গেইল ঝড়ে কোন দিন না চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামটাই উড়ে যায়! বৃহস্পতিবার বেঙ্গালুরুর ম্যাচটা দেখতে দেখতে এ রকমই বারবার মনে হচ্ছিল। এ বার থেকে দুনিয়ার যে কোনও ক্রিকেট মাঠে কেউ যদি কোনও ঝোড়ো ইনিংস খেলে, তাকে ‘ডান আ গেইল’ বললে অবাক হব না। আইপিএলে তো আরওই নয়।
সেই গেইলের কাছেই হার মানতে হল নাইটদের। আবার। এই ক্যারিবিয়ান দৈত্যকে ছেড়ে দিয়ে যে কী ভুল করেছেন, তা এখন নিশ্চয়ই হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন শাহরুখ খান। কিন্তু এখন অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। অনেকে বলতে পারেন, যখন কেকেআরে ছিল, তখন তো এই রুদ্রমূর্তি দেখা যায়নি গেইলের। আমার মনে হয়, এর জন্য অনেকটা দায়ী চিন্নাস্বামীর উইকেট। আরসিবি-র ঘরের মাঠের উইকেটটা ওকে খুব সাহায্য করে। ইডেনে সে রকম উইকেট পায়নি গেইল। |
এমনিতে তো ওর একটা সিংহের হৃদয় আছেই। তার উপর ব্যাট হাতে নেমে যদি এমন একটা উইকেট পায়, যেখানে বল একেবারে ঠিকঠাক ব্যাটে আসে এবং নিখুঁত বাউন্স থাকে, তা হলে তো কথাই নেই। একেই বলে সোনায় সোহাগা। ঘরের মাঠে এমন উইকেট পাওয়ায় ব্যাটে ঝড় তোলার অভ্যাস হয়ে গিয়েছে গেইলের। তাই প্রায় সব ম্যাচেই এমন রণমূর্তি ধারণ করে।
সানরাইজার্সের বিরুদ্ধে আগে দুটো ম্যাচে ফ্লপ করেছিল গেইল। প্রথম ম্যাচে অনামী হনুমা বিহারি-র অফ স্পিনে ফিরে যায়। পরের ম্যাচটায় স্টেইনের এক্সপ্রেস গতি চাপে রেখেছিল। শেষ পর্যন্ত ইশান্ত শর্মার বলে খোঁচা দেয়। ইশান্তের গতিও কিন্তু কম নয়।
এ দিন নাইটদের দেখে মনে হল, গেইলের বিরুদ্ধে ওরা যেন আলাদা করে কোনও স্ট্র্যাটেজিই নেয়নি। না প্রথমে সুনীল নারিনকে আনা হল। না ইউসুফ পাঠানকে দিয়ে কোনও ফাটকা খেলল গম্ভীর। তার উপর ব্রেট লি-কে বাদ দিয়ে টিম করল। গেইলকে সামলানোর জন্য দরকার ছিল এক্সপ্রেস গতির। যেটা ম্যাকলারেনের ছিল না। বাকি নাইট বোলারদের তো নয়ই। |
এ দিন গম্ভীরের দলের ব্যাটিংও ডোবালো। হাতে পুঁজি বলতে দেড়শোর মতো রান। উল্টো দিকে যেখানে গেইল রয়েছে, সেখানে এটা কোনও রান হল? ১৭০-১৮০ না হলে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্সকে হারানো শুধু কঠিনই নয়, প্রায় অসম্ভব। পরের ম্যাচ থেকে ব্রেন্ডন ম্যাকালামকে কিন্তু খেলাতে হবে কেকেআরকে।
পরের ম্যাচটা অবশ্য ইডেনে, সানরাইজার্সের বিরুদ্ধে। সেই ম্যাচে নাইটদের এই দল নিয়েও জেতার সম্ভাবনা বেশি। এবং রবিবার জিতলে নাইট শিবিরে এ দিন আছড়ে পড়া গেইল-ঝড়ের প্রভাব অনেকটাই ফিকে হয়ে যাবে। কিন্তু সোজা কথাটা আবার একবার বলি, শুধু গম্ভীর আর নারিনের উপর নির্ভর করে আইপিএল জেতা সম্ভব নয়। ব্যাটিং অর্ডারটা ঠিক করুক কেকেআর। কালিস যখন ফর্মে নেই, তখন ওকে নীচে নামিয়ে মনোজ তিওয়ারিকে তিন নম্বরে তুলে আনা উচিত। মনোজের মতো ফর্মে থাকা ব্যাটসম্যানকে আরও দায়িত্ব দিলে ক্ষতি কোথায়? ইউসুফ পাঠান যত দিন না রানে ফিরছে, তত দিন নাইটদের ভুগতে হবে। কারণ ও ছাড়া দলে আর পিঞ্চ হিটার নেই। সে জন্যই ম্যাকালামকে আরও বেশি দরকার।
পরিবর্তন চাই-ই চাই। |