পিএসজি-১ : বার্সেলোনা-১
(দু’পর্ব মিলিয়ে ৩-৩, অ্যাওয়ে গোলের সুবাদে জয়ী বার্সা)
বায়ার্ন মিউনিখ-২ : জুভেন্তাস-০
(দু’পর্ব মিলিয়ে বায়ার্ন ৪-০) |
ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স লিগ এখন স্পেন বনাম জার্মানি দাঁড়িয়েছে। শুক্রবারই সুইৎজারল্যান্ডের নিয়ঁ-তে উয়েফার সদর দফতরে সেমিফাইনাল ড্র। প্রাক্তন রিয়াল মাদ্রিদ তারকা রুদ ফান নিস্তেলরুইয়ের হাতে লটারিতে রিয়াল-বার্সেলোনা আর বায়ার্ন-বরুসিয়া লাইনআপ হতেও পারে। কিন্তু আমি চাইব দুটো সেমিফাইনালে বার্সা-বরুসিয়া আর রিয়াল-বায়ার্ন হোক। তা হলে আরও বৈচিত্রময় লড়াই দেখা যাবে। ফাইনাল ধরে চূড়ান্ত রাউন্ডে পরপর তিনটে ম্যাচে স্প্যানিশ বনাম জার্মান ক্লাবের লড়াইও চেটেপুটে উপভোগ করার সুযোগ থাকবে।
কিন্তু কতটা ধুন্ধুমার লড়াই দেখতে পাব তা নিয়ে আমার কিন্তু সন্দেহ আছে। এ বারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ভুরিভুরি রেফারির ভুল সিদ্ধান্তের মতো বেশ কয়েকটা রোমাঞ্চকর ম্যাচ দেখা গিয়েছে। বিদেশি মিডিয়া যাকে হলিউড থ্রিলার-এর সঙ্গে তুলনা করছে। কিন্তু আমার প্রশ্ন, একটা ফুটবল ম্যাচে ইনজুরি টাইমে কোনও দল ১-২ থেকে ৩-২ জিতলেই কি সেটাকে গুণগত ভাবে খুব উঁচু দরের ম্যাচ বলা যায়? কিংবা কোনও দল প্রথম লেগে তিন গোলে এগিয়ে ফিরতি ম্যাচে তিন গোল হজম করলে কি সেই ম্যাচে দারুণ উঁচু মানের খেলাও হয়েছে বলব? অনেক হলিউড থ্রিলার যেমন সিনেমার গুণগত বিচারে রদ্দি হয়, অনেক রোমাঞ্চকর ফুটবল ম্যাচেও খেলার গুণগত মান কিন্তু নিকৃষ্ট হয়। অথচ গোল-পাল্টা গোলে ম্যাচটা জমে যায়। কিন্তু তলিয়ে ভাবলে দেখা যাবে, গোলগুলো হয়েছে বেশি বিপক্ষের ডিফেন্সের ভুলে। বা, রেফারির ভুল সিদ্ধান্তের জেরে।
মঙ্গল আর বুধ রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ কোয়ার্টার ফাইনালের চারটে ফিরতি ম্যাচ টিভিতে দেখে আমার এত ব্যাখার কারণ একটাই। বার্সেলোনা, রিয়াল মাদ্রিদ, বায়ার্ন মিউনিখ যতই সেমিফাইনালে পৌঁছে যাক, তিন টিমেরই খেলার গুণগত মান একটু হলেও নিম্নগামী। গুণগত মানের সঙ্গে ফর্মকে মেশাবেন না যেন। মেসি-রোনাল্ডো-মুলারদের দলের ফর্ম যেমনই থাক, খেলার স্ট্যান্ডার্ড একটু হলেও কমেছে। গালাতাসারের ৩-২ জেতার পিছনে স্নাইডার-দ্রোগবার কৃতিত্বকে এতটুকু কেড়ে না নিয়েও আমি বলব, রিয়ালের হারের পিছনে বেশি দায়ী পেপে-ভারানেদের ব্যর্থতা। |
তেমনই পরপর দু’টো ম্যাচে মেসির বার্সেলোনাকে জিততে না দেওয়ার জন্য যত না কৃতিত্ব দেব ইব্রাহিমোভিচ-বেকহ্যামদের প্যারিস সাঁ জাঁ-কে, তার চেয়ে বেশি দায়ী করব পিকে-ইনিয়েস্তাদের সাদামাঠা খেলাকে। তা-ও গত রাতে জাভি গোটা ম্যাচে ৯৬টা পাসই সঠিক খেলেছে। একশো শতাংশ সফল! কিন্তু তা সত্ত্বেও ঘরের মাঠে বার্সার আগে গোল খেয়ে খেলা শেষ হওয়ার মাত্র ১৯ মিনিট আগে ১-১ ড্র