প্রেমিকার সঙ্গে সম্পর্কে কেরোসিন ঢেলে স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগে জেলবন্দি ছিলেন এক যুবক। খুনের মামলায় জেলেই ছিলেন প্রেমিকা। কিন্তু প্রেমিকাও আর কোনও সম্পর্ক রাখবে না বলতেই ভেঙে পড়েছিলেন মিলন ঘোষ নামের ওই খুনের মামলার অভিযুক্ত। প্রেমিকার প্রত্যাখ্যান সহ্য করতে না পেরে জেলের মধ্যেই বাথরুম পরিস্কার করার ‘অ্যাসিড’ খেয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করে মিলন। বুধবার রাতে মালদহ জেলা সংশোধানাগারে ঘটনাটি ঘটে। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থা মালদহ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় কলকাতায় পাঠানো হয়েছে।
হবিবপুর থানার আইহো এলাকার পেশায় দিনমজুর মিলন দুই বছর আগে এলাকারই মেয়ে তিথি ঘোষকে বিয়ে করেন। বিয়ের একবছর পরে প্রতিবেশী পল্লবী মণ্ডলের সঙ্গে মিলনের সম্পর্ক তৈরি হয়। বিষয়টি জানার পর স্ত্রী তিথি’র সঙ্গে মিলনের গোলমালের সূত্রপাত। চলতি বছরের ১২ মার্চ সকাল ১০টা নাগাদ মিলন স্ত্রীকে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে খুন করে বলে অভিযোগ। মিলন এবং পল্লবীকে পুলিশ গ্রেফতার করে।
জেল সূত্রের খবর, জেলের মধ্যেই মিলন এবং পল্লবী ’র দেখা সাক্ষাৎ হত। সুযোগ পেলে মাঝেমধ্যে তারা জেলের মধ্যেই বসে গল্প করত। কিন্তু ১৫ দিন আগে পল্লবী মিলনকে এড়িয়ে চলতে শুরু করে। প্রেমিকার সঙ্গে কথা বলতে না পেরে মিলন ক্ষেপে যায়। একাধিকবার চিঠি পাঠানোর পরেও প্রেমিকা জেলের মধ্যে দেখা করতে না আসায় মিলন নানাভাবে পল্লবীকে জেলের মধ্যে, আদালতে হাজিরা দেওয়ার পথে গাড়ির মধ্যে উত্যক্ত করতে থাকে বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছায় প্রেমিকের হাত থেকে বাঁচতে পল্লবী জেল সুপারের কাছে মিলনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। তার পরে বুধবার লিখিত ভাবে পল্লবী জেল সুপারের কাছে অভিযোগ জানান।
এর পরে জেল কর্মী, কারারক্ষীদের নজর এড়িয়ে জেলের বাথরুম পরিস্কার করার অ্যাসিড খেয়ে ফেলে মিলন। তার গোঙনির শব্দ পেয়ে অন্য বন্দিরা চিৎকার শুরু করে জেল কর্মীরা বিষয়টি টের পান। তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। জেল সুপার দেবাশিসষ চক্রবর্তী বলেন, “মিলন ঘোষ প্রেমিকা পল্লবী’র সঙ্গে বহুবার জেলের মধ্যেই দেখা করেছে। জেল রক্ষীদের পাহারায় দুইজন একান্তে কথা বলেছে। সম্প্রতি পল্লবী মিলনের সঙ্গে দেখা করতে রাজি হচ্ছিলেন না। একপক্ষ দেখা করতে রাজি না হলে কখনই দুইজনকে কথা বলানো আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। প্রেমিকার প্রত্যাখান সহ্য করতে না পেরে সম্ভবত সে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে।”
জেল সূত্রের খবর, হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় মিলন অন্য কয়েকজন বন্দিদের বলেছে যার জন্য স্ত্রীকে মারলাম। সেই বলছে খুনি। তাই বেঁচে কী লাভ। আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনা জানার পর পল্লবী কারও সঙ্গে আর কথা বলেননি। বেশিরভাগ সময়ই তিনি সেলের মধ্যে বসে থাকছেন।
|