প্রস্থান অবশ্যম্ভাবী
‘অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছি ছুটি কাটাতে ইস্টবেঙ্গল নিয়ে ভাবতে নয়’
লাল-হলুদের ড্রেসিংরুমে অন্যতম শীর্ষকর্তার ঘরে বসেই সাফ বলে দিলেন ট্রেভর জেমস মর্গ্যান। শুক্রবার সকালের একান্ত সাক্ষাৎকারে ইস্টবেঙ্গল কোচ এক রকম বুঝিয়ে দিলেন, তিন মরসুম পর ক্লাব ছাড়ার সিদ্ধান্ত তাঁর প্রায় চূড়ান্ত।

প্রশ্ন: পরের মরসুমেও ইস্টবেঙ্গলে কোচিং করানো নিয়ে আপনি না কি এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি? অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছেন পরিবারের সঙ্গে এই নিয়ে আলোচনা করতেই!
মর্গ্যান: একেবারেই নয়। অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছি ঠিকই। তবে ইস্টবেঙ্গল নিয়ে আলোচনা করতে নয়, পরিবারের সঙ্গে নিছক ছুটি কাটাতে। আমার ছোট নাতিকে খুব মিস করছি। ওর সঙ্গে সময় কাটাতে চাই। আর সত্যি বলতে কী, পরিবারকে সময় দেওয়ার জন্যই আমি ইস্টবেঙ্গল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

প্র: আপনার মতো পেশাদার কোচ হঠাৎ এত ‘হোমসিক’ হয়ে পড়লেন কী ভাবে? ময়দানে অনেকে কিন্তু বলছেন এটা আপনার অজুহাত!
মর্গ্যান: ‘হোম সিকনেস’ এই শব্দটাতেই আমার আপত্তি। তবে হ্যাঁ, অনেক বছর বাড়ির বাইরে আছি। অনেক নিউ ইয়ার, ক্রিসমাস কাটিয়েছি একেবারে একা। পরিবারিক কত অনুষ্ঠান হয়েছে, অংশ নিতে পারিনি। এমনকী আমার নাতি হয়েছিল যখন, আমি যেতে পারিনি। আসলে খুব একা হয়ে পড়েছি। হয়তো বয়স হয়েছে বলেই নিজেকে মাঝে মাঝে বড় একা লাগে। এটাকে অজুহাত বললে ভুল ব্যাখ্যা হবে।


শুক্রবারের সকাল। তিন বছর এ ভাবেই ক্লাবকে টানলেন লাল-হলুদ কোচ। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস

প্র: আপনার ক্লাবের একটা অংশ কিন্তু মনে করছে, আপনি দর বাড়ানোর নাটক করছেন! গত মরসুমের শেষেও আপনি পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার পর আবার কিন্তু ফিরে এসেছিলেন।

মর্গ্যান: দর বাড়ানোর নাটক করছি? রাবিশ! এ নিয়ে একটা কথাও বলব না। তবে এটুকু বলছি, গত মরসুমের শেষে ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে সামান্য ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। যেটা মিটে যাওয়ায় আমি আবার ফিরে এসেছিলাম। কিন্তু এ বার সে রকম কোনও ব্যাপার নেই। আমি পরিবার নিয়ে সময় কাটাতে চাই। তাই ক্লাব ছাড়তে চাইছি। আর আমার সঙ্গে ইস্টবেঙ্গলের বর্তমান চুক্তিতে ক্লাব ছাড়ার শর্ত রয়েছে। এমনকী ভারতের বাইরে যে কোনও ক্লাবে কোচিং করাতে পারি।

প্র: আপনি কি তবে বিদেশি কোনও ক্লাবে কোচিং করানোর ডাক পেয়েছেন?
মর্গ্যান: না, না। সে রকম ব্যাপার নেই। কোথাও কোচিংয়ের ডাক পাইনি। শুধু পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে চাই।

প্র: অবসরের ভাবনা আছে?
মর্গ্যান: ফুটবল আমার জীবন। ফুটবল থেকে দূরে সরে বেশি দিন থাকতে পারব না। তবে এখন কিছু দিন দূরে থাকতে চাই। আমার পরিবারেরও তো আমার কাছে কিছু প্রত্যাশা রয়েছে! তারপর হয়তো আবার কোচিং করাব।

প্র: ইস্টবেঙ্গলের কিছু কর্তার সঙ্গে আপনার মনোমালিন্য হয়েছিল। ইস্টবেঙ্গল ছাড়ার এটাও কী কারণ?
মর্গ্যান: একেবারেই নয়। তবে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমার সঙ্গে হয়তো কয়েক জন কর্তার দু’-এক বার মতানৈক্য হয়েছে। সচিব কল্যাণ মজুমদারের সঙ্গেও তো হয়েছে। এক জায়গায় থাকতে গেলে এ রকম ছোটখাটো মনোমালিন্য হয়ই। এটা কোনও ইস্যুই নয়।

প্র: তিন বছরে ইস্টবেঙ্গলকে অনেক সাফল্য এনে দিয়েছেন। কিন্তু আই লিগ পাননি। আফসোসটা রয়ে গেল?
মর্গ্যান: কোনও আফসোস নেই। আমার কাছে সার্বিক সাফল্যটাই আসল। এই তিন বছরে অনেক ট্রফি জিতেছি। ফেড কাপ, কলকাতা লিগ, আইএফএ শিল্ড, সুপার কাপ। বিশেষ একটা ট্রফি যদি না পাই তবে হাহুতাশ করার কিছু নেই। যদিও এখনও ইস্টবেঙ্গলের আই লিগ জেতার সুযোগ রয়েছে।

প্র: আপনার মতে ইস্টবেঙ্গলের কোন কোন ভারতীয়ের বিদেশের ক্লাবে খেলার প্রতিভা আছে?
মর্গ্যান: ফুটবল খেলার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাঠ। এখানে ট্যালেন্ট থাকলেও ভাল মাঠের অভাব রয়েছে। সেটার দিকে সবার আগে নজর দেওয়া উচিত।

প্র: বহুবার বলেছেন কলকাতা ছেড়ে গেলে এখানকার ফুটবল উন্মাদনা খুব মিস করবেন। কিন্তু ফুটবলের বাইরে কী মিস করবেন?
মর্গ্যান: (সাক্ষাৎকারের মধ্যে এই প্রথম হেসে) তন্দুরি চিকেন। আমি খুব পছন্দ করি এই ডিশটা। এ ছাড়াও চিকেন টিক্কা, আলু-ফুলকপির তরকারি, গুলাপজামুনএগুলোও সত্যি খুব মিস করব। কলকাতার মানুষদের মিস করব। আমি বিদেশি হওয়া সত্ত্বেও প্রতিটা মুহূর্তে সমর্থকরা যে ভাবে আমার পাশে থেকেছেন, ওঁদের কথা ভুলি কী করে!

পুরনো খবর:




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.