নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
ঝড়ে শহরের দু’টি বহু তলের উপর থেকে অতিকায় হোর্ডিংয়ের পরিকাঠামো ভেঙে পড়ায় আতঙ্ক দেখা দিয়েছে বাসিন্দাদের মধ্যে। উপযুক্ত পরিকাঠামো ছাড়াই হোর্ডিং দু’টি লাগানো হয়েছিল বলে অভিযোগ। অতিকায় হোর্ডিং দুটির একটি লাগানোছিল রামকৃষ্ণ সমিতির মার্কেট কমপ্লেক্সের উপর। অপরটি বিধানরোডে ডুয়ার্স বাস স্ট্যান্ড থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে একটি চারতলা ভবনের ছাদে। পুরসভার তরফে পরিকাঠামো না দেখেই বিপজ্জনকভাবে হোর্ডিং লাগানোর অনুমতি দেওয়া নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। পরিকাঠামো ঠিক রয়েছে কি না যাদের তা দেখা উচিত পুরসভার সেই বাস্তুকাররাও এ ব্যাপারে মুখ খুলতে চাননি।
পুরসভার ট্রেড লাইসেন্স বিভাগের মেয়র পারিষদ দেবশঙ্কর সাহা বলেন, “অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” বুধবার রাতে শিলিগুড়ির পানিট্যাঙ্কি মোড়ের পুরসভার কিরণচন্দ্র ভবনের উপর ভেঙে পড়া হোর্ডিং-টি দেখতে যান পূর্ত বিভাগের মেয়র পারিষদ সুজয় ঘটক, এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার পরিতোষ মির্ধা-সহ অন্যান্য আধিকারিকেরা। |
ভেঙেছে হোর্ডিং।— নিজস্ব চিত্র। |
প্রায় ১০ টনের ওজনের লোহার পরিকাঠামো ভেঙে কিরণচন্দ্র ভবনের ছাদ, জলের ট্যাঙ্কি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অম্বিকা অ্যাড এজেন্সির তরফে লাগোয়া রামকৃষ্ণ সমিতির বাণিজ্যিক ভবনের উপর বসানো ওই হোর্ডিংটি বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে বলে ওয়ার্ডের কাউন্সিলর গৌরী দত্ত অন্তত ১ বছর আগে পুরসভার ট্রেড লাইসেন্স বিভাগকে জানিয়েছিলেন। তার পরেও সেটি খুলতে কর্তৃপক্ষ তৎপর হননি কেউ। যে সংস্থার তরফে হোর্ডিংটি বসানো হয়েছে তারা পুরসভায় এক বছর ধরে ফি দিচ্ছেন না বলেও অভিযোগ। লাগোয়া কিরণচন্দ্র ভবনে বিয়েবাড়ি থেকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ভাড়া দেওয়া হয়। ঝড়ে রাত ১০টা নাগাদ যখন অতিকায় হোর্ডিংটি ভেঙে পড়ে যে সময় কোনও অনুষ্ঠান থাকলে বিপজ্জনক হতে পারত বলে অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
অপর হোর্ডিংটি বিধানরোডের বহু তলে লাগিয়েছে এমএস এন্টারপ্রাইজ। নিয়ম মতো কংক্রিকেটের স্তম্ভের মধ্যে হোর্ডিংয়ের লোহারস্তম্ভ বসানো উচিত। তা না করে উভয় ক্ষেত্রেই ইটের গাঁথনি করে তা বসানো হয়েছিল। ঝড়ে পুরো পরিকাঠামো দুটিই ভেঙে পড়েছে। এমএস এন্টারপ্রাইজের মালিক প্রদীপ্ত সরকারের বিরুদ্ধে আগে অবৈধ ভাবে মহানন্দা সেতু লাগোয়া মোড়ে ফুটপাথ খুঁড়ে লোহাস্তম্ভ পুঁতে হোর্ডিং বসানোর চেষ্টার অভিযোগ ওঠে। পুরসভার নির্দেশে পরে তা সরিয়ে দেওয়া হয়। প্রদীপ্তবাবু বলেন, “পুরসভার অনুমতি নিয়েই হোর্ডিং বসানো হয়েছে।” নিয়ম মেনে পরিকাঠামো তৈরি হয়নি কেন তা নিয়ে প্রদীপ্তবাবু অবশ্য সদুত্তর দেননি। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, অম্বিকা অ্যাড এজেন্সির হোর্ডিংয়ের কর্ণাধার অঙ্কুর মৌলিক। তার হয়ে হোর্ডিং দেখভালের কাজে যুক্ত অনুপ মজুমদার বলেন, “অনুমতি নিয়েই হোর্ডিং বসানো হয়েছিল।” |