কর্মীকে অন্তর্বর্তী জামিন দেওয়া হয়েছিল, শুনানির সময়ে তাঁদের অনুপস্থিত দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারক মধুমিতা বসু। তিনি এই ব্যাপারে বামেদের আইনজীবীদের কাছ থেকে ব্যাখ্যা চান। কিন্তু স্পষ্ট কোনও ব্যাখ্যা না-মেলায় বিচারক ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এর পরেই বামেদের তরফে আইনজীবী মিলন সরকার জানান, ১০ মিনিটের মধ্যেই ওই ৫ মহিলা সিপিএম কর্মী পৌঁছে যাবেন। কিন্তু প্রায় আধ ঘন্টা গড়াতে চললেও শালিনী ডালমিয়া ছাড়া তাঁদের আর কেউ হাজির হতে পারেননি। সে সময়ে দৃশ্যতই বিব্রত দেখায় সিপিএমের আইনজীবীদের। এর পরেই বিচারক ধৃতদের আরও ৬ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। আগামী ১৮ এপ্রিল ফের সব ক’টি মামলার শুনানি এক সঙ্গে হওয়ার কথা। সে দিন ধৃত ও জামিনপ্রাপ্ত সকলকেই আদালতে হাজির করানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। |
সিপিএম এই দিনও দাবি করেছে, তৃণমূলের নেতা তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের নির্দেশেই তাঁদের নেতা-কর্মীদের মিথ্যে মামলায় জড়ানো হচ্ছে। অশোকবাবু বলেন, “আমাদের পার্টি অফিসে হামলা নিয়ে আমরা একাধিক অভিযোগ করেছি কিন্তু পুলিশ সে ব্যাপারে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না।”
যদিও আপাতত তাঁরা কোনও আন্দোলনে যাবেন না বলে জানান তিনি। তাঁর কথায়, “শিলিগুড়ির শান্তি বিঘ্নিত হয়েছে। তা ফিরিয়ে আনাই আমাদের লক্ষ্য। তাই এখন কোনও আন্দোলন নয়। আমাদের বিচার ব্যবস্থার উপরে আস্থা রয়েছে।”
প্রাক্তন পুরমন্ত্রীর অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন মন্ত্রী গৌতমবাবু। তাঁর অভিযোগ, “গোলমালের দিন কার কী ভূমিকা ছিল, পার্টি অফিসে বসে কারা কী করেছিলেন, তা শিলিগুড়ির মানুষ জানেন ও বোঝেন।”
|