করে অ্যাওয়ে ম্যাচে বেশি গোলের কল্যাণে কোনওক্রমে সেমিফাইনালে যাওয়ার কী মানে? আমার ব্যাখ্যা, গুণগত মান নীচে নেমে যাওয়াতেই বার্সা বা রিয়ালের এত সমস্যা হল শেষ চারে পৌঁছতে। সেই মেসি-ই আনফিট অবস্থায়ও ৬২ মিনিটে মাঠে নেমে দশ মিনিটের মধ্যে পেদ্রোকে গোলের রাস্তা তৈরি করে দিল। রোনাল্ডো যতই ১১ গোল করে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ স্কোরার থাকুক, মেসি মেসিই।
জুভেন্তাসকে অ্যাওয়ে ম্যাচেও দু’গোল মেরে বায়ার্ন মিউনিখ সব মিলিয়ে ৪-০ জিতেছে বটে। ওদের টিমে জার্মান ছা্ড়াও ফরাসি, ডাচ, ব্রাজিলীয়, ক্রোট, অস্ট্রিয়ান, সুইস, ড্যানিশ, পেরু এত দেশের ফুটবলার আছে যে বায়ার্নকে ফুটবল মহলে বলা হয় ‘রেনবো টিম’। এত বৈচিত্র! এত বিভিন্ন ফুটবল সংস্কৃতির মিলন দলে! কিন্তু সেই বৈচিত্রের পূর্ণ প্রকাশ কোথায় পেল, বুঁফোর মতো বিশ্বসেরা গোলকিপারকে চার গোল দেওয়ার পরেও? মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বীকে শাসনের ব্যাপারটা ছিল না।
বরং বরুসিয়া ডর্টমুন্ড অফ সাইড গোলে মালাগাকে হারালেও এই জার্মান টিমটার খেলার মান উর্ধ্বমুখী। যেটা শেষ পর্যায় পৌঁছে যাওয়া ইউরোপের কঠিনতম ফুটবল টুর্নামেন্টে ভাল করার জন্য ভীষণ জরুরি। বরুসিয়া আমার মতে এ বারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে কালো ঘোড়া। তবে স্বপ্নের ফাইনাল লাইনআপ বার্সেলোনা বনাম বায়ার্ন। এল ক্লাসিকো নয়!
|
আনফিট মেসিও বার্সায় অপরিহার্য: রৌরা
সংবাদসংস্থা • বার্সেলোনা |
পরিবর্ত নেমেও প্যারিস সাঁ জাঁ-র বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেন বার্সেলোনা ‘আইকন’ লিওনেল মেসি। সেই কারণে ‘সুপারসাব’ মেসির প্রশংসায় পঞ্চমুখ দলের সহকারী কোচ ইয়র্দি রৌরা ম্যাচ শেষ সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন, “আমাদের সঙ্গে মেসির আগে থেকেই বোঝাপড়া ছিল। যদি ম্যাচে বার্সেলোনা সমস্যায় পড়ে তবে তাকে নামানো হবে।” সঙ্গে রৌরা যোগ করেন, “পুরো একশো ভাগ ফিট না থাকা মেসিও বার্সেলোনার জন্য কতটা অপরিহার্য সেটার প্রমাণ বুধবার রাতে ন্যু কাম্পে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ কোয়ার্টার ফাইনালের মতো বড় ম্যাচেও পাওয়া গেল। ও নেমেই খেলার ছবি পাল্টে দিল। মেসির লড়াকু মানসিকতা এবং সব ম্যাচে খেলার খিদেকে সেলাম।” শেষ চারে চেলসি: রাশিয়ার লুজনিকি স্টেডিয়ামে ফিরতি ম্যাচে রুবিন কাজানের কাছে ২-৩ হেরেও দু’পর্ব মিলিয়ে ৫-৪ জিতে ইউরোপা লিগ সেমিফাইনালে উঠল চেলসি। তোরেসের গোলে প্রথমার্ধে ১-০ এগিয়ে যায় চেলসি। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই রুশ ক্লাবের মারকানো গোল করে ১-১ করেন। মোজেসের গোলে চেলসি ২-১ এগোলেও কারাদেনিজ ও নাচোর গোলে ৩-২ জেতে কাজান। কিন্তু টাই জেতার জন্য সেটা যথেষ্ট ছিল না।
|