ওয়ার্ডে ঠাঁই না পেয়ে নপুংসকের মৃত্যু, নির্দেশ তদন্তের
হিলা না পুরুষ কোন ওয়ার্ডে রাখা হবে নপুংসককে? এ নিয়ে সংশয়ের জেরে ঘণ্টা তিনেক কার্যত বিনা চিকিৎসায় ফেলে রাখায় মৃত্যু হয়েছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা গুরুতর জখম এক নপুংসকের। বর্ধমানের এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষ থেকে এই অভিযোগ পেয়ে বৃহস্পতিবার তদন্তের নির্দেশ দিল রাজ্য মানবাধিকার কমিশন।
মৃতের নাম স্যামু দাস। বয়স বছর ষোলো। বাড়ি হুগলির তারকেশ্বরে চাঁপাডাঙায়। কেন তার মৃত্যু হল, বর্ধমানের জেলাশাসককে তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান, বিচারপতি অশোককুমার গঙ্গোপাধ্যায় ও দুই সদস্য, বিচারপতি নারায়ণচন্দ্র শীল এবং সৌরীন রায়।
রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের রেজিস্ট্রার, বিচারক রবীন্দ্রনাথ সামন্ত জানান, তিন সপ্তাহের মধ্যে তদন্তের রিপোর্ট জমা দিতে হবে। বর্ধমানের জেলাশাসক ওঙ্কার সিংহ মিনা অবশ্য বলেন, “এই ধরনের কোনও তদন্তের নির্দেশ মানবাধিকার কমিশন দিয়েছে কি না, তা আমার জানা নেই। নির্দেশ পেলে অবশ্যই তদন্ত হবে।”
বর্ধমান মেডিক্যালের সুপার অসিতবরণ সামন্ত অসবশ্য অভিযোগ মানতে চাননি। বরং নপুংসক রোগীকে মহিলা বা পুরুষ ওয়ার্ডে রাখা নিয়ে সংশয় কেন হবে, তিনি উল্টে সেই প্রশ্নই তুলেছেন। সুপারের মতে, “নপুংসকদের মহিলা ওয়ার্ডে রাখাই সরকারি নিয়ম। এই নিয়ম দীর্ঘদিনের। হাসপাতালের চিকিৎসক থেকে কর্মী, সকলেই তা জানেন।” অথচ রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী বলছেন, “নপুংসক রোগীকে পুরুষদের মেডিসিন বা সার্জারি বিভাগে ভর্তি করা হয়। এক মাত্র স্ত্রীরোগ সংক্রান্ত সমস্যা হলে মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়।”
ঘটনাটি ১৯ মার্চ রাতের। বর্ধমান স্টেশন পড়ে থাকা গুরুতর জখম স্যামু দাসকে তুলে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গিয়েছিল রেলপুলিশ। তার স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটির অভিযোগ, স্যামু নপুংসক হওয়ায় প্রায় তিন ঘণ্টা তাকে কোনও ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়নি। কারণ জানতে চাইলে হাসপাতালের তরফে বলা হয়, স্যামুকে মহিলা বা পুরুষ কোন বিভাগে ভর্তি করা হবে, সে ব্যাপারে চিকিৎসকেরা তৎক্ষণাৎ কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি। লিঙ্গ নির্ধারণের জন্য সময় নিয়েছেন।
পরের দিন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটি জিআরপি এবং বর্ধমান মেডিক্যালের সুপারের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তাদের দাবি, কেন লিঙ্গ নির্ধারণে তিন ঘণ্টা সময় লাগল তা জানতে চাইলে সুপার স্বীকার করেন, এই ভুল হওয়া উচিত ছিল না। নপুংসকদের জন্য কোনও বিশেষ ওয়ার্ড না থাকলেও আলাদা ব্যবস্থা করে তাঁদের চিকিৎসা সম্ভব বলেও তিনি জানান। হাসপাতালের সুপার অসিতবাবু অবশ্য এ দিন দাবি করেন, “হাসপাতালে প্রথমে সকলেই জরুরি বিভাগে আসেন। সেখানে ভর্তি হওয়া মাত্র সমস্ত ধরনের চিকিৎসা শুরু হয়ে যায়। তাই চিকিৎসা না হওয়ায় ওই ছেলেটির মৃত্যু হয়েছে, এমনটা আমি মনে করি না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.