বাড়ছে শ্রমদিবস, মেয়েদের যোগদান তবু বাড়ছে না
গের চেয়ে বেশি কর্মদিবস তৈরি করেছে পশ্চিমবঙ্গ। কিন্তু একশো দিনের প্রকল্পে মেয়েদের অংশগ্রহণ বাড়েনি। এ বিষয়ে সারা দেশের নিরিখে বেশ পিছিয়ে পশ্চিমবঙ্গ। চলতি আর্থিক বছরে যত শ্রমিক কাজ করেছেন একশো দিনের প্রকল্পে, তাঁদের মাত্র এক-তৃতীয়াংশ মহিলা। গত বছরের ছবিটাও এমনই ছিল। মেয়েদের যোগদানের প্রশ্নে কেরল, তামিলনাড়ু তো বটেই, ছত্তিশগঢ়, মধ্যপ্রদেশের মতো রাজ্যেরও পিছনে পড়ে গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। কেন এমন হচ্ছে, তা নিয়ে আলোচনা করতে বুধবার পঞ্চায়েত দফতর একটি আলোচনা সভার আয়োজন করেছিল রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের জোড়াসাঁকো ক্যাম্পাসে। উপস্থিত ছিলেন পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়-সহ দফতরের শীর্ষ কর্তারা।
রাজ্যের এনআরইজিএ কমিশনার দিব্যেন্দু সরকার বলেন, মোট কর্মদিবস সৃষ্টির ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ সারা দেশের মধ্যে চার নম্বর স্থানে উঠে এসেছে, কিন্তু মেয়েদের অংশগ্রহণের নিরিখে রয়ে গিয়েছে আট নম্বরে। জেলাওয়াড়ি হিসাবে দেখা যাচ্ছে, মহিলাদের যোগদানে শীর্ষে রয়েছে শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ, যেখানে ৫৯ শতাংশ শ্রমিক ছিলেন মহিলা। দ্বিতীয় স্থানে পূর্ব মেদিনীপুর (৪৯ শতাংশ)। অথচ যেখানে দারিদ্র তীব্র, মহিলাদের সামাজিক নিরাপত্তাও অতি সামান্য, সেই মুর্শিদাবাদ জেলায় মেয়ে শ্রমিক মাত্র ১৬ শতাংশ।
পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর সূত্রের খবর, গত দু’তিন বছর ধরে মহিলাদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর চেষ্টায় খুব একটা কাজ হয়নি। প্রথম সারিতে থাকা দু’একটি জেলা গত আর্থিক বছরের তুলনায় গড়ে ৫ শতাংশ হারে মহিলাদের অংশগ্রহণ বাড়াতে পারলেও, অধিকাংশ জেলায় বৃদ্ধির হার ২ শতাংশ। মুর্শিদাবাদ, কোচবিহার, বাঁকুড়া, বর্ধমান, জিটিএ, পূর্ব মেদিনীপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর, পুরুলিয়া এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় মহিলাদের অংশগ্রহণ কমেছে।পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের কর্তারা মনে করছেন, কেরলের মতো রাজ্যে বিকল্প কাজে মহিলাদের সুযোগ মাত্র ১৬ শতাংশ। তার ফলেই ১০০ দিনের প্রকল্পে তাঁরা বেশি করে অংশগ্রহণ করছেন। পশ্চিমবঙ্গে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি অনেক বেশি মহিলাকে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিয়েছে। ফলে তাঁরা ১০০ দিনের প্রকল্পে আসছেন না। তবে যে কেরলকে ‘মডেল’ করছেন পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের কর্তারা, সেখানকার অভিজ্ঞতাই বলছে, মেয়েদের অংশগ্রহণে অনেক পরিকাঠামোগত বাধা থেকে যাচ্ছে। টাটা ইন্সটিটিউট অফ স্যোসাল সায়েন্সের অধ্যাপক এ বি জর্জ বলেন, শিশুদের দেখাশোনার ‘ক্রেশ’ না থাকা কেরলের মেয়ের কাছে একটি প্রধান সমস্যা। বাড়ির থেকে পাঁচ কিলোমিটারের বেশি দূরে কাজ করার সুযোগ পেলেও মেয়েরা ছেড়ে দেন।
১০০ দিনের প্রকল্পে মেয়েদের যোগদান
এই সমস্যা এ রাজ্যেও রয়েছে। ক্রেশের মতো, শৌচাগারের অভাবেও সমস্যায় পড়েন বহু মহিলা শ্রমিক, জানান শ্রমিক নেতারা। অর্থনীতিবিদ অচিন চক্রবর্তী বলেন, “কেরলে পুরুষরা অধিকাংশই কাজ করেন বাইরে, নইলে অকৃষি কাজ করেন। তাই মেয়েরা বেশি আসেন ১০০ দিনের কাজে। কিন্তু এ রাজ্যে সাধারণ ভাবে কাজের সুযোগই কম। তাই সম্ভবত একশো দিনের কাজ পাওয়ার সুযোগ থাকলে পুরুষরাই আসেন বেশি। একই কারণে তুলনায় উন্নত রাজ্যগুলিতে দেখা যায়, মহিলারাই প্রাথমিক শিক্ষকের কাজ করছেন বেশি। এ রাজ্যে কিন্তু পুরুষরাই প্রাথমিক শিক্ষকতা করেন বেশি।” রাজ্যের সামগ্রিক অর্থনৈতিক চিত্রের পরিপ্রেক্ষিতেই একশো দিনের কাজে মহিলাদের যোগদানের বিষয়টি দেখতে হবে, বলেন তিনি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.