তিন মাস ধরে বৃষ্টির দেখা নেই। তার উপরে গত দুই সপ্তাহের চড়া রোদে তাপমাত্রা বাড়তে থাকায় উত্তর দিনাজপুর জেলার হেমতাবাদ ব্লকে লঙ্কা চাষ ক্ষতির মুখে পড়েছে। বৃষ্টি না হলে এ বছর লঙ্কাচাষে বড়সড় ক্ষতির আশঙ্কা করছেন ব্লক কৃষি দফতরের আধিকারিকেরা। ব্লক জুড়ে জলস্তর নেমে যাওয়ায় জমিতে পাম্পসেট বসিয়েও সেচ দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত জল পাচ্ছেন না লঙ্কাচাষিরা। হেমতাবাদ ব্লক কৃষি আধিকারিক শ্রীকান্ত সিংহ বলেন,“বৃষ্টি না হওয়ায় জলের অভাব ও চড়া রোদে তাপমাত্রা বাড়তে থাকায় ব্লক জুড়ে লঙ্কাচাষ মারাত্মক ক্ষতির মুখে। এ রকম চলতে থাকলে গোটা ব্লকে ৬০ শতাংশ লঙ্কার উৎপাদন কম হওয়ার আশঙ্কা আছে।”
কৃষি দফতর সূত্রে খবর, হেমতাবাদ ব্লকে প্রতি বছর ৮০ হেক্টর জমিতে লঙ্কাচাষ হয়। লঙ্কার উৎপাদন হয় প্রায় ১৫ হাজার কুইন্টাল। প্রায় তিন হাজার চাষি এর উপর নির্ভরশীল। গরমের মরসুমে জেলার নানা পাইকারি বাজারে মূলত হেমতাবাদ ব্লক থেকে লঙ্কার সরবরাহ হয়। জানুয়ারি মাসে চাষিরা জমিতে লঙ্কার চারা লাগান। মে মাস জুড়ে গাছ থেকে লঙ্কা তোলা হয়। ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস লঙ্কা চাষের পক্ষে অনুকূল। এছাড়াও জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত অন্তত ৩৫ মিমি বৃষ্টিপাতের দরকার হয়। শ্রীকান্তবাবু জানান, গত তিন মাস হেমতাবাদ ব্লকে ছিটেফোঁটাও বৃষ্টিপাত হয়নি। দুসপ্তাহ ধরে তাপমাত্রা ৩৬-৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ঘোরাফেরা করছে। ব্লক জুড়ে জলস্তর নেমে যাওয়ায় চাষিরা পর্যাপ্ত জল পাচ্ছেন না। ব্লকের ৮টি সেচ নলকূপের মধ্যে ৩টি বিকল। লঙ্কাজমির মাটির রস শুকিয়ে গিয়েছে। ৬০ শতাংশ জমির লঙ্কাগাছে এথে পোকার আক্রমণ দেখা গিয়েছে। লঙ্কাগাছের পাতা, ফুল ও লঙ্কা কুকড়ে হলুদ হয়ে ঝরে পড়তে শুরু করেছে। প্রায় ২০ শতাংশ জমির লঙ্কা গাছ মরে গিয়েছে। কীটনাশক ব্যবহার করেও চাষিরা কিছু করতে পারছেন না। কয়েকদিনে বৃষ্টিপাত শুরু না হলে ব্লকে ৬ হাজার কুইন্টালের বেশি লঙ্কার উৎপাদন সম্ভব নয়।
হেমতাবাদে বালুখাঁড়া ও ধোয়ারই এলাকার বাসিন্দা দুই লঙ্কাচাষি আবদুল মজিদ ও ভজা চৌহান এ বছর দুই বিঘা করে জমিতে লঙ্কাচাষ করেছেন। তাঁরা জানান, বিঘা প্রতি খরচ হয় ১৫ হাজার টাকা। গরম এবং জলের অভাবে গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। পাম্পসেটে জল উঠছে না। চাষের খরচ উঠবে কী না সন্দেহ। |