|
|
|
|
জাল নোট |
মালদহের দু’জনের বিরুদ্ধে জম্মু আদালতে চার্জশিট |
দিবাকর রায় • কলকাতা |
জাল নোট পাচারে জড়িত থাকার অভিযোগে রাজ্যের মালদহ জেলার দুই বাসিন্দার বিরুদ্ধে বুধবার জম্মুর আদালতে চার্জশিট জমা দিল জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ)। এ ছাড়া এক বাংলাদেশি নাগরিকের বিরুদ্ধেও চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে। এনআইএ-র কর্তা বলেন, “খুব ভাল মানের জাল নোট দেশে ঢোকানো হয়েছিল। বাংলাদেশ সীমান্ত হয়ে মালদহ দিয়ে তা দেশে ঢোকে। মালদহ থেকে সড়কপথে সাহেবগঞ্জ, কাটিহার, পূর্ণিয়া হয়ে দিল্লি পৌঁছে দেওয়া হত। কমিশনের ভিত্তিতে স্থানীয় ক্যারিয়ারদের নিয়োগ করে তাঁদের মারফত দিল্লিতে পৌঁছাত। পরে তা জম্মুতে পৌঁছে দেওয়া হত। গোটা চক্রটাই আমাদের হাতে ধরা পড়েছে।” গোয়েন্দাকর্তাদের মতে, যে ধরনের জাল নোট ধরা পড়েছে তার সঙ্গে আসল নোটের ফারাক করা খুবই কঠিন। ভিন দেশের মদত ছাড়া সম্ভব নয়। ভিন দেশের গোয়েন্দা সংস্থা মদত দিয়েছে বলেই মনে হচ্ছে।
তদন্তকারী সংস্থার সূত্রে জানা গিয়েছে, হিজবুল মুজাহিদিনের দুই সদস্য কাশ্মীরের বাসিন্দা মুবারক আহমেদ ভাট, সাফাকত মহিউদ্দিন মালদহের বাসিন্দা বাদল শেখের সঙ্গে যোগাযোগ করে। সীমান্ত এলাকায় গরু পাচারে জড়িত ছিল বাদল। স্বাভাবিক ভাবেই নিয়মিত সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে যেত বাদল। গোয়েন্দাদের দাবি, বাদলকে বাংলাদেশের বগুড়ার বাসিন্দা সফিকুল সেখের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়। বাংলাদেশি নাগরিক সফিকুল শেখের সঙ্গে দেখা করে বাদল শেখ। সফিকুল বাদলকে জাল নোটের ব্যবসা শুরু করতে উৎসাহ দেয়। সীমান্তে জাল নোট পৌঁছে দেওয়ার বিষয়েও সফিকুল সাহায্য করে। সেই জাল নোট নিয়ে বাদল স্থানীয় বাসিন্দা সাহিদ শেখ, জাকির হোসেন, সেলিম খানদের নিয়ে নিয়মিত দিল্লি, জম্মু-কাশ্মীর, হায়দরাবাদ, চেন্নাই, মহারাষ্ট্র-সহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠাতে শুরু করে।
এনআইএ-র গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, হিজবুল মুজাহিদিনের জঙ্গিদের দেশের ভিতরে নাশকতা চালানোর জন্য তহবিল সংগ্রহের প্রয়োজন ছিল। সেই কাজের জন্য জাল নোট ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পানা করেছিল হিজবুল মুজাহিদিন। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই মালদহের বাসিন্দা বাদল শেখকে ব্যবহার করা শুরু করে এই জঙ্গি সংগঠন। ২০১১ সালের জুলাই মাসে এনআইএ-র গোয়েন্দারা জম্মু থেকে বেশ কিছু জাল নোট উদ্ধার করেন। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে মালদহ জেলার বাসিন্দা সাহিদ শেখ, জাকির হোসেন এবং কাশ্মীরের বাসিন্দা জঙ্গি সংগঠনের সক্রিয় সদস্য মুবারক আহমেদ ভাট, সাফাকত মহিউদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের জেরা করেই বাদল শেখ, সেলিম খান এবং কাশ্মীরের অনন্তনাগের বাসিন্দা ফৈয়াজ আহমেদের নাম জানতে পারে এনআইএ। রীতিমতো টোপ দিয়ে তাদেরও গ্রেফতার করা হয়।
তবে জাল নোট পাচারে জড়িত বাংলাদেশের বাসিন্দা সফিকুলকে গ্রেফতার করতে পারেনি এনআইএ। জম্মুর বিশেষ আদালত তার বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। বিদেশ মন্ত্রককে বিষয়টি জানানো হবে বলে এনআইএ সূত্রের খবর। |
|
|
|
|
|