ধুলিয়ানে নাম বিভ্রাটে ধৃত যুবক
নাম বিভ্রাটে জেল খাটতে হচ্ছে এক যুবককে। চন্দন রায় নামে সেই যুবকের অভিযোগ, পুলিশ তাঁর বাবার নামেও ভুল করেছে। সে কারণেই কোনও দোষ না করা সত্ত্বেও তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৮৮ সালের ১৩ জুলাই সামসেরগঞ্জ থানায় ধুলিয়ান লাগোয়া কাঞ্চনতলা গ্রামের চন্দন রায় নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে এফআইআর রুজু করেন ঝাড়খন্ডের (তৎকালীন বিহার) বারহারোয়া থানার বিন্দুপাড়া গ্রামের কালু বসাক। কালুবাবু তখন ধুলিয়ান শহরের একটি মিষ্টির দোকানে কাজ করতেন। কালুবাবুর অভিযোগের ভিত্তিতে তখন কাঞ্জনতলার শচীন্দ্রনাথ রায়ের ছেলে চন্দনকে পুলিশ ভারতীয় ফৌজদারী দন্ডবিধির ৫০৬ ও ৩৭৭ ধারায় যৌন নির্যাতনের দায়ে গ্রেফতার করে। পরে চন্দন জামিনে ছাড়া পান। কিন্তু তারপর থেকে আর কখনও আদালতে হাজির হননি।
চন্দন রায়ের বিরুদ্ধে তাই গ্রেফতারি পরওয়ানা জারি করে জঙ্গিপুর আদালত। সেই পরওয়ানা বলেই সোমবার ধুলিয়ান শহরের চন্দন রায় নামে এক যুবকে গ্রেফতার করে পুলিশ। চন্দনবাবু বলেন, “আমার আসল নাম অজয় রায়। কিন্তু এলাকার সকলেই আমাকে চন্দন রায় নামেই চেনেন। স্কুল সার্টিফিকেট, ভোটার তালিকা অনুযায়ী আমার জন্ম ১৯৮৮ সালের জুলাই মাসে। অর্থাৎ যখন এই মামলাটি রুজু হয় তখন আমার বয়স বড় জোর সাত দিন। সাত দিন বয়সী কোনও ছেলে কোনও মামলায় অভিযুক্ত হয় কী করে?’’ চন্দন বলেন, “পুলিশ আমাকে গ্রেফতার করার পরে আসল অভিযুক্ত চন্দন রায়ের খোঁজে পাশের গ্রাম কাঞ্চনতলায় যান আমার মা। সেখানে জানা যায় অভিযুক্ত সেই চন্দন রায় কয়েক বছর আগে আত্মহত্যা করেছেন।” চন্দনবাবুর মা মীরাদেবী বলেন, “ভুল আরও হয়েছে। আসল অভিযুক্ত চন্দন রায়ের বাবার নাম শচীন্দ্রনাথ রায়। আমার ছেলে চন্দনের বাবা দ্বিজেন্দ্রনাথ রায়। গ্রেফতারের দিনই পুলিশকে এই কথা জানিয়েওছিলাম। কিন্তু পুলিশ সে কথা কানেই তোলেনি।”
তাঁকে বিনা দোষে জেলে আটকে রাখা হয়েছে বলে চন্দনবাবু নিজেই বুধবার জঙ্গিপুর আদালতের এসিজেএমের কাছে পুলিশের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, সামসেরগঞ্জ থানায় পুলিশকে সমস্ত ঘটনা জানানো সত্ত্বেও পুলিশ তাতে কর্ণপাত করেনি। আর সেই কারণেই তাঁকে জেলে এই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। জঙ্গিপুরের এসিজেএম সঞ্জীব দারুকা সামসেরগঞ্জ থানার ওসিকে এই ব্যাপারে বিস্তারিত রিপোর্ট সহ শুক্রবার আদালতে হাজির থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।
জঙ্গিপুর মহকুমা আদালতের সরকারি আইনজীবী সোমনাথ চৌধুরী বলেন, “ভুল হতেই পারে। কিন্তু ভুলের তো একটা সীমা রয়েছে। যে মামলা দায়ের হয়েছে ১৯৮৮ সালে, সেই মামলায় কী করে অভিযুক্ত হতে পারে ১৯৮৮ সালেই জন্ম নেওয়া এক যুবক? তা ছাড়া বাবার নাম বদলে দিয়ে ভুলকে ঠিক বলে চালানোর চেষ্টা করা ঠিক হয়নি।
পুলিশের তাদের ভুলে বিনা দোষে জেলই বা খাটবে কেন এক নির্দোষ যুবক? এই ভুল ক্ষমার অযোগ্য।” আইনজীবী মতিউর রহমান বলেন, ‘‘পুলিশ এক্ষেত্রে আসল অভিযুক্ত চন্দন রায়ের বাবার নাম শচীন্দ্রনাথ রায়ের পাশে ‘ওরফে দ্বিজেন্দ্রনাথ রায়’ লিখে আদালতে পাঠিয়েছে এই চন্দন রায়কে।”
মুর্শিদাবাদের জেলা পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “ভুল হলে তদন্তকারী অফিসারদের তা শুধরে নেওয়া উচিত ছিল কোনও মতেই কাউকে হয়রান করা পুলিশের কাজ নয় বিষয়টি যখন আদালতে উঠেছে তখন বিচারক যা নির্দেশ দেবেন সেই মতোই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.