অনেকেই বলছেন, কর্নাটকে এ বার কংগ্রেসের জয়ের সম্ভাবনা জোরালো। তা সত্ত্বেও ওই রাজ্যের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে খুব বেশি থাকতে চাইছেন না সনিয়া ও রাহুল গাঁধী।
কংগ্রেস সূত্রেই বলা হচ্ছে, হাতে গোনা কয়েক দিন প্রচারে যাবেন মা-ছেলে। সনিয়া কর্নাটকে যাবেন দু’দিনের জন্য, আর রাহুল সফর করবেন সাকুল্যে তিন দিন। কিন্তু কেন? জবাবে কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতা বলেন, লোকসভা ভোটের এক বছরও বাকি নেই। তার আগে সনিয়া-রাহুলের আগ্রাসী প্রচার সত্ত্বেও যদি কর্নাটকে ভোটের ফল আশানুরূপ না হয়, তখন ব্যর্থতার দায় চাপবে তাঁদের উপরেই। বিশেষ করে রাহুলের ঘাড়ে ব্যর্থতার দায় চাপিয়ে কংগ্রেসের মনোবল ভাঙতে প্রচারে নামতে পারেন বিরোধীরা। তাই এই পরামর্শ দলের শীর্ষ নেতাদের।
কর্নাটকে গত পাঁচ বছরে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। দুর্নীতির দায়ে মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়তে হয় বি এস ইয়েদুরাপ্পাকে। তার পর সদানন্দ গৌড়া মুখ্যমন্ত্রী হলেও ইয়েদুরাপ্পা তাঁকে বেশিদিন টিকতে দেননি। তখন সদানন্দকে সরিয়ে জগদীশ সেট্টারকে মুখ্যমন্ত্রী করে বিজেপি। কিন্তু ইয়েদুরাপ্পা শেষমেষ দল ভেঙে কর্নাটক জনতা পক্ষ নামে পৃথক দল গঠন করেন। বিজেপির এই দশা দেখে এখন থেকেই অনেকে বলছেন, কর্নাটকে কংগ্রেসের জয়ের সম্ভাবনা আছে।
কংগ্রেস নেতৃত্বও এ ব্যাপারে আশাবাদী। কিন্তু দলের একাধিক শীর্ষ নেতার মতে, কর্নাটকে বিজেপির বিরুদ্ধে নেতিবাচক হাওয়া এবং বিজেপি-ইয়েদুরাপ্পা ভোট ভাগাভাগির সম্ভাবনাই তাঁদের এক মাত্র ভরসা।
মুশকিল হল, কর্নাটকে কংগ্রেসের এমন কেউ নেই, যিনি নিজের গুণে বিপুল ভোট টানতে পারেন। এ বার ভোট হবে চার-মুখী। বিজেপি, কংগ্রেস ছাড়াও থাকবে ইয়েদুরাপ্পার দল এবং দেবগৌড়ার জনতা দল সেকুলার। এই চতুর্মুখ লড়াইয়ে কংগ্রেস যে জিতবেই, এমন জোর গলায় বলা যায় না। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যার থেকে কিছু কম আসন পেল কংগ্রেসের বিরোধী আসনে বসার সম্ভাবনাও থাকছে। আর যা-ই হোক, ইয়েদুরাপ্পার সঙ্গে হাত মেলাবে না কংগ্রেস। কারণ, ইয়েদুরাপ্পার গায়ে যে দুর্নীতির দাগ লেগেছে, তাতে তাঁর হাত ধরলে কংগ্রেসকে সমালোচনার মুখে পড়তে হবে। মূলত এই সব ভেবেই রাহুলকে খুব বেশি দিন প্রচারে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
